Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গুণগত মানের প্রতিফলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৮, ১২:১৯ এএম

পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ণ পদ্ধতির পরিবর্তন, একাধিক পরীক্ষক দিয়ে খাতা মূল্যায়ন, গুণতম মান নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়ার পর থেকেই কমতে শুরু করেছে পাসের ও জিপিএ-৫। গতবছরের মতো এবারও এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষায় কমেছে পাসের হার, জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ও শতভাগ পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। চলতি বছর এই পরীক্ষায় আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে সার্বিকভাবে গড় পাসের হার ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৯ হাজার ২৬২ জন। গতবছর এই পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন। ফলাফলের তুলনামূলক হিসেবে এবার পাসের হার কমেছে ২ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ কমেছে ৮ হাজার ৭০৭ জন।
দৃশ্যত পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী সংখ্যা কমলেও প্রকাশিত ফলাফলকে ইতিবাচক হিসেবেই মনে করছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কখনই পাসের হার বাড়ানো বা কমানোর জন্য বলা হয় না। তবে আগের তুলনায় পাসের হার কমার কারণ হিসেবে তিনি জানান, একটা সময় আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজমুখী করা। তবে এখন আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শিক্ষার গুণতম মান নিশ্চিত করা। এজন্য আমরা পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। একাধিক পরীক্ষকের মাধ্যমে খাতা মূল্যায়ণ করা হচ্ছে। আমরা মানসম্মত শিক্ষার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তাই পাসের হার কমলেও সকল খাতা যাতে সঠিকভাবে ম‚ল্যায়ন হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। খাতা সঠিকভাবে ম‚ল্যায়ন হবে- এটাই আমাদের ম‚ল লক্ষ্য।
এবারের ফলাফলে পাসের হার, জিপিএ-৫ এর সংখ্যা কমার সাথে সাথে এবার কমেছে শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এবং শূণ্য পাসের প্রতিষ্ঠান। এবার ১০টি শিক্ষা বোর্ডেই শতভাগ পাস করেছে ৪০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। গতবছরের তুলনায় এই সংখ্যা কমেছে ১৩২টি। ২০১৬ সালেও শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৪৮ এবং ২০১৫ সালে এই সংখ্যা ছিল এক হাজার ১৩৩টি। একজনও পাস করতে পারেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এবার ৫৫টি। গতবছর এই সংখ্যা ছিল ৭২টি। এবার কমেছে ১৭টি।
গত কয়েকবছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এইচএসসি, আলিম ও সমানের পরীক্ষায় শীর্ষ স্থানটি অলিখিতভাবেই মাদরাসা বোর্ডের দখলে ছিল। কিন্তু গতবছর হঠাৎ করেই ছন্দপতন হয়ে যায় এই বোর্ডের ফলাফলে। তবে একবছরের ব্যবধানেই মাদরাসা বোর্ড আবারও শীর্ষ স্থান পুনরুদ্ধার করে নিয়েছে। এই বোর্ডে এবার পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। তবে গতবছর কুমিল্লা বোর্ডের ফল বিপর্যয়ের পর এবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গতবছর যেখানে এই বোর্ডে পাসের হার ছিল ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, এবার তা বেড়ে হয়েছে ৬৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। পাসের হারে খুব বেশি পিছিয়ে না থাকলেও সবার নিচেই রয়েছে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড। এই বোর্ডে এবার পাস করেছে ৬০ দশমিক ২১ শতাংশ।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, উত্তীর্ণ, জিপিএ-৫ এবং অনুত্তীর্ণের সংখ্যায় ছাত্ররা বেশি হলেও গড় পাসের হার বেশি ছাত্রীদের। সার্বিক ফলাফলে ছাত্রদের পাসের হার ৬৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাসের হার ৬৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। পরীক্ষা অংশগ্রহণকারী বেশি হওয়ায় ছাত্ররা জিপিএ-৫ পেয়েছে বেশি। ৬ লাখ ৮০ হাজার ৮৪৮ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৫৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হজার ৫৮১জন ছাত্র। অন্যদিকে ৬ লাখ ৭ হাজার ৯০৯ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ৪ লাখ ২৩ হাজার ৮৪৩ জন। ছাত্রীদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩ হাজার ৬৮১ জন।
এ বছর এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৭৫৭ জন। যা গতবছরের তুলনায় এক লাখ ২৫ হাজার ৩৮৭ জন বেশি। অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছে ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮০১ জন। পাস করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৫৭ হাজার ৯০ জন। পাসের হারে এবার শীর্ষে রয়েছে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড। এবার এই বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। গতবছর মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ০২ শতাংশ। পাসের হার বিবেচনায় সবার নিচে রয়েছে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড। এই বোর্ডে পাস করেছে ৬০ দশমিক ২১ শতাংশ।
সাধারণ আটটি বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৬৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গতবছর ছিল ৬৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এবছর সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার কমেছে ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। সাধারণ বোর্ডগুলোর মধ্যে পাসের হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল বোর্ডে।
রেওয়াজ অনুযায়ি ৬০ দিনের মধ্যে এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের বাধ্যবাধ্যকতা থাকায় নির্ধারিত ৬০ দিনের আগে এবার ৫৫তম দিনে এবছরের ফলাফল প্রকাশ করা হলো। বিগত মহাজোট সরকারের সময়ে এটি চালু হওয়ার পর বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়েও এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
ফল প্রকাশ উপলক্ষে গতকাল (বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞান বিভাগ ও মেয়েদের সাফল্যে উৎফুল্লতা প্রকাশ করেন। পাসের হার কমে যাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সঠিক পদ্ধতিতে খাতা মূল্যায়ন করায় পাসের হার কমে গেছে। আগে পরীক্ষক ভালোভাবে খাতা মূল্যায়ন করতেন না। এতে একজন ভালা ছাত্র কম নম্বর পেতো আবার একজন খারাপ ছাত্র বেশি নম্বর পেয়ে যেতো।
তিনি বলেন, আমরা খাতা দেখার মান ঠিক রাখতে গিয়ে পাসের সংখ্যা কিছুটা কম হবে এটা স্বাভাবিক। এ বছর পাসের হার কম কেন শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা আরও বেশি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করব। তবে আপনারা জানেন, আমরা যখন শুরুর দিকে দায়িত্ব নেই তখন সারাদেশে সাড়ে আট হাজার স্কুলে গণিতে ও ইংরেজিতে একজনও পাস করেনি। আমরা সেই অবস্থা থেকে উত্তরনের চেষ্টা করেছি। এখন আর সেই অবস্থা নেই। মন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোচিংয়ের মাধ্যমে শূণ্য পাসের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমিয়ে এনেছি। এটার অনেক উন্নতি হয়েছে। এ বছর সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বিশেষ করে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট প‚র্বে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণে বাধ্যতাম‚লক করাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ আমাদের পরীক্ষাকে সুন্দর করেছে।
মন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে আমাদের মধ্যে উদ্বেগ ছিল, অথচ বিজ্ঞানে এবার গত বারের তুলনায় ২৪ হাজার ৫৫১ জন পরীক্ষার্থী বেশি অংশগ্রহণ করে এবং গতবারের চেয়ে ১০ হাজার ৮৫৮ জন বেশি পাস করেছে। বরাবরের মতো এবারও মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরা এবার ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি পাস করেছে। পাসের হার কমলেও পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মোঃ আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর মোঃ মাহাবুবুর রহমান, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
এর আগে দেশের ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল সকালে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ গণভবনে ফলাফলের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। এসময় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় যে পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে তার প্রশংসা করে পুরো পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনার কথা ভাবতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেছেন, এখন পরীক্ষা শেষ করতে যেরকম প্রায় দুই মাস সময় লেগে যায়, তা কমিয়ে আনতে পারলে শিক্ষার্থীদের যেমন আরও বেশি মনোযোগী করা যাবে, পরীক্ষা নিয়ে ‘গুজব আর অপপ্রচারের’ হাত থেকেও মুক্তি মিলবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা বদনাম হত প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রশ্নপত্র ফাঁস সমস্যাটা কিন্তু শুধু আমাদের দেশে না। অনেক উন্নত দেশেও এই সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে কারণ ডিজিটাল হওয়াতে ডিজিটালের যেমন সুফল আছে, মাঝেমাঝে কিছু কুফলও এসে যায়। খুব তাড়াতাড়ি সেটা প্রচার হয়ে যায়। এবার এইচএসসিতে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ না ওঠায় সন্তোষ প্রকাশ করে সরকার প্রধান বলেন, এবারে যে পদ্ধতিটা নেওয়া হয়েছে, সেটা খুবই চমৎকার। আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীরা চলে যাবে পরীক্ষার হলে। ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে, কয়েকটা সেটের প্রশ্নপত্র থাকে, কোন সেটটা দেওয়া হবে। তার ফলে নকল বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, ছেলেমেয়েরা একটু পড়াশোনা করলেই যেখানে ভালো রেজাল্ট করতে পারে, সেখানে তারা নকল করবে কেন? এবার পরীক্ষা শেষ করার পর ৫৫ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে পারায় শিক্ষক এবং শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, একটা ছোট্ট অনুরোধ আমার থাকবে, সেটা হল পরীক্ষার সময়টা। পরীক্ষার একটা দীর্ঘ সময়.. ২ এপ্রিল পরীক্ষা শুরু, আর ২৪ মে পর্যন্ত পরীক্ষা। এই অত দীর্ঘ সময়, বোধ হয় রেজাল্ট দিতেও আপনারা এত সময় নিলেন না পরীক্ষা নিতে যত সময় নিয়েছেন। সেখানে পরীক্ষার সময়টা কীভাবে কমিয়ে আনা যায়। নিজের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন পরীক্ষা দিয়েছি, তখন তো আমাদের দুই বেলা করে পরীক্ষা দিতে হত। সকালে এক পেপার, বিকালে এক পেপার। আমাদের তো দম ফেলার সময়ই থাকত না, সাত দিনে পরীক্ষা শেষ। ১০টা সাবজেক্ট, মাঝখানে দুই দিন ছুটি ধরে আমাদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত। আজকের বাস্তবতায় পরীক্ষার সময় কী করে কমানো যায়, তা খুঁজে দেখার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড : ৮টি সাধারণ বোর্ডের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল বোর্ডে ৭০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম দিনাজপুর বোর্ডে ৬০ দশমিক ২১ শতাংশ। এছাড়া ঢাকা বোর্ডে ৬৬ দশমিক ১৩ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ৬৬ দশমিক ৫১ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৬৫ দশমিক ৪২ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৬০ দশমিক ৪০ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬২ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং সিলেট বোর্ডে ৬২ দশমিক ১১ শতাংশ। এই ৮টি বোর্ডের মধ্যে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ হাজার ৫৬২ জন। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পেয়েছে ২১ হাজার ১৭১ জন। মানবিক, ইসলাম শিক্ষা, সংগীতে পেয়েছে ১ হাজার ৯৫৪ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষায় পেয়েছে ২ হাজার ৪৩৭ জন।
মাদরাসা বোর্ড : পাসের হারে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে মাদরাসা বোর্ড। এই বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় এবছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৭ হাজার ৭৯৩ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৭৬ হাজার ৯৩২ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ২৪৪ জন।
কারিগরি বোর্ড: এই বোর্ড পাসের হারে গতবার শীর্ষে থাকলেও এবার কিছুটা কমে দ্বিতীয় স্থানে। এবার পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ বছর অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৮৯ হাজার ৮৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৪৫৬ জন।
গত ২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই পরীক্ষা সারা দেশের ২ হাজার ৫৪০টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৯৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
চট্টগ্রামে ফলাফলে সামান্য উন্নতি
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় আগের বছরের চেয়ে সামান্য ভালো ফল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ বোর্ডে পাশের হার ৬২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। গতবছর পাশের হার ছিল ৬১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। পাশের হার বেড়েছে ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক হাজার ৬১৩ জন। গতবছর পেয়েছিলেন ১ হাজার ৩৯১ জন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) ফলাফল ঘোষণা করে শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান বলেন, পাশের হার গতবছরের চেয়ে সামান্য বেড়েছে। বলা যেতে পারে, এবার সামান্য উন্নতি হয়েছে। জিপিএ-৫ও সামান্য বেড়েছে। তবে সার্বিক ফলাফলে আমাদের সন্তুষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ প্রতি ১০০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে তিনজনও জিপিএ-৫ পায়নি।
তিনি বলেন, বিজ্ঞানে এবারই প্রথম চট্টগ্রাম বোর্ডে পাশের হার কমেছে। এর কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন পরীক্ষার্থীরা পদার্থ ও রসায়নে খারাপ করেছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামে পাশের ক্ষেত্রে এবারও ছাত্রীরা ছাত্রদের চেয়ে এগিয়ে আছেন। এবার ৬৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ ছাত্রী পাশ করেছেন। ছাত্র পাশ করেছেন ৫৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। বিজ্ঞান বিভাগে পাশের হার ৭৩ দশমিক ১১ শতাংশ। মানবিক বিভাগে পাশের হার ৫১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাশের হার ৬৮ দশমিক শূন্য এক শতাংশ। চট্টগ্রাম মহানগরীর তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম জেলা। মহানগরীতে পাশের হার ৭৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। মহানগর বাদে চট্টগ্রাম জেলায় পাশের হার ৫৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬১৩ জন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান বলেন, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার ২৫৩টি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে পাশের হার ৫০ শতাংশের নিচে এমন কলেজের সংখ্যা ১৭৪টি। জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংখ্যাধিক্যের দিক থেকে সেরা কলেজের তালিকায় এবারো শীর্ষে চট্টগ্রাম কলেজ। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৯৯ জন।

যশোর বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে
যশোর থেকে রেবা রহমান জানান, যশোর বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় এবার পাসের হার ও জিপিএ কমেছে। পাসের হার ৬০ দশমিক ৪০। ফলাফলে দেখা গেছে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২হাজার ৮৯ জন। গতবার বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭০ দশমিক ০২। জিপিএ- ৫ প্রাপ্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪৪৭। গতকাল প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধবচন্দ্র রুদ্র সাংবাদিকদের জানান, এবার পরীক্ষায় ইংরেজী পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীরা তুলনামূলকভাবে ভালো করতে পারেনি। এতে পাসের হারে প্রভাব ফেলেছে। যশোর বোর্ডে ইংরেজিতে পাস করেছে মাত্র ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। বোর্ড সুত্র জানায়, যশোর শিক্ষাবোর্ডের আওতায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দশ জেলার ৫শ’৭৩টি কলেজ থেকে ১ লাখ ৯ হাজার ৬শ’৯২ শিক্ষার্থী মোট ২শ’১৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নেয়। এরমধ্যে ছেলে ৫৬ হাজার ৮শ’২০ এবং মেয়ে ৫২ হাজার ৮শ’৭২ জন। পাস করেছে ৬৬ হাজার ২শ’৫৮ জন। সুত্র জানায়, নড়াইলের গোবরা মহিলা কলেজ, কুষ্টিয়ার গোড়াপাড়া ন‚রুল হক কলেজ, খুলনার হাড্ডা পাবলিক কলেজ ও ঝিনাইদহের প্রগতি মহিলা কলেজ থেকে কেউ পাস করেনি। আর শতভাগ পাস করেছে বোর্ডের ৬টি কলেজের শক্ষার্থীরা।
চলতি বছরে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় যশোর বোর্ডে ১০ জেলার মধ্যে সব চেয়ে ভাল ফলাফল করেছে খুলনা জেলা। এ জেলায় ৯৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০ হাজার ৪শ’ ২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১৩হাজার ৯শ’ ৮০জন। পাশের হার পাশের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ ভাগ। আর সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে মাগুরার জেলার শিক্ষার্থীরা। এ জেলায় ৩৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬হাজার ৪শ’ ৭৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ৩হাজার ২শ’ জন। পাশের হার মাত্র ৪৯ দশমিক ৪ ভাগ। জেলা পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যশোর জেলার শিক্ষার্থীরা। এ জেলায় পাশের হার ৬৩ দশমিক ৯৫ ভাগ।

বরিশালে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার সর্বনিম্নে
নাছিম উল আলম জানান, গতবছরের তুলনায় দশমিক ৩১ভাগ বৃদ্ধি পেয়ে এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে পাশের হার ৭০.৫৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা এযাবতকালের সর্বনিম্নে মাত্র ৬৭০-এর হ্রাস পেয়েছে। যা মোট পরিক্ষার্থীর মাত্র ১.০৮ শতাংশ। গতকাল দুপুর দেড়টায় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের কাছে ফলাফলের সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করেন। গত প্রায় এক দশকের মধ্যে এবারই বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে সর্বাধীক সংখ্যক ৬২হাজার ১৭৩ ছাত্রÑছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও পাশের হার নিয়ে হতাশ অভিভাবক মহল। এবারো ছেলেদের তুলনায় মেয়দের ফলাফল যথেষ্ঠ ভাল। বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও ঝালকাঠীর ৫টি কলেজের শতভাগ ছাত্রÑছাত্রী পাশ করলেও দুটি প্রতিষ্ঠানের পাশের হার শূন্য। এবারো বরিশাল ক্যাডেট কলেজের সব ছাত্রই জিপিএ-৫ নিয়ে পাশ করে তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।
পাসের হারে পিছিয়ে সিলেট
সিলেট থেকে ফয়সাল আমীন জানান, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সিলেট শিক্ষাবোর্ড পিছিয়ে। পাশের হার গত ১২বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন সিলেট শিক্ষাবোর্ডের ইতিহাসে। এবারের পাসের হার মাত্র ৬২ দশমিক ১১ শতাংশ। যেখানে এর আগের বছর পাসের হার ছিল ৭২ শতাংশ। শতভাগ পাসের সাফল্য অর্জন করেছে দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। সিলেটে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৭৩ জন, তার মধ্যে এগিয়ে রয়েছে ছেলেরা, তবে পাসের হারে সিলেটের মেয়েরা এগিয়ে।
সিলেট শিক্ষাবোর্ড থেকে এবার মোট ৭১ হাজার ৪২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করে। এরমধ্যে পাস করেছে ৪৪ হাজার ১শ’ ২৭ জন। ছাত্র ছিল ৩২ হাজার ৮শ’ ৮৫ জন। পাস করেছে ১৯ হাজার ১শ’ ৮৬ জন। পাসের হার ৫৮.৯২। ছাত্রী ছিল ৩৮ হাজার ৭শ’ ৯০ জন। পাস করেছে ২৪ হাজার ৯শ’ ৪১ জন। পাসের হার ৬৪.৮১। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সিলেট শিক্ষাবোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮শ’ ৭৩ জন পরীক্ষার্থী। পাসের হারের ক্ষেত্রে সিলেটের মেয়েরা এগিয়ে থাকলেও মোট জিপিএ-৫ এর ক্ষেত্রে কিন্তু এগিয়ে সিলেটের ছেলেরাই। ৫৩৪ জন ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে। আর ছাত্রীদের মধ্যে পেয়েছে ৩শ’ ৩৪ জন, শতকরা ১ দশমিক ২৩ ভাগ।
দিনাজপুর বোর্ডে ভাল করেছে রংপুর খারাপ পঞ্চগড়
দিনাজপুর অফিস জানায়, এবারের এইচ এস সি পরীক্ষায় সবচেয়ে ভাল করেছে রংপুর জেলার কলেজগুলি। পাশের হার ৬৮ দশমিক ৫৬। দ্বিতীয় নীলফামারী’র ৬২.৫৪, তৃতীয় গাইবান্ধার পাশের হার ৬১.০৭, চতুর্থ দিনাজপুরের ৫৯.৪৪, পঞ্চম লালমনিরহাটের ৫৮.১১,৬ষ্ট কুড়িগ্রামের ৫৭.৭৪, সপ্তম ঠাকুরগাও’র ৫৫.২১ এবং ৮ম পঞ্চগড় জেলার পাশের হার হচ্ছে ৪৭.৫৬। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দিনাজপুরের পাশের হার ৬০ দশমিক ২১ ভাগ। মোট জিপিএ প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রী’র সংখ্যা হচেছ ২২৯৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৩৪৪ জন ও ছাত্রী ৯৫৩ জন। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৬৫৩ কলেজের মধ্যে একজন পাশ করেনি এমন কলেজের সংখ্যা ১২ টি এবং শতকরা পাশ কলেজের সংখ্যা ১৪টি।
বিপর্যয় কাটিয়ে উঠেছে কুমিল্লা বোর্ড
কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন জানান, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের গত বছরের এইচএসসির বির্পযস্ত ফলাফলে কেঁদেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। আর চরমভাবে হতাশ হয়েছেন শিক্ষকরাও। এবছর সেই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠলো কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড। গতবারের ৪৯ দশমিক ৫২ ভাগ পাশের হারের জায়গায় এবারে উঠেছে ৬৫ দশমিক ৪২ ভাগ। আবার গতবারের চেয়ে জিপিএ-৫বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় পবার্ডের কনফারেন্স রুমে ফলাফলের সারসংক্ষেপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড.আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের হাতে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যানের সীট তুলে দেন। তিনি এবারের ফলাফল উত্তরণের নেপথ্যে পরীক্ষা পরিচালনা পদ্ধতি, খাতা মূল্যায়ন ও মনিটরিং ব্যবস্থার সাফল্য তুলে ধরেন। ফলাফল সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়, এবছর অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ১ লাখ ৩ হাজার হাজার ৬৬৬জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে পাশ করেছে ৬৭ হাজার ৮২০জন। পফল করেছে ৩৫ হাজার ৮৪৬জন। এবছর বিজ্ঞান বিভাগের পাশের হার ৮৩ দশমিক ০৫ ভাগ, মানবিক বিভাগে ৫৬ দশমিক ৬১ ভাগ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পাশের হার ৬৫ দশমিক ১৩ ভাগ। বোর্ডে রপাশের হার ৬৫ দশমিক ৪২ভাগ। বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৪৪জন। গতবছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬৭৮জন। বোর্ডে শতভাগ পাশ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৪টি। এবারে বোর্ডে কোন পরীক্ষার্থীই পাস করেনি এমন প্রতিষ্ঠান রয়েছে দুইটি।
রাজশাহী বোর্ডে জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে বগুড়া শীর্ষে
বগুড়া থেকে মহসিন রাজু জানান, এবছর এইচ এস সিতে পাশের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে শীর্ষস্থান দখল করেছে বগুড়া। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবার গড় পাশের হার যেখানে ৬৬ দশমিক ৫১ শতাংশ হলেও বগুড়ার কলেজগুলো থেকে এবার পাস করেছে ৭১ দশমিক ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী।
বৃহষ্পতিবার প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ি রাজশাহী বোর্ডে থেকে এবার ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩শ৩০জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯২ হাজার ৬শ৭৪জন উত্তীর্ণ হয়েছে। অন্যদিকে বগুড়া জেলার কলেজগুলো থেকে অংশ নেওয়া ২৪ হাজার ২শ৮৪জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৭ হাজার ২শ৮৯জন। এছাড়া রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবার মোট জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর ৪০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বা ১ হাজার ৬৮৮জনই বগুড়ার। এক্ষেত্রেও বোর্ডের অধীন অপর ৭ জেলার চেয়ে বগুড়া এগিয়ে রয়েছে। রাজশাহী বোর্ডে এবার মোট ৪ হাজার ১শ৩৮জন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। বগুড়ায় সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলোর মধ্যে এবার শতভাগ পাশের ক্ষেত্রে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ এবং করতোয়া মাল্টিমিডিয়া স্কুল ও কলেজ শীর্ষে রয়েছে। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে শীর্ষে রয়েছে সরকারি আজিজুল হক কলেজ। তবে এসওএস হারম্যান মেইনর কলেজ থেকে উত্তীর্ণ কোন শিক্ষার্থীই এবার জিপিএ-৫ পায়নি। বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে অংশ নেওয়া ৭শ৩২ শিক্ষার্থীর সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৩শ৪৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
ময়মনসিংহে কমেছে পাশের হার ও জিপিএ ৫
ময়মনসিংহ ব্যুরো জানায়, ময়মনসিংহে গত বছরের তুলনায় সেরা কলেজেগুলোতে এবার কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। এ সময় প্রত্যাশিত ফলাফলে অনেকের চোখেই ছিল আনন্দাশ্রæ। জানা গেছে, ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ থেকে চলতি বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নেন ৪৯ জন পরীক্ষার্থী। পাস করেছেন সবাই। তবে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪০ জন। অথচ গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৫০ জনের মধ্যে ৪৫ জন। শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে ১ হাজার ২২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২৪২ জন। পাস করেছেন ১ হাজার ২০৬ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এই কলেজে গত বছর পাসের হার ছিল ৯৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।
আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নেন ৯২৭ শিক্ষার্থী। পাস করেছেন ৮০৩ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক ৬২। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৫৭ জন। গত বছর এই কলেজে পাসের হার ছিল ৮৮ দশমিক ৯১ শতাংশ আর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ২৭৪ জন। মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন ৯৫০ ছাত্রী। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৯৫ জন। পাস করেছেন ৯৩৩ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ২১ শতাংশ। এই বছর পাসের হার বাড়লেও কমেছে জিপিএ-৫। গত বছর এই কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ২৩৮ জন শিক্ষার্থী। নটরডেম কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন ৭৭৭ জন শিক্ষার্থী। পাস করেছেন ৬৮৯ জন। পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৭ জন। অথচ গত বছর পাসের হার ও জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৯৭ দশমিক ৪ শতাংশ ও ১২৪ জন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন ৭৩৪ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫৭ জন। পাস করেছেন ৭শ’ জন। ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর জিপিএ-৫ ও পাসের হার দুটোই কমেছে। রয়েল মিডিয়া কলেজ থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নেন ৬৭০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন একজন। পাস করেছেন ৫৯৪ জন। আলমগীর মনসুর মিন্টু মেমোরিয়াল কলেজে পাসের হার বাড়লেও কমেছে জিপিএ-৫।


একনজরে পাসের হার
ঢাকা বোর্ড : ৬৬.১৩%
রাজশাহী বোর্ড : ৬৬.৫১%
কুমিল্লা বোর্ড : ৬৫.৪২%
যশোর বোর্ড : ৬০.৪০%
চট্টগ্রাম বোর্ড : ৬২.৭৩%
বরিশাল বোর্ড : ৭০.৫৫%
সিলেট বোর্ড : ৬২.১১%
দিনাজপুর বোর্ড : ৬০.২১%
মাদরাসা বোর্ড : ৭৮.৬৭%
কারিগরি বোর্ড : ৭৫.৫০%



 

Show all comments
  • Biswajit Sarker ২০ জুলাই, ২০১৮, ১:৪৭ এএম says : 1
    এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কি চোলতেছে তা সবাই জানে। SSC,HSCর পাসের হার কম বৃদ্ধির কারনটাও কারো অজানা নয়, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বললে নাগরিকত্ব থাকবেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Joyeeta Joyee ২০ জুলাই, ২০১৮, ১:৫৩ এএম says : 0
    পাশের হার বাড়ানোর ও দরকার নেই, কমানোর ও দরকার নেই। সঠিক ফলাফল প্রকাশ করুন। তহলে আর অপরাধে পড়তে হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Nesar Ahmed ২০ জুলাই, ২০১৮, ১:৫৫ এএম says : 0
    সঠিকভাবে পরীক্ষা হলে পাসের হার ৩০% তে আসবে।।
    Total Reply(0) Reply
  • S M Amir Umran ২০ জুলাই, ২০১৮, ১:৫৭ এএম says : 0
    কোচিং ব্যবসা, শিক্ষকদের উদাসীনতা, মানসম্মত শিক্ষক,মানসম্নত বই,পরীক্ষা পদ্ধতি ইত্যাদি অন্যতম কারণ বলে মনে করি।
    Total Reply(0) Reply
  • Golam Morshed ২০ জুলাই, ২০১৮, ১:৫৮ এএম says : 0
    যেদিন শিক্ষকের হাতের বেত কেড়ে নিয়েছেন সেইদিনই বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দাফন হয়ে গেছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরীক্ষা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ