Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আশার আলো শাপলা

সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

শ্রমজীবি মানুষ- জেলেদের আশার আলো এখন জাতীয় ফুল শাপলা। মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখানে বর্ষা মৌসুমে খাল বিলে শুধু শাপলা আর শাপলা। খাল বিলে তাকালে মনে হবে বর্ষাকালে শাপলা চাষ করা হয়েছে। থৈ থৈ পানিতে ফুটন্ত শাপলা দেখলেই দু’চোখ জুড়িয়ে যায়। শুধু চোখ জুড়ায় না, মেটায় ক্ষুধা, দূর করছে অভাব।
জানা গেছে, প্রতিদিন শাপলা সংগ্রহ ও বিক্রি করে সংসার চলছে উপজেলার শত শত পরিবারের। এ পেশায় কোন পুঁজির প্রয়োজন না হওয়ায় বিভিন্ন বয়সের দিনমজুর ও জেলে এ পেশায় অংশ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। শাপলা তরকারী হিসাবে খুবই মজাদার ও সুস্বাধু একটি খাদ্য। উপজেলার গ্রামে গ্রামে খুচরা বিক্রয়সহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজারে পাইকারী সরবরাহ করা হয়। গত কয়েক বছর যাবৎ ব্যবসাটি বিভিন্ন এলাকায় বেশ জনপ্রিয় ও প্রসার লাভ করেছে। পতিত ফসলি জমি বর্ষায় ডুবে যাওয়ায় শাপলা ব্যাপকভাবে জন্মায়। শাপলা সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শুরু করে কার্তিক মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। এলাকার শাপলা সংগ্রহকারীরা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত নৌকা নিয়ে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করতে দেখা গিয়েছে।
উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের চর নিমতলার বিল থেকে শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রতিদিন প্রত্তেকে কমপক্ষে ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ মোঠা (৬০পিছ শাপলায় ১ মোঠা ধরা হয়) সংগ্রহ করে আয় করে ৭শত টাকা থেকে ৮শত টাকা। শাপলা সংগ্রহের সময় চর নিমতলা গ্রামের আদম হোসেনের ছেলে সেলিম (১৭) বলেন, আমি ও আমার বাবা শাপলা বিক্রি করে আমাদের সংসারের খরচ এবং ২ বোনের লেখা পড়া খরচ চালাইতে হয়। আমরা পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। প্রতিদিন আমরা ২ জনে ১৪০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা আয় করি। উপজেলার রশুনিয়া, দানিয়াপাড়া, ইমামগঞ্জ ও তালতলাসহ বিভিন্ন স্থানে শাপলার পাইকারী ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে শাপলা ক্রয় করে নিয়ে পরে রাতে ঢাকার পাইকারী বাজারে বিক্রি করে থাকে।
দানিয়াপাড়া গ্রামের পাইকার মোহন মিয়া জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মোঠা শাপলা ক্রয় করে থাকি । সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে এক মোঠা শাপলা ১০ টাকা দরে ক্রয় করে এবং গাড়ি ভাড়া গড়ে ৩ টাকা, লেবার ১ টাকা, আড়ৎ দাড়ি খরচ ২ টাকাসহ মোট ১৭ থেকে ১৮ টাকা খরচ পড়ে । যাত্রাবাড়ি আড়ৎ এ শাপলা বিক্রি করে ২৫ থেকে ২৭ টাকা করে মোঠা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানবীর মোহাম্মদ আজিম বলেন,শাপলা ব্যবসায়ীদের সাথে আমার কথা হয়েছে। ইছামতি নদীর যে জায়গাটায় তারা শাপলা এনে জমা করে সেখানে নৌকা নোঙর করার জন্য যদি একটি পাকা ঘাটলার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে তাদের জন্য অনেক সুবিধা হয় আমি সরকারি ভাবে তাদের এই সমস্যাটা সমাধান করার চেষ্টা করবো ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শাপলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ