মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আর মাত্র ছয় দিন বাকি। এরপরই ৩০ জুলাই প্রকাশ হচ্ছে আসামের নাগরিকত্বের আপডেট তালিকা ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন (এনআরসি)। এ তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর সেখান থেকে বাংলাভাষী কয়েক লাখ মানুষকে বের করে দেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তারা বাংলাদেশি মুসলিম। তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। তবে আসামের এসব মুসলিম সুবিচার পাবেন বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
গত রোববার এমন নিশ্চয়তা দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বলা হয়েছে, ওই তালিকায় যাদের নাম থাকবে না তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে না। রাজনাথ সিং এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রতেকটি মানুষ যাতে ন্যায়বিচার পান এবং তাদের সঙ্গে যাতে মানবীয় আচরণ করা হয় তা নিশ্চিত করবো আমরা। আইনের অধীনে যেসব বিকল্প সুবিধা রয়েছে তার পর্যাপ্ত সুযোগ নিতে পারবেন প্রতিটি মানুষ।
তিনি ওই বিবৃতিতে আরো বলেছেন, তালিকা নিয়ে যদি কোনো ব্যক্তি সন্তুষ্ট হতে না পারেন তাহলে তারা তাদের দাবি ও আপত্তি নিয়ে আপিল করতে পারবেন ফরেনারস ট্রাইব্যুনালে। ফলে এনআরসি প্রকাশের পর কাউকে বন্দিশিবিরে নেয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। রাজনাথ সিং আরো বলেছেন, আসামকে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে, যাতে নাগরিকত্বের নামে কেউ হয়রানির শিকার না হন। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেজ টাইমস।
উল্লেখ্য, এর আগে আসামে বসবাসকারী সব মানুষকে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য সবরকম ডকুমেন্ট প্রদর্শন করতে হয়েছে অথবা তাদেরকে প্রমাণ করতে বলা হয়েছে যে, তারা ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চের আগে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
২০১৬ সালে প্রথম আসামে ক্ষমতায় আসে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী দল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ওই সময় নির্বাচনী প্রচারণায় তারা জোর দেয় আসামে বসবাসকারী মুসলিমদের ওপর। বলা হয়, তারা বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী। যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাভাষী এসব মুসলিমকে আসাম থেকে বের করে দেয়া হবে। ঠিকই ক্ষমতায় আসে বিজেপি। তারা এনআরসি করা শুরু করে। এর ফলে কয়েক লাখ বাংলাভাষী মুসলিম, যারা আসামে বসবাস করেন, তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক ভয়াবহ আতঙ্ক। তাদের ভয় আসাম থেকে তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলোও একই রকম কথা বলছে। তাদের অভিযোগ সরকার মুসলিমদেরকে টার্গেট করেছে। এসব মুসলিম ভারতীয় নাগরিক। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে সরকার।
আসাম হলো চা উৎপাদনকারী ও তেল-সমৃদ্ধ রাজ্য। সেখানে নাগরিকত্ব ও অবৈধ অভিবাসন ইস্যু উত্তেজনা সৃষ্টিকারী। এ রাজ্যে বসবাস করেন ৩ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশই মুসলিম। এখানেই আসামের বিভিন্ন গ্রুপের সহিংস প্রতিবাদে ১৯৮০র দশকে নিহত হয়েছেন কয়েক শত মানুষ।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে বাংলাদেশ। এর ফলে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। ওই সময়ে কয়েক লাখ বাংলাদেশী পালিয়ে ভারতে চলে যান। তাদের বেশির ভাগই বসতি গড়ে তোলেন আসাম ও প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গেও অবৈধ মুসলিম অভিবাসীদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর দাবি রয়েছে। উল্লেখ্য, অভিবাসীদের মধ্যে বহু হিন্দু রয়েছেন। কিন্তু মোদি সরকার তাদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শন করছে। তাদেরকে নাগরিককত্ব দেয়ার প্রতিশ্রতি দিয়েছে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইম ও টাইমস অব ইন্ডিয়া
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।