Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে হাজারো দুর্গত মানুষ

প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পরপর তিনবার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর সেখানকার হাজার হাজার মানুষ এখন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বসবাস করছে। ওই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে ও প্রচ- ঠা-া অনুভূত হচ্ছে। দু’দফা ভূমিকম্পে ৪০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে এবং শতাধিক আহত হয়েছে। এদিকে, ভূমিকম্পের পর জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় আসো পর্বতের আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা ও ছাই উদ্গীরণ শুরু হয়েছে। ফলে ওই এলাকায় ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শুক্রবার দুপুরে ধারণ করা এক ভিডিওচিত্রে প্রায় ১০০ মিটার উঁচুতে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। গত বৃহস্পতিবারের ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের পর আগ্নেয়গিরিটি সক্রিয় হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১১ সালেও জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশটির অন্তত ২০টি আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হয়েছিল। স্থানীয় গণমাধ্যম জানাচ্ছে যে, প্রায় দুই লাখেরও বেশি মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার আহ্বান জানানো হয়েছে। দু’দফা ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও তা আবার সরিয়ে নেয়া হয়। তবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধস ও আর ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা আশংকা করছেন ধ্বংসস্তূপে হয়তো আরো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। অনেকে বিদ্যুৎ ও পানির অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। প্রায় দুই হাজার মানুষকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং আহত দুইশো জনের অবস্থা ভালো নয় বলে জানা যাচ্ছে। জাপানের মাশিকিতে এক ভুতুড়ে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জাপান মিটিরোলজিক্যাল এজেন্সি গত শনিবার জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ২৬ মিনিট থেকে শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ২৫২ বার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। এটি ১৯৯৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সর্বশেষ জাপানে শক্তিশালী কম্পনের রেশ না কাটতেই কুমামতো প্রদেশে শনিবার স্থানীয় সময় বিকাল সোয়া ৫টার দিকে আবারো ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ওই কম্পনের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩। কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশটির কুমামতো প্রদেশে আঘাত হানা ওই ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল দেশটির কুমামতো-চিহি এলাকায়। এর আগে স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১টা ২৫ মিনিটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওই প্রদেশটিতে শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এর কম্পনের মাত্রা ছিল ৭। আমেরিকান জিওলজিক্যাল সার্ভে জানায়, জাপানের কিউশু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল দেশটির ইউকি শহর থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই অঞ্চলে ৫ দশমিক ৮ এবং ৫ দশমিক ৭ মাত্রার আরো দুটি কম্পন অনুভূত হয়। এ নিয়ে ওই অঞ্চলে তিন দফা ভূমিকম্প হয়েছে। জাপানে দফায় দফায় ভূমিকম্পের পর সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতায় সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগের নির্দেশ দেন তিনি। আবে বলেন, সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জোর দিচ্ছি আমরা। এ ক্ষেত্রে উদ্ধারকাজকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। জনসাধারণকে যথাযথ তথ্য দ্রুততার সঙ্গে সরবরাহ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ভূমিকম্পে কমপক্ষে দুই হাজার লোক আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। শনিবার জাপান কর্তৃপক্ষ জানায়, উদ্ধারকাজ ত্বরান্বিত করতে ২০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কুমামতো প্রদেশে ৯২ হাজারের বেশি লোক বাড়িঘর ছেড়েছে বলে জানা গেছে। প্রায় দুই লাখ বাড়িঘর বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, শনিবার ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে বড় ধরনের ভূমিধস হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার রাতে হাজার হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে বিভিন্ন রাস্তা ও পার্কে ভয়ার্ত অবস্থায় রাত কাটিয়েছে। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে হাজারো দুর্গত মানুষ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ