Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিশুকন্যা লাঞ্ছনার প্রতিবাদে মামলা : চাকরিচুত বাবা

মধুখালী (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গোল্ডেন পাট কলের তিন শ্রমিক ছয় বছরের এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। শিশুটি ওই মিলের বাবুর্চির মেয়ে। এ ব্যাপারে মিল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করে বিচার না পেয়ে শিশুটির বাবা মধুখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। এ অপরাধে ওই শিশুর পিতাকে মিল থেকে বহিস্কার এবং পড়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের মছলন্দপুর-মাঝিবাড়ি এলাকার গোল্ডেন জুট মিলে। শিশুটির বাবা গত দেড় বছর ধরে ওই মিলে শ্রমিকদের রান্নার কাজ করে আসছিলেন। এক ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে ছয় বছরের এই শিশুটিই সবার ছোট।
১৬ জুলাই সন্ধ্যার দিকে পেয়ারা দেওয়ার কথা বলে ওই মিলের তিন শ্রমিক শিশুটিকে মিলের পাশে একটি পাটক্ষেত্রে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। শিশুটির মা শিশুটিকে খুঁজতে গিয়ে ওই পাটখেতের কাছে গেলে ওই তিন শ্রমিক শিশুটিকে ফেলে পালিয়ে যায়।
শিশুটির বাবা পরদিন সকালে বিষয়টি মিলের ডি জি এম মো. রফিকুল ইসলামকে জানান। রফিকুল বিচার করে দেওয়ার নামে ওই তিন শ্রমিকের প্রত্যেককে ১ হাজার ৫‘শ টাকা করে জরিমানা করেন। মিল কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত মনপুত না হওয়ার ১৭ জুলাই শিশুটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২০০০ (সংশোধনী /০৩) এর ৯ (৪) (খ)/৩০ ধরা মতে ওই তিন শ্রমিককে আসামি করে মধুখালী থানায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার তিন আসামি হলেন আলামীন (২২)। তিনি কামারখালী ইউনিয়নের গাজীখালী গ্রামের বাসিন্দা। এ মামলার অপর দুই আসামি হাসান (১৬) ও নাজির(১৬) বছর বয়সী দুই কিশোর।
শিশুর মা এ প্রতিনিধিকে বলেন, মিলের ডিজিএম এর কথামত শ্রমিকদের জরিমানা করার সিদ্ধান্ত আমরা মেনে না নেওয়ায় ২০ জুলাই আমাদের মিল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমরা ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় নিজেদের গ্রামের বাড়িতে আছি।
এ ব্যাপারে ডিজিএম মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা নিজেরা মিমাংশা করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ওই তিন শ্রমিককে জরিমানাও করা হয়েছিল। কিন্তু মেয়ের অভিভাবক আমাদের সিদ্ধান্ত না মেনে থানায় গিয়ে মামলা করেছেন।
মামলা করায় মিল থেকে ওই বাবুর্চিকে বহিস্কার করার অভিযোগ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর পুলিশের পরামর্শে আমরা তাদের মিল থেকে বের করে দিয়েছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. আ. আজিজ শেখ জানান, এ মামলা হওয়ার পর ১৯ জুলাই ওই তিন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে জেল হাজতে আছেন। তিনি বলেন, শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে এবং শিশুটি ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে। তবে শারীরিক পরীক্ষার প্রতিবেদন এখন পর্যন্ত হাতে পাওয় যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ