Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্ধ হয়ে গেল জিএসকে ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০১৮, ১২:৫২ এএম

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি গ্ল্যাস্কোস্মিথক্লাইনের (জিএসকে) ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পোনে ১১টায় প্রতিষ্ঠানটির হেড অফ কমিউনিকেশন্স রুমানা আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজ শুক্রবার দুুপুর ৩টায় গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে আনুষ্ঠানকভাবে বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে আজই কর্মচারি ও কর্মকর্তাদের দেনা-পাওনা মেটানোরও আশ্বাস দেয়া হবে। তবে বাংলাদেশে জিএসকে-এর কনজ্যুমার হেলথকেয়ার কার্যক্রম যথারীতি বহাল থাকবে বলেও উল্লেখ করেন রুমানা আহমেদ। 

জিএসকে’র পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়িক পর্যালোচনা শেষে গ্ল্যাস্কোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ লিমিটেড-এর পরিচালনা পরিষদ কোম্পানিটির ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিটটি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। সিদ্ধান্তে, জিএসকে’র লোকসানজনক ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেবার প্রস্তাব করা হয়। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত সকল কর্মচারি ও কর্মকর্তাদের সাথে সম্মান এবং মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করতে এবং তাদেরকে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা করতে জিএসকে বদ্ধপরিকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে জিএসকে-এর কনজ্যুমার হেলথকেয়ার কার্যক্রম যথারীতি বহাল থাকবে। ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে আসন্ন সংস্কারের কারণে এতে কোন পরিবর্তন আসবে না। এই পদক্ষেপ বছরের শেষ নাগাদ শেষ হবে বলে আশা করা হয়।
আরও জানানো হয়, বাংলাদেশে ইতমধ্যেই গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী ও বহুমাত্রিক ফার্মা সিউটিক্যাল সেক্টর। বর্তমানে জিএসকে উৎপাদিত সবগুলো ওষুধেরই জেনেরিক বিকল্প হয়েছে সহজলভ্য এবং মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে গেছে। তাই চিকিৎসাসেবার প্রয়োজনীয় সব ওষুধই সহজে পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ করা হয়। ইউনিসেফ এবং ভ্যাক্সিন অ্যালায়েন্স ‘গ্যাভি'র সহায়তায় পাওয়া জিএসকে’র টীকা (ভ্যাক্সিন) যথারীতি বাংলাদেশে পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার জিএসকে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে অভিযোগ করেছিলেন গ্ল্যাস্কোস্মিথক্লাইন এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায় বাংলাদেশ থেকে গুটিয়ে নেওয়ার জন্য তৎপরতা চলছে বলেও অভিযোগ কররেন তারা। আর তার দুইদিন পর গতকাল বৃহষ্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট বন্ধ করার ঘোষণা আসলো।
গ্ল্যাস্কোস্মিথক্লাইন জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও পুষ্টিকর খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৩ সালে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট শিল্প এলাকায় এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। অভিযোগ রয়েছে, লাভজনক এই শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসায় গুটিয়ে নেওয়ার জন্য দেশি-বিদেশি নানা মহল কিছুদিন থেকে তৎপর হয়ে উঠে। তাদের তৎপরতার অংশ হিসেবে গ্ল্যাস্কোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পরিষদের সাম্প্রতিক সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির বাংলাদেশের কারখানায় উৎপাদন ও উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় কমিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই এ কারখানার প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার উৎপাদিত অনেক ওষুধ গুদামজাত থাকার পরও এবং বাজারে চাহিদা থাকা সত্বেও তা বাজারজাত করা হচ্ছে না। কোম্পানিটির ওষুধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত প্রায় দেড় শ’ শ্রমিককে বিনা বেতনে বসিয়ে রাখা হয়েছিল কিছুদিন থেকে। দেশীয় একটি স্বার্থান্বেষী গ্রুপ বিদেশি পরিচালক (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজম বলেন, ২২ জুলাই থেকে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর জুন থেকে উৎপাদনের জন্য কাচামাল কেনা সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আশঙ্কা ছিল ২৬ জুলাই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ করা হবে। এদিকে, কোম্পানিটির কারখানা দেশের আরেক ওষুধ কোম্পানি ইনসেপ্টা কিনবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এরই মধ্যে গø্যাক্সোর কারখানা কেনার জন্য ইনসেপ্টার সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফার্মাসিউটিক্যাল

২০ ডিসেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ