পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলা ও আমদানি ব্যয় বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) এলসি খোলায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে এ প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ১৪ শতাংশের মতো। এ হিসাবে এলসি খোলায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ গুণেরও বেশি। এ সময়ে খাদ্যপণ্য, মূলধনি যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামাল ও জ্বালানি তেলের এলসি খোলার হার উল্লেখযোগ্য বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে খাদ্যপণ্যের এলসি খোলার হার, প্রায় ১৮৪ শতাংশ। এদিকে, আমদানি ঋণপত্র বাড়ায় এ খাতে খরচও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে এ খাতে আমদানি ব্যয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে ২৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৭-১৮ জুলাই থেকে মেÑ এ ১১ মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৫২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গেল অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ২৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ফলে আমদানি ব্যয় বেড়েছে ২৫ দশমিক ৫২ শতাংশ। গেল অর্থবছরের একই সময়ে এই প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ১০ দশমিক ৬৮ শতাংশ। অন্যদিকে, গেল অর্থবছরের পুরো সময়ে রপ্তানি বাবদ বাংলাদেশ আয় করেছে ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার। গেল অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। এ হিসাবে রপ্তানি আয় বেড়েছে মাত্র ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই থেকে মেÑ এ ১০ মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে এলসি খোলা হয়েছে ৬ হাজার ৫৪০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪ হাজার ৪১১ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। ফলে এলসি খোলায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে এ সময়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র নিষ্পত্তি হয়েছে ৪ হাজার ৭৭৮ কোটি ৬১ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪ হাজার ৯৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। ফলে এলসি খোলায় নিষ্পত্তি বেড়েছে ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এ সময়ে খাদ্যপণ্যের মধ্যে চাল ও গমের আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৩৫৩ কোটি ৫৩ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ১২৪ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। সে হিসাবে খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলা বেড়েছে ১৮৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ সময়ে খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র নিষ্পত্তি বেড়েছে ১৭৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। অর্থাৎ এ পণ্যগুলোর এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ২৯০ কোটি ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ১০৫ কোটি ৫৬ লাখ ডলার।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৬১৯ কোটি ২৭ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৮০ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। সে হিসাবে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঋণপত্র খোলা বেড়েছে ২৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ সময়ে মূলধনি যন্ত্রপাতির এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে এই পণ্যটির এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছিল প্রায় ৪৪ শতাংশ।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ সময়ে পেট্রোলিয়াম তথা জ্বালানি তেল আমদানির ঋণপত্র খোলা ৪৮ দশমিক ০১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৪৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৩৪ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। এ সময়ে পণ্যটির এলসি নিষ্পত্তি ২৭ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২৯৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৩৩ কোটি ৫১ লাখ ডলার।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে শিল্পের কাঁচামালের আমদানি ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তি বেড়েছে যথাক্রমে ১২ দশমিক ১৩ শতাংশ ও ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ। এ সময়ে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১ হাজার ৮১৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৬১৯ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। আর এ সময়ে মূলধনি যন্ত্রপাতির এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ১ হাজার ৬৮১ কোটি ৪২ লাখ ডলার, যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৪৯৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। এছাড়া এ সময়ে অন্যান্য পণ্য আমদানির এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি বেড়েছে ৭৪ দশমিক ৪০ শতাংশ ও ১২ দশমিক ০২ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।