পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার মৎস্য বিভাগকে গুরুত্ব দিলেও সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের অবহেলা এবং অদক্ষতায় কমছে রফতানি আয়। সে সঙ্গে হারাচ্ছে দেশীয় মাছ। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত মাছের বাজারেও সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা। অপরদিকে কাগজ-কলমে উৎপাদন বাড়লেও বাস্তবে রফতানি আয় কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বাজারে গিয়ে অনেকেই বলেন দেশী কৈ মাছ আছে। এগুলো কি দেশী পুটি মাছ। সবাই প্রাকৃতিক অর্থাৎ দেশী মাছ পছন্দ করেন। আর দেশীয় অত্যন্ত সুস্বাদু মাছের সংরক্ষণ বা রক্ষার ব্যাপারে মৎস্য অধিদফতরের ভূমিকা কারো নজরে পড়ছে না। গত ১৮ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৮-এর বার্ষিক প্রতিবেদনের কোথাও প্রাকৃতিক মাছ বা দেশীয় প্রজাতির মাছ নিয়ে কোন লেখা, কারো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রাজধানীতে সুবিশাল মৎস্য ভবন রয়েছে। আছেন অসংখ্য কর্মকর্তা, গবেষক ও কর্মচারি। সবাই ‘মাছ চাষে গড়বো দেশ, বদলে দেব বাংলাদেশ’ এ শ্লোগান নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মৎস্য ভবনে সবাই নেতা ও সৈনিক। কেউ কাউকে শুনতে কিংবা জানতেও চায় না। প্রকল্প কর্মকর্তারা ব্যস্ত ফেসবুক আর কম্পিউটার নিয়ে। কেউ খোসগল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ ইচ্ছেমত অফিসে এসে কিছু সময় পর চলে যাচ্ছেন। এ ভবনে কাগজ-কলমের হিসাব বাস্তবে খুঁজে পাওয়া একেবারেই কঠিন কাজ।
মৎস্য অধিদফতর সূত্র জানায়, দেশে মাছের উৎপাদন বাড়লেও বিভিন্ন কারণে রফতানি কমেছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মাছের উৎপাদন ছিল ৪১ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩৪ মেট্রিক টন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছিল ৩৮ লাখ ৭৮ হাজার ৩২৪ মেট্রিন টন। রুই, কাতলা, মৃগেল ও সিলভারকার্প বেশি উৎপাদন হচ্ছে। নতুন করে তেলাপিয়া, পাবদা, গুলশা, কৈ, পুটি, শিং এবং মাগুর মাছ আগের বছরের তুলনায় বেশি উৎপাদন হচ্ছে। তেলাপিয়া মাছের উৎপাদন বেড়ে দ্বিগুণের বেশি।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গড়ে উৎপাদন বড়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ১১০ মেট্রিক টন। রফতানি কমেছে ৭ হাজার ৩২ দশমিক ৩২ মেট্রিট টন। ইলিশের মোট উৎপাদন ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪১৭ মেট্রিক টন। এ মাছের উৎপাদন হার ২৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ। চিংড়ির উৎপাদন বাড়লেও গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন কমেছে। রফতানি কমে যাওয়ার পেছনে চিংড়ি খাতের প্রভাব অন্যতম। মৎস্য অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নিত্যরঞ্জন বিশ্বাস ইনকিলাবকে জানান, চিংড়ি মাছ রফতানিতে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও সুশাসনের অভাব রয়েছে। সে সঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে রফতানি কমেছে।
রাজধানীর হাতিরপুলের মাছ ব্যবসায়ী মো. ফারুক জানান, সরকার বলছে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোন নমুনা দেখা যাচ্ছে না। পাইকারি বাজারে মাছের দাম বেশি। উৎপাদন বেশি হলে খুচরা বিক্রেতারা এবং ক্রেতারা সুফল পেতো। নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের শেষ ভরসা ছিল পাঙ্গাস মাছ। বর্তমানে এ মাছের কেজি ১৪০ টাকা।
মৎস্য বিভাগের তথ্যে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রফতানির পরিমাণ ছিল মোট ৬৮ হাজার ৩০৫ দশমিক ৬৮ মেট্রিক টন। যা গত বছর ছিল ৭৫ হাজার ৩৩৮ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে জানান, বর্তমানে মিঠা পানির ৬০ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তি হলেও মাত্র ২০ প্রজাতির মাছ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
জলাশয়ের আয়তন কমে যাওয়া, পুকুর-দিঘী ভরাট হওয়া, মৎস্য অধিদপ্তরের অবহেলা ও নানা অনিয়মের কারণে প্রাকৃতিক বা দেশীয় মিঠা পানির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। মৎস্য বিভাগ বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় পুকুর, দিঘী ও খাল খননের কর্মসূচি সঠিকভাবে করলে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পেতো। কিন্তু অধিকাংশই কাগজ-কলমে খনন দেখিয়ে অর্থ লোপাট হচ্ছে। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে ৪৭৫টি সামুদ্রিক প্রজাতি, ৩৬০টি স্বাদু পানির প্রজাতি, ৩৬টি চিংড়ি প্রজাতি, ১৬টি ক্র্যাব (কাঁকড়া) প্রজাতি এবং ১২টি সেকলুপোড (শামুক, ঝিনুক, স্টার ফিশ) প্রজাতির মাছ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।