Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গ্রেফতার ও নথি তলবের ক্ষমতা চান ডিসিরা

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

প্রশাসন থেকে পৃথক করার পর বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন ফৌজদারি আইনের কিছু ক্ষমতা ফিরে পেতে চাইছে। তাদের এমন চাওয়া আসছে ২৪ জুলাই ডিসি সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরা ফৌজদারী আইনের কয়েকটি ধারা প্রয়োগ করার ক্ষমতা তাদের হাতে নিতে চান। ফৌজদারি কার্যবিধি (সংশোধন) আইন ২০০৯ এর ৮৩ (ক) ধারা বর্তমানে ৪৩৫ ধারায় নথি তলবের ক্ষমতাসহ অন্তত সাতটি ধারার ক্ষমতা ফিরে পেতে জেলা প্রশাকেরা প্রস্তাব দিয়েছেন। সে সাথে তারা ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ও ১৪৫ ধারায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতাও ফিরে পেতে চান। জেলা প্রশাসকদের এসব প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বই আকারে ডিসি সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।
বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে আসছে ২৪ জুলাই ঢাকায় বসবে ডিসি সম্মেলন। এ সম্মেলনে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) বিশেষ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য চাওয়া হচ্ছে ঝুঁকি ভাতা। এ ছাড়া জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারির জন্য পুলিশের মতো রেশন-সুবিধা চালুর প্রস্তাব করা হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ডিসি সম্মেলনে উত্থাপনের জন্য দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর ৪২টি প্রস্তাব দিয়েছেন। এরমধ্যে ফৌজদারী কার্যবিধি (সংশোধন) আইন ২০০৯ এর ৮৩ (ক) ধারা সংশোধন করে জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ফৌজদারী কার্যবিধি ৪৩৫ ধারায় নথি তলবের ক্ষমতা বাতিল করা হয়েছে তা পুণর্বহালের প্রস্তাব করা হয়েছে।
জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (ভ্রাম্যমান আদালত) নথি তলবের ক্ষমতা না থাকায় আপিল শুনানিতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। সে কারণে এ ধারাটি সংশোধন বা পুনর্বহালের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি বর্তমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন আনারও প্রস্তাব দিয়েছেন।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. মোখলেছুর রহমান, ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ও ১৪৫ ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিধান ডিসিদের উপর দিয়ে এর ধারা দুটো সংশোধনের প্রস্তাব করেছেন। হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনীষ চাকমার প্রস্তাবে বলা হয়, মাঠ পর্যায়ে উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তারা সরকারের বিভিন্ন নীতিমালা, নির্দেশনা এবং আদেশ প্রতিপালন করেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশে বিরাজমান জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ এবং উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তাদের আওতায় সশস্ত্র আনসার সদস্য পদায়ন করা যেতে পারে।
নড়াইলে জেলা প্রশাসক মো. এমদাদুল হক চৌধুরীর প্রস্তাবে বলা হয়, গ্রাম আদালতের কার্যক্রম দুর্বল। ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালতের মাধ্যমে তৃণমুল পর্যায়ে বিরোধ নিস্পত্তিতে যথাযথ ভূমিকা রাখছে না। ফলে গ্রামের হত দরিদ্র লোক আদালতের জালে আটকা পড়ে যাচ্ছে। গ্রাম আদালত বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ ছাড়া ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনাল মামলায় কোন পক্ষ হেরে গেলে আপিল করতে পারে না। এ মামলার পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করতে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। সে কারণে মামলার আপিলেট কোর্ট স্থাপন করা প্রয়োজন। শেরপুর জেলার জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন প্রতিটি উপজেলায় ন্যায্য মূল্যের বাজার স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন। তার প্রস্তাবে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সরকারিভাবে মোটরসাইকেল প্রদান করার কথাও বলা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার জেলা প্রশাসক মো. আখতাররুজ্জামান উপজেলা প্রশাসনের পুরানো অর্গানোগ্রাম সংশোধনের প্রস্তাব করেছেন। নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন মৎস্য চাষ এবং কৃষি কাজে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে সমতাকরণের প্রস্তাব করেন। কারণ মৎস্য চাষে বিদ্যুৎ বিল বাণিজ্যিকহারে পরিশোধ করায় মাছের উৎপাদন খরচ বেশি হয়। সে ক্ষেত্রে উভয় কার্যক্রম কৃষি কাজের আওতাভুক্ত করা প্রয়োজন। এছাড়া বিদেশগমন ছাড়পত্র ও স্মার্ট কার্ড জেলা থেকে প্রদান করারও তিনি প্রস্তাব করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রশাসন

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ