Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

‘সালাউদ্দিন ও তার কমিটি ব্যর্থ’

প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : সাবেক তারকা ফুটবলার ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাবেক সদস্য গোলাম রব্বানী হেলাল বলেছেন, ‘বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও তার কমিটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দুই মেয়াদে সালাউদ্দিনের কমিটি দেশের ফুটবল উন্নয়নে কোন ভূমিকাই রাখতে পারেনি। যদিও তার দায় কিছুটা আমার উপরও পড়ে। কারণ সালাউদ্দিনের প্রথম মেয়াদে আমিও ছিলাম তার কমিটিতে। সে সময় চেষ্টা করেছি ফুটবল উন্নয়নে কাজ করতে। কিন্তু নানা জটিলতায় সফল হতে পারিনি।’ বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র কিনতে এসে হেলাল গতকাল মিডিয়াকে কথাগুলো বলেন।
৩০ এপ্রিল বাফুফে নির্বাচনকে সামনে রেখে কাল ছিলো মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন। এদিন বিকালে সভাপতি পদে নিজ মনোনয়নপত্র কেনার পাশাপাশি হেলাল আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী ইশতেহারও ঘোষণা করলেন। স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবেই মনোনয়নপত্র কিনলেন হেলাল। তার পক্ষে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের হাত থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন সাবেক ফুটবলার মাসুদ রানা, আলমগীর ও রিয়াদ।
গতকাল সকাল থেকেই বাফুফে ভবনের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিলেন হেলাল। কারণ আগের দিন এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরেক সভাপতি পদপ্রার্থী ‘বাঁচাও ফুটবল’ প্যানেলের নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। আর এ মন্তব্যেই হেলাল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। কাল বাফুফে ভবনে আসার পরও তাকে নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। ভবনে প্রবেশ করার পরই হেলাল বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের কক্ষে যান। হাস্যোজ্বল এই সাবেক ফুটবলার দীর্ঘক্ষণ সালাউদ্দিনের সঙ্গে খোশগল্পে মেতে ওঠেন। এরপরই কথা বলেন মিডিয়ার সঙ্গে। হেলাল বলেন, ‘নির্বাচন যে কারোর গণতান্ত্রিক অধিকার। আমি সভাপতি পদে লড়বো বলেই মনোনয়নপত্র কিনেছি। দেশের ফুটবল উন্নয়নে ভুৃমিকা রাখার জন্য আমি বাফুফের সভাপতি হতে চাই। গত আট বছরে কিছুই করতে পারেনি বাফুফের বর্তমান কমিটি। আট বছরের আটজন ফুটবলারও তৈরি করতে পারেননি সালাউদ্দিন ভাই। তিনি ফুটবলার হিসেবে উচুঁ মানের থাকলেও সংগঠক হিসেবে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। মানুষ হিসেবে সালাউদ্দিন ভাই অনেক বড় মাপের। এক সময় আমি উনার পক্ষের লোক ছিলাম। এখনও উনার পক্ষেই আছি। তবে নানা কারণে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন করতে হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জেলার ফুটবলের কোনো উন্নতি করতে পারেনি বর্তমান কমিটি। আমি নির্বাচিত হলে বিভিন্ন জেলা থেকে ফুটবলার বাছাই করে ঢাকায় নিয়ে আসব।’
বাফুফে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষদিনে গতকাল হেলালসহ সভাপতি পদে চারজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রার্থী সংখ্যা বেশি হলেও জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হেলাল। ১৩৪ জন ভোটারের মধ্যে সবার ভোটই পাবেন বলে বিশ্বাস তার। ২০০৮ সালে সালাউদ্দিন যখন প্রথমবার বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হন তখন ওই কমিটির সদস্য ছিলেন হেলাল। চার বছর এক সঙ্গে কাজও করেছেন। শুধু সহকর্মী হিসেবে নয় সতীর্থ হিসেবেও সালাউদ্দিন-হেলাল একই ক্লাবে দীর্ঘদিন খেলেছেন।
দু’জনের মধুর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্কের জের ধরে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী ময়দান থেকে তিনি সরে যাবেন কিনা? এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ প্রসঙ্গে হেলালের সরাসরি জবাব, ‘সালাউদ্দিন ভাই আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ করবেন না। আর আমিও সরে দাঁড়াবো না। এটা আমিও যেমন জানি, সালাউদ্দিন ভাইও জানেন। নির্বাচন থেকে আমার সরে দাঁড়ানোর কোনো প্রশ্নই ওঠে না। সেই সুযোগও আমার নেই।’
‘বাঁচা ফুটবল’ নামে যারা আন্দোলন করছেন তাদের সম্পর্কে হেলাল বলেন, ‘যারা ‘বাঁচা ফুটবল’ নামে আন্দোলন করছে, তারা দেশের ফুটবলকে ডুবাতে চায়। রাস্তায় মানববন্ধন করে ফুটবলের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আন্দোলন করে সালাউদ্দিনের মতো ব্যক্তিকে তারা সরাতে পারবে না। তাদের মাঠে থাকতে হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে ‘বাঁচা ফুটবল’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী কামরুল আশরাফ প্রসঙ্গে হেলাল বলেন, ‘আমি কামরুলকে বলেছিলাম তুমি কাউন্সিলর হও। তাহলে আমি একটা ভোট বেশি পাব। কিন্তু এখন দেখি সেই আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে। তিন দিনের অভিজ্ঞতায় তিনি ফুটবলের কি সেবা করতে পারবেন আমি বুঝতে পারছি না।’
সালাউদ্দিন এবং তার কমিটি ব্যর্থ, হেলালের এমন মন্তব্যের কোন জবাব দেননি কাজী সালাউদ্দিন। তবে তিনি বলেন, ‘আগামী ২৩ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সবার বক্তব্যের জবাব দেব। নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। স্বাধীন দেশে যে কোন মানুষ নির্বাচন করতে পারেন। ১৩৪ কাউন্সিলর সিদ্ধান্ত নেবেন কে বাফুফের সভাপতি হবেন। তবে সভাপতি পদে যারা নির্বাচন করছেন তাদের সকলকে আমি অভিনন্দন জানাই।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘সালাউদ্দিন ও তার কমিটি ব্যর্থ’
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ