Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

নতুন চরে বাড়ছে হাতিয়ার আয়তন

নোয়াখালী থেকে বিশেষ সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

হাতিয়া উপজেলার বর্তমান আয়তন প্রায় পাঁচ হাজার বর্গকিলেমিটার। মেঘনা বেষ্টিত হাতিয়া মূল ভূখÐের চতুর্দিকে ছোট-বড় মিলিয়ে অর্ধশতাধিক চর রয়েছে। এর মধ্যে জেগে ওঠা চরের সংখ্যা ১৫টি। আগামী এক দশকে আরো ২০টি চর জেগে উঠবে।
হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত প্রকৃতির অপূর্ব সমাহার নিঝুমদ্বীপ। দ্বীপের ইউনিয়নের দক্ষিণ ও পূর্ব দক্ষিণে বিশাল আয়তনের চর জেগেছে। উল্লেখ্য, হাতিয়া উপজেলার বর্তমান আয়তন ২১টি জেলার আয়তনের চাইতে বড়। বিশ্বের ১৪টি দেশের আয়তনের চাইতে বড় এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ব সিঙ্গাপুরের আয়তনের তিনগুণ। এগুলোর ১৫টিতে দেড় লক্ষাধিক অধিবাসীর বসবাস ছাড়াও কৃষিকাজ চলছে। আগামী এক দশকে আরো ২০টি নতুন চরে জনবসতি ও চাষাবাদ শুরু হবে । অপরদিকে হাতিয়া উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে যে পরিমাণ ভূমি জেগে উঠছে তাতে করে আগামী দেড় থেকে দুই দশকে আরো একটি জেলার আয়তনসম্পন্ন ভূমি জেগে উঠার প্রহর গুণছে।
হাতিয়া জাহাজমারা ইউনিয়নের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে মেঘনা বেষ্টিত নিঝুমদ্বীপ দেশ বিদেশের ভ্রমণ পিপাসুদের দর্শনীয় স্থান। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে কোনো অঞ্চলের চাইতে সন্তোষজনক থাকার পাশাপাশি দেশ বিদেশে নিঝুমদ্বীপের সুখ্যাতি রয়েছে। এছাড়া নিঝুমদ্বীপের দক্ষিন-পূর্ব পার্শ্বে মেঘনা বেষ্টিত চল্লিশ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দমার চরে বিশ সহ¯্রাধিক অধিবাসীর বসবাস।
জাহাজমারা ইউনিয়নের পশ্চিমে বিগত ষাটের দশকে মেঘনার বুক চিরে এক খÐ ভূমি জেগে ওঠে। ১৯৬৫ সাল থেকে হাতিয়া মূলভূখÐের কয়েকজন কৃষক শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ শুরু করে। তখন উক্ত চরের নাম ছিল বালুয়ার চর। পরবর্তীতে কমলার চর থেকে বর্তমানে এটি নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সত্তরের ভয়াবহ জলোচ্ছাসে চরটির দুই শতাধিক কৃষক নিহত হয়। এর মধ্যে ভাগ্যক্রমে হাতিয়া তমরদ্দির একজন প্রাণে রক্ষা পান।
মার্কিন স্যাটেলাইট থেকে ধারণকৃত তথ্যের মাধ্যমে জলোচ্ছাসে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার অবহিত হয়। তখন থেকে চরটি নিয়ে দেশী বিদেশী মিডিয়ার আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দীকাল নিঝুমদ্বীপ পরিপূর্ণতা লাভ করে এখন দক্ষিণ ও পূর্বদিকে সাগরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে জোয়ার কম থাকায় বিশাল এলাকার বিস্তীর্ণ অংশে ডুবোচর দেখা যায়। বর্ষা মৌসুমে সাগরে ইলিশ আহরনকারী জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, জাহাজমারা নিঝুমদ্বীপ চ্যানেল অতিক্রম করে দক্ষিণে অন্তত আশি কিলোমিটার নৌপথ অতিক্রমকালে পানির গভীরতা কোথাও কোথাও ৫-৬ মিটার আবার কোথাও কোথাও ১০-১২ মিটারের এসে ঠেকেছে। অর্থাৎ দক্ষিণ ও পূর্ব দক্ষিণে সাগরে ক্রমান্বয়ে পলিমাটি ভরাট হচ্ছে। স্যাটেলাইট থেকে সংগৃহীত ছবিতে দেখা গেছে নিঝুমদ্বীপের দক্ষিণ ও পূর্ব বিশাল অংশে সমুদ্রের তলদেশ ক্রমান্বয়ে পলিমাটিতে ভরাট জমছে। আগামী এক দশকে বিশাল নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠার পাশাপাশি এসব চরেও জনবসতি গড়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের সংঘটিত ঝড় জলোচ্ছ¡াসের সময় গভীর সমুদ্র থেকে জোয়ারের সাথে কোটি কোটি টন পলিমাটি এখানকার নদ নদী ভরাট করে। এতে করে হাতিয়ার চতুর্দিকে কয়েকটি চর জেগে উঠে। এরমধ্যে দমারচর, ভাষাণচর, কালিরচর, বয়ার চর ও নলেরচর উল্লেখযোগ্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিয়া আসনের এমপি আয়েশা ফেরদাউস ইনকিলাবকে জানান, নদীভাঙা হাজার হাজার গৃহহীন পরিবার জেগে উঠা নতুন চরগুলোতে মাথা গোঁজানোর ঠাঁই পেয়েছে। ইতিমধ্যে ২টি চর নিয়ে হরণী ও চানন্দী ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে। নলের চরের পূর্বাংশে স্বর্ণদ্বীপ এবং ভাষাণচরে রোহিঙ্গা শরনার্থী পূর্ণবাসনের লক্ষ্যে উন্নয়নমূলক কাজ অব্যাহত রয়েছে। অর্থাৎ আগামী এক থেকে দেড় দশকের মধ্যে হাতিয়া উপজেলার আয়তন বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।

 



 

Show all comments
  • Nasir Uddin ১৫ জুলাই, ২০১৮, ২:৩৭ পিএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেঘনা

২৪ জানুয়ারি, ২০২২
২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ