Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্যান্টনমেন্ট বিলুপ্তির চিন্তা-ভাবনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে ব্যারাকপুরে প্রথম ক্যান্টনমেন্টে স্থাপন করেছিল ব্রিটিশরা। এরপর আড়াইশ’ বছরে সমগ্র ভারতে ক্যান্টনমেন্টের সংখ্যা বেড়ে ৬২টিতে দাঁড়িয়েছে। তবে, সেনাবাহিনী এখন সারা দেশের ক্যান্টনমেন্টগুলো বিলুপ্ত করার চিন্তা-ভাবনা করছে। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণে যে খরচ হয়, সেটা বাঁচাতেই ক্যান্টনমেন্ট বিলুপ্ত করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে এই বার্তা পাঠিয়েছে যে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরের সামরিক জায়গাগুলোকে ‘এক্সক্লুসিভ সামরিক স্টেশানে’ রূপান্তরিত করা যেতে পারে। সামরিক জায়গাগুলোর উপর সেনাবাহিনীর একক কর্তৃত্ব থাকবে। অন্যদিকে বেসামরিক জায়গাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে স্থানীয় মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেয়া যেতে পারে। সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, এর ফলে ক্যান্টনমেন্টগুলো দেখভালের অর্থ সাশ্রয় হওয়ায় দেশের প্রতিরক্ষা বাজেটের উপর চাপ কমবে। ক্যান্টনমেন্টগুলো রক্ষণাবেক্ষণে চলতি বছর ৪৭৬ কোটি রুপি ব্যায় হয়েছে। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আদেশ দিয়েছেন, যেটার কাজ সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে শেষ হবে। এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, “ক্যান্টনমেন্ট বিলুপ্ত করার প্রস্তাব নতুন নয়। ২০১৫ সালে ‘রিলেভেন্স অব ক্যান্টনমেন্টস ইন ইন্ডিয়া’ শীর্ষক এক জরিপ চালায় একটি টিম যার প্রধান ছিলেন প্রতিরক্ষা সচিব। মাও, লাক্ষ্ণৌ, আলমোরা, আহমেদনগর, ফিরোজপুর এবং ইয়োল ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেসামরিক জায়গাগুলো আলাদা করার জন্য চিহ্নিত করা হয়। ইয়োলে এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে”। কিন্তু প্রস্তাবিত পদক্ষেপের কারণে বিতর্কের সৃষ্টি হবে। কারণ অতীতে এ ধরণের সিদ্ধান্ত ব্যার্থ হয়েছে। এর আগে সমালোচকরা বলেছিলেন দিল্লী, মুম্বাই, লাক্ষেèৗ, পুনে, কলকাতা, আমবালা এবং অন্যান্য এলাকাগুলোর আকর্ষণীয় জায়গাগুলো দখলের পর শক্তিশালী চক্রগুলোর নজর পড়েছে এখন ক্যান্টনমেন্টগুলোর উপর। তাছাড়া ক্যান্টনমেন্টগুলোর ভেতর দিয়ে সড়কগুলো বেসামরিক নাগরিকদের জন্য খুলে দেয়ার জন্য মে মাসে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সেটি নিয়ে সামরিক মহলের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দেশে যে ১৭.৩ লাখ একর জমির মালিক, এর মধ্যে ২ লাখ একর জমি পড়েছে ১৯টি রাজ্যের ৬২টি ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে। অধিকাংশ ক্যান্টনমেন্টই স্থাপিত হয়েছে স্বাধীনতার আগে। এগুলো জনবহুল এলাকা থেকে অনেক দূরে বা শহরের বাইরে ছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এবং শহরায়ন বৃদ্ধির কারণে ক্যান্টনমেন্টগুলো এখন শহরের মূল অংশের অংশ হয়ে গেছে। স্বাধীনতার পরে সেনাবাহিনী ধীর ধীরে ক্যান্টনমেন্টের ধারণা থেকে সরে এসেছে কারণ এগুলোর মধ্যে বেসামরিক জায়গাও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে সামরিক বাহিনীর সাথে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের দ্ব›দ্ব। এছাড়া ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে যেসব বেসামরিক নাগরিক বাস করছেন, তারাও প্রায়ই বিভিন্ন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হন, যেগুলো কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়ে থাকে। কারণ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে মিউনিসিপ্যাল সীমার অধীনে পড়েন না। সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ