নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দলের জন্য হোক আর ব্যক্তিগত জীবনেÑ কঠিন সময়ে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়াই যেন তার কাছে প্রিয়। হতাশা তাই সচারচর তাকে গ্রাস করতে পারে না। কিন্তু নাগালের মধ্যে থাকা জয় একের পর এক ফসকে যেতে থাকলে কারই বা ভালো লাগে। এবার তাই সত্যিই হতাশ মাশরাফি বিন মুর্তজা। টাইগার দলপতির আক্ষেপ, বারবার একই ভুল করেও আমরা শিখছি না।
ভক্তরা তো বটেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের শুরুটা ভুলে যেতে চাইবেন দলে যে কেই। কিন্তু ভিন্ন ফমর্মেট, ভিন্ন জার্সি, ভিন্ন নেতৃত্বে ঠিকই নতুনভাবে স্বপ্ন দেখা শুরু করে বাংলাদেশ। এর অন্যতম প্রধাণ কারণ মাশরাফির নেতৃত্ব। শুধু নেতৃত্ব নয়, গায়ানায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে সেই স্বপ্নের বাস্তব রূপায়নে অবদান ছিল মাশরাফিরও। একই মাঠে দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও জয় ছিল হাতের মুঠোয়। জিততে একসময় বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৩০ বলে ৪০ রান, হাতে ৭ উইকেট। সমীকরণ পরে নেমে আসে ১৩ বলে ১৪ রানে। উইকেট তখনও হাতে ৬টি। এমন ম্যাচেও শেষ পর্যন্ত ৩ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
গত কয়েক বছরে এই ধরনের হারের যন্ত্রণায় পুড়তে হয়েছ বেশ কয়েকবারই। ২০১২ ও ২০১৬ এশিয়া কাপের ফাইনালের পর ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের কাছে সেই শেষ তিন বলের হতাশা এখনো পোড়ায় টাইগার ক্রিকেট ভক্তদের। চলতি বছর নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে বাংলাদেশ হেরেছে কাছে গিয়েও। প্রতিবারই একটি নাম জড়িয়ে ছিল এই ট্র্যাজেডির সাথে-মুশফিকুর রহিম। আবারো দুর্দান্ত শুরু করার পর হঠাৎ পথ হড়কানো দলকে পথের দিশা দেখান তিনিই। আবার সেই পথের শেষ প্রান্তে এসে হতাশা উপহারও এসেছে তার কাছ থেকে। তার মানে বার বার সেই একই চিত্রনাট্যের পুনারাবৃত্তি।
ম্যাচ শেষে তাই এবার মাশরাফির কণ্ঠে হতাশার সুর, ‘এই ধরনের ম্যাচ হারা তো অবশ্যই হতাশার। শেষ ১৩ বলে ১৪ রান লাগবে, ৬ উইকেট হাতে। এখান থেকে ম্যাচ হারার কথা নয়। আর এমন না যে এটা প্রথমবার হলো। সা¤প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবার হলো। এটাই বেশি হতাশার। আমরা বারবার ভুল থেকে হয়ত আমরা শিখছি না। সহজেই শেষ করা উচিত ছিল এই ম্যাচ।’
কিন্তু কেন বার বার এমন হচ্ছে? এমন প্রশ্নের উত্তর জানা নেই দলপতির কাছেও, ‘এখানে আসলে কি বলব, টেকনিক্যাল না মেন্টালি, ব্যাখ্যা করা কঠিন। এমন যদি হতো যে ১২ বলে ২০ রান লাগবে, অন্য কথা ছিল। কিন্তু ১৩ বলে যখন ১৪ লাগবে, তখন টেকনিক্যাল বা মেন্টাল কোনোটিই বলা কঠিন।’
সে যে ধরণের ভুলই হোক না কেন এমন পরিস্থিতিতে কি করা উচিত সেটা আরো একবার বাতলে দিলেন ম্যাশ, ‘সত্যিকার অর্থে বললে, আমরা এই ধরনের ভুল বারবার করছি। এই ধরনের পরিস্থিতিতে হয়ত নার্ভ আরও সহজ রাখা যেত। বল প্রতি রান দরকার ছিল। এক এক করে রান নিয়েই শেষ করা যেত, যেটা আমরা করতে পারিনি।’
অবশ্য হারের পেছনে যে কারণ অধিনায়ক খুঁজে পেয়েছেন তা পেশাদার খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে চমকপ্রদই বলতে হয়। তার মতে, ‘আমরা পুরোপুরি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। প্যানিক হওয়ার কারণে এটা হয়েছে। বারবার ভুলটা হচ্ছে, এটা থেকে শিখতে পারছি না। এই আতঙ্ক থেকে মাথায় হয়তো কাজ করেছে বড় শট খেলে ম্যাচ শেষ করতে হবে। ওই প্যানিকে উইকেট পড়ছে, ডট বল হচ্ছে। নতুন ব্যাটসম্যান যে আসছে, সেও ডট বল দিচ্ছে। যে জিনিসটা আমরা সহজে করতে পারতাম সেটি হচ্ছে, এক-দুই নিয়ে খেলা শেষ করা। আমরা সেটিও করতে পারিনি।’
শুধু মুশফিকের শেষ ওভারের হতাশা নয়, তার আগে ভুগিয়েছে হঠাৎ খোলসোর মধ্যে ঢুকে যাওয়া তামিমের ধীর ব্যাটিং (১৭ বলে ২৭ থেকে পরের ২৭ রান করেন ৬৭ বলে), ফিল্ডিংয়ে সাকিবের সেই হেটমায়ারের ক্যাচ মিসও আলোচনায় আসতে বাধ্য। হেটমায়ারের দানুবে ব্যাটে (৯৩ বলে ১২৫) ভর করেই বড় সংগ্রহ থেকে জয় পায় ক্যারিবীয়রা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৪৯.৩ ওভারে ২৭১ (গেইল ২৯, লুইস ১২, হোপ ২৫, হেটমায়ার ১২৫, জেসন ১২, পাওয়েল ৪৪, হোল্ডার ৭, নার্স ৩, পল ৪, বিশু ০, জোসেফ ১*; মাশরাফি ১/৪৪, মিরাজ ১/৪০, মুস্তাফিজ ২/৪৪, মোসাদ্দেক ০/৩১, সাকিব ২/৪৫, রুবেল ৩/৬১)।
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৬৮/৬ (তামিম ৫৪, এনামুল ২৩, সাকিব ৫৬, মুশফিক ৬৮, মাহমুদউল্লাহ ৩৯, সাব্বির ১২, মোসাদ্দেক ৩*, মাশরাফি ১*; জোসেফ ১/৫৫, হোল্ডার ১/৬৬, নার্স ১/৩৪, পল ১/৪৩, গেইল ০/২৬, বিশু ১/৩৯)।
ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : শিমরন হেটমায়ার (উইন্ডিজ)।
সিরিজ : ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।