Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ময়লায় নাকাল সাতকানিয়াবাসী

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে সৈয়দ জুনাঈদ মো. হাবিব উল্লাহ | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সাতকানিয়া পৌরসভা গঠনের ১৮ বছর পার হলেও ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা ঠিক করতে পারেনি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। দুর্গন্ধে দুর্বিষহ জীবন অতিবাহিত করছেন পৌরবাসী। আবর্জনা ফেলা হচ্ছে রাস্তার পাশে খোলা জায়গায়। পৌর শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ময়লা-আবর্জনা এনে স্ত‚প করে ফেলা হয় সাতকানিয়া কলেজ রোড়ের মুখে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সামনে ফসলি জমিতে।
দুই বছর আগেও এই জমিতে ধান চাষসহ নানা ফসল উৎপাদিত হতো। ময়লা-আবর্জনার স্ত‚প করে ফেলার কারণে মশার উপদ্রবের পাশাপাশি বাতাসে ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধে নাকাল পৌরবাসী।
অন্য দিকে, স্ত‚পকৃত ময়লা পোড়ানোর সৃষ্ট ধোয়ায় শিশুদের মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পৌরসভার এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজপড়–য়া ছাত্রছাত্রীসহ হাজার হাজার মানুষের চলাচল। ময়লা-আবর্জনা পচে সৃষ্টি হয় দুর্বিষহ গন্ধ। সাতকানিয়া মডেল হাইস্কুল, সাতকানিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে নাক চেপে ধরতে হয়। দুর্গন্ধে বমি চলে আসলেও বাধ্য হয়ে এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। শহর পরিষ্কার রাখতে দৃশ্যত নানা উদ্যোগ নিলেও পৌর কর্তৃপক্ষের এমন কাজে অসন্তুষ্ট পৌরবাসী। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দাবি এলাকাবাসীর। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ভোর ৬টা থেকে ৯টার মধ্যে পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তা পরিষ্কার করে। কিন্তু ঘণ্টাখানেক যেতে না যেতেই রাস্তাজুড়ে ফেলা হয় স্থানীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা। পৌরবাসী এই জন্য দায়ী করছেন পৌরসভার বর্জ্য অপসারণে সঠিক পরিকল্পনা এবং অব্যবস্থাপনাকে। পৌর নাগরিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে আলোচনার অভিমত সচেতন মহলের। ময়লার স্ত‚পের কয়েক গজ সামনেই জেলা পরিষদের ডাকবাংলো। জনপ্রতিনিধি উচ্চপর্যায়ে সরকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ অনেকের ডাকবাংলোতে নিত্য আনাগোনা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে সবাই নীরব। স্থানীয়রা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পৌরমেয়রের।
এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে এসব বর্জ্য অপসারণের দাবি জানিয়ে কোনো কাজ হয়নি। সম্প্রতি পৌরসভার কলেজ রোড সরেজমিন দেখা যায়, আবর্জনার স্ত‚প বেশি হয়ে গেলে আবর্জনাগুলো রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দুর্গন্ধে অসহনীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক পশ্চিম ঢেমশা ইউপি চেয়ারম্যান এ জেড হেলাল চৌধুরী জানান, পৌরসভার নিজস্ব ডাম্পিং স্টেশন থাকার কথা। নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো সুযোগ না রেখে এমন একটি জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ময়লা-আবর্জনার স্ত‚প করে রাখা উচিত হয়নি। সাতকানিয়া সরকারি কলেজ, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল হাইস্কুলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী এই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করে। এ ছাড়া হাট-বাজার, অফিস-আদালত, নানা কর্মব্যস্ততার স্থানীয় এলাকাবাসীর একমাত্র যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম সাতকানিয়া কলেজ রোড়। এ ব্যাপারে সাতকানিয়া পৌরমেয়র মোহাম্মদ জোবায়েরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর থেকে দুই একর জায়গা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। জায়গা নির্ধারণ করে দ্রুত ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোবারক হোসেন জানান, ডাম্পিং স্টেশনের যদি পৌরকর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণ করতে চায়, তবে আমরা এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবো। উপজেলা পৌরসদরের জনগুরুত্বপূর্ণ কলেজ রোড়ের মুখ থেকে এসব বর্জ্য দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ময়লা

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ নভেম্বর, ২০২১
৯ নভেম্বর, ২০২১
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
১১ জানুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ