পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দৃষ্টিনন্দন ঝাউবন আর সারি সারি সবুজের সমারোহ। দূর থেকে মনে হয় ঝাউগাছগুলো যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সবুজতায় ঘেরা সেই ঝাউ বাগানের ছায়া এখন সাগরের বুকে আশ্রয় নেয়ার অপেক্ষায়।
অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার ঝাউগাছ। বিশ্বের মধ্যে একমাত্র কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত হচ্ছে দীর্ঘতম। ১২০ কিলোমিটার লম্বা সাগর তীরের অপরূপ ও নয়নাভিমারম দৃশ্যের রাণী সৈকত গত চার দশকে ভাঙনে সাড়ে ৫ লাখেরও বেশি গাছ বিলীন হয়ে গেছে।
কক্সবাজার সৈকতের বর্তমান চিত্র আসছে দিনে কি হবে সে শঙ্কা সবার মনে বিরাজ করছে। যদি ভাঙ্গন অব্যাহত থাকে তাহলে হয়তো এক সময় বিশ্বের পাতা থেকেও দীর্ঘতম সৈকত শব্দটি ঠাঁই নেবে ইতিহাসের পাতায়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি স্লোগানকে মনে করিয়ে দিচ্ছে সৈকতের অব্যাহত ভাঙন। ‘ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী’ এটি বিমানের স্লোগান। আর এখন সৌন্দর্য হারিয়ে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
অপরদিকে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে বেড়াতে আসা পর্যটক এবং পর্যটন শহরের মানুষ। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে সৈকতের জীব বৈচিত্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙনের গতি তীব্র হচ্ছে। স্থানীয়দের শঙ্কা গত ৫ বছরের তুলনায় চলতি বর্ষায় ভাঙনের হার দ্বিগুণ হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিমান বন্দর থেকে সোজা সৈকতের ডায়াবেটিক, শৈবাল, হোটেল সীগাল পয়েন্ট ও হিমছড়ি পয়েন্টে সৃজিত ঝাউ বাগান সাগরে বিলীন হওয়ার দৃশ্য। জানা গেছে, ১৯৭৩-৭৪ সালে কক্সবাজার বিমান বন্দরের পশ্চিম পাশ থেকে সৈকতের উখিয়ার ইনানী পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝাউবাগান করা হয়েছিল।
সেই থেকে ৯ দফায় শহরের ফদনার ডেইল টুইট্যার মাথা থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সৈকতের ২৪২ হেক্টর জমিতে প্রায় ৬ লাখ ৫ হাজার ঝাউগাছ লাগানো হয়েছিল। তবে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, পূর্ণিমা ও অমাব্যসার জোয়ারে ইতোমধ্যে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে সাড়ে ৫ লক্ষাধিক ঝাউগাছ।
সাগরের ভাঙন ঠেকানো না হলে পর্যটন শহর কক্সবাজার মারাত্মক পারিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা। প্রতি আমবস্যায় ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে সাগরে বিলীন হচ্ছে ঝাউবনের গাছ। জোয়ারে সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে যা ৩/৪ ফুট বৃদ্ধি পায়। জোয়ারের সাথে সৈকতে আছড়ে পড়া উত্তাল ঢেউ ঝাউগাছের নিচ থেকে মাটি সরিয়ে নিচ্ছে। এতে করে শত শত ঝাউগাছের এখন ঠিকানা হয়ে গেছে সাগরের বুক। পাশাপাশি সৈকতের ভূখন্ডও তলিয়ে যাচ্ছে সাগরে। এভাবেই ছোট হয়ে আসছে পর্যটকদের আকর্ষণ কক্সবাজার সৈকত। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেছেন, এটি মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের ষ্পষ্ট উদাহারণ।
ঝাউবাগান সাগরে বিলীন হওয়ার কথা স্বীকার করে কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আলী কবির ইনকিলাবকে বলেন, প্রতি বছর সাগরের ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এর ক্ষতি সামলে উঠতে বন বিভাগ পুনরায় গাছ লাগাচ্ছে। সৌন্দর্যের রাণী কক্সবাজার সৈকত রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে দাবি জানিয়েছে কয়েকটি পরিবেশ সংগঠন। মেরিন ড্রাইভ সড়কে জিও ট্র্যাক এবং ট্রিট্টা পাথর দিয়ে সেনাবাহিনী যেভাবে সফল হয়েছে সেভাবে সৈকতের ভাঙ্গন রোধেও ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছে সংগঠনগুলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।