Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাপাহারে খাবার পানির তীব্র সংকট

প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা : চৈত্রের তাপদাহ ও প্রচÐ খড়ায় নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদরের নিকটবর্তী মানিকুড়া দীঘিপাড়া গ্রামে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় ওই গ্রামের ক‚পগুলোর পানি শুকিয়ে গেছে। গ্রামবাসী প্রয়োজনীয় পানির অভাবে বিপাকে পড়ে প্রতিদিন পানির সন্ধানে দিক-বিদিক ছুটাছুটি করে পানি সংগ্রহ করে জীবনযাপন করছে। পানির অভাবে দূষিত ও নোংরা পানিতে তারা নিত্যদিনের ধোয়া-মোছার কাজ সারতে বাধ্য হচ্ছে। সরেজমিন ওই গ্রামে গিয়ে পানি সংকটের চিত্র দেখা গেছে। গ্রামে স্থাপিত একমাত্র ক‚পটি প্রতিদিন শুকিয়ে যাওয়ায় সারা রাত ধরে জমানো পনিটুকু সংগ্রহ করতে গ্রামবাসীরা রাত ৩টার সময় হতে ওই ক‚পে ভিড় জমিয়ে জীবন বাঁচানোর মতো সামান্য পানি সংগ্রহ করতেই ক‚পটি আবারো শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা কোন রকমে সকালের নাওয়া খাওয়া সেরে প্রয়োজনীয় পানির জন্য প্রতিদিন বিকেলে ঝাঁকে ঝাঁকে গ্রামের মেয়ে ও বধূদের পাশের গ্রামগুলোতে সারিবদ্ধভাবে কলসি কাকে পানি সংগ্রহ করতে যেতে দেখা যাচ্ছে।
গৃহবধূদের সাথে কথা হলে তারা জানান, পানির জন্য একসাথে বেশ কয়েকজন কোন গ্রামের একটি ক‚পে গেলে ওই গ্রামের মানুষ তাদের পানি দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। নিরুপায় হয়ে তারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন গ্রামের বিভিন্ন ক‚প থেকে কষ্ট করে পনি সংগ্রহ করে ঘরে ফিরছে। হঠাৎ করে চৈত্রের তাপদাহে তীব্র পানি সংকটকে এলাকার অভিজ্ঞ মহল বরেন্দ্র এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে গভীর নলকূপ স্থাপনকেই দায়ী করেছেন। দেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের ঠাঁঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল নামে খ্যাত নওগাঁর সাপাহার, পোরশা, পতœীতলা ও নিয়ামতপুর এলাকা। এসব এলাকায় এমনিতেই পানীয় জলের সংকট, এর পরেও আশির দশকের পরে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে এসব ঠাঁঠাঁ বরেন্দ্র এলাকার নিচু অঞ্চলে অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র সেচ কাজের জন্য গভীর নলক‚প স্থাপন করায় প্রতিবছর ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর/লেয়ার অস্বাভাভিকহারে নিচে নেমে যাচ্ছে। আর সে কারণেই বর্তমানে ওই এলাকার বিভিন্ন গ্রামে হঠাৎ করে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। স্থানীয় বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংগঠনের জরিপ মতে প্রতিবছর সাপাহার, পোরশা, পতœীতলা ও নিয়ামতপুর এলাকায় গড়ে দুই থেকে তিন ফিট পানির স্তর/লেয়ার নিচে নেমে যাচ্ছে। সাপাহার বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সাপাহার জোনের অধীনে সেচ কাজে ব্যবহৃত উপজেলার নিচু ও সমতাল এলাকায় বিদ্যুতায়িত ৩২৩টি গভীর নলক‚প রয়েছে। এসব গভীর নলক‚প হতে প্রতিদিন অসংখ্য পরিমাণ ভ‚গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে দ্রæত গতিতে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। বরেন্দ্র এলাকায় ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর/লেয়ার যে হারে নিচে নেমে যাচ্ছে তাতে এসব এলাকায় সুপেয় খাবার পানির মারাত্মক সংকট আর বেশি দূরে নয় বলে বিভিন্ন গবেষক মহল মনে করছেন। বর্তমানে উপজেলার মানিকুড়া দীঘিপাড়া গ্রামসহ উপজেলার যেসমস্ত গ্রামে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে ওইসব গ্রামের সাধরণ মানুষ অচিরেই পানি সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাপাহারে খাবার পানির তীব্র সংকট
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ