পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চলতি বছরের মে মাসে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনে নতুন রেকর্ড হয়েছে। ওই মাসে দৈনিক লেনদেন হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। এর আগে গত এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। শুধু লেনদেনই নয়, মে মাসে নতুন গ্রাহক বেড়েছে প্রায় সাত লাখ। মূলত রোজা ও ঈদ উপলক্ষে মে মাসে লেনদেন বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্টরা জানান, দ্রæততম সময়ে এক স্থান হতে অন্য স্থানে টাকা পাঠানোর অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম এখন মোবাইল ব্যাংকিং। বর্তমানে এ সেবা ব্যবহার করেই মানুষ তাদের পরিবার পরিজন ও নিকটাত্মীয়ের কাছে বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন। আর অন্য সময়ের চেয়ে রোজা ও ঈদের আগে এ সেবায় টাকা পাঠানোর পরিমাণ বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ মাসে ক্যাশ ইন ট্রানজেকশন, ক্যাশ আউট ট্রানজেকশন, মার্চেন্ট পেমেন্ট, রেমিট্যান্সের অর্থ প্রেরণ, পারসন টু পারসন লেনদেন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা পরিশোধ বেড়েছে। তবে কমেছে ইউটিলিটি বিল পরিশোধ ও সরকারী পেমেন্ট।
সুবিধা বঞ্চিতদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং চালুর অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১১ সালের মার্চে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথমবারের মতো দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে। এ পর্যন্ত ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ২৮টি ব্যাংককে এই সেবা চালুর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ২০টি ব্যাংক সেবাটি চালু করতে পারলেও পরবর্তী সময় দুটি ব্যাংক সেবাটি বন্ধ করে দেয়। ফলে বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা ব্যাংকের সংখ্যা ১৮টিতে নেমে আসে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি বছরের মে মাসে এ সেবায় নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ১৩ লাখ ২৩ হাজার। এপ্রিল মাসে যা ছিল ৬ কোটি ৬ লাখ ২৬ হাজার। ফলে এক মাসের ব্যবধানে গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ৬ লাখ ৯০ হাজার। আর এ বছরের মার্চে প্রথমবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক ৬ কোটি অতিক্রম করে। তবে নিবন্ধিত গ্রাহক বৃদ্ধির সঙ্গে এ সেবায় নিস্ক্রিয় একাউন্টের সংখ্যাও বাড়ছে। বর্তমানে মোট গ্রাহকের অর্ধেকেরও বেশি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। মে শেষে নিষ্ক্রিয় একাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৮৪ লাখ। নিয়ম অনুযায়ী, কোন এ্যাকাউন্ট থেকে টানা তিন মাস কোন ধরনের লেনদেন না হলে তা ইন-এ্যাকটিভ বা নিষ্ক্রিয় এ্যাকাউন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। আর তিন মাসের মধ্যে একটি লেনদেন হলেও তা সক্রিয় হিসেবে বিবেচিত। অবশ্য বড় কোন অনিয়ম না পাওয়া গেলে এ্যাকাউন্ট বন্ধ করে না ব্যাংক। এদিকে, জনপ্রিয়তার কারণে এ সেবায় লেনদেনও বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, মে মাসজুরে এ সেবায় মোট লেনদেন হয়েছে ৩২ হাজার ৮২২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আর এ মাসে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫৮ কোটি ৮০ লাখ টাক। আগের মাস এপ্রিলে দৈনিক লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ফলে এক মাসের ব্যবধানে দৈনিক লেনদেন বেড়েছে প্রায় ১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ক্যাশ ইন ট্রানজেকশন হয়েছে ১৩ হাজার ৮৪০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এ সময়ে ক্যাশ আউট ট্রানজেকশন হয়েছে ১২ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের মাস এপ্রিলে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট ট্রানজেকশন হয়েছিল যথাক্রমে ১৩ হাজার ১৫৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ও ১১ হাজার ৭৪৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ফলে এক মাসের ব্যবধানে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট ট্রানজেকশন বেড়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ ও ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। এ সময়ে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে ট্রানজেকশন হয়েছে ৫ হাজার ১৯৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা; যা আগের মাসে ছিল ৪ হাজার ৮৩৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ফলে এক মাসের ব্যবধানে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে ট্রানজেকশন বেড়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মে মাসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫৬৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকার বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে; যা আগের মাসের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। এ মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা; যা এপ্রিল মাসে ছিল ১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাক। ফলে এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স লেনদেন বেড়েছে ২৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ সময়ে মার্চেন্ট পেমেন্ট (কেনাকাটার বিল) করা হয়েছে ২২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা; যা আগের মাসের চেয়ে ২৮ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। তবে এ সময় ইউটিলিটি বিল পরিশোধ প্রায় ৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২২৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আর সরকারী পেমেন্ট ৪২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এছাড়া এ মাসে অন্যান্য বাবদ লেনদেন হয়েছে ৪২৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা; যা আগের মাসে ছিল ৪২২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ব্যাংকগুলো সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং করতে পারে না বিধায় এ কার্যক্রমের জন্য এজেন্ট নিয়োগ করে। নির্ধারিত কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এজেন্ট নিয়োগ দেয় ব্যাংকগুলো। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মে মাস শেষে ব্যাংকগুলোর মনোনীত এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট লাখ ২০ হাজার ৩৫৩ জন। এপ্রিল পর্যন্ত এজেন্টর সংখ্যা ছিল আট লাখ ১১ হাজার ৭৩ জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।