Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোনালী আঁশে স্বপ্নভঙ্গ পূরণ হয়নি লক্ষ্যমাত্রা

মিজানুর রহমান তোতা : | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০১৮, ৩:২২ এএম

চলতি মৌসুমে সারাদেশে সোনালী আঁশ পাটের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সারাদেশে এবার পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ লাখ ৫ হাজার ৩৪ হেক্টর জমি। আবাদ হয় ৬ লাখ ৫০ হাজার ৯শ’৪৯ হেক্টর জমি। যা লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ১৯ ভাগ পূরণ হয়নি। সংশ্লিষ্টরা কারণ হিসেবে বৃষ্টিপাতকেই উল্লেখ করছেন। এতে অনেক চাষি পাট বপন করতে পারেনি। মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা ও চাষিদের বক্তব্য, পাটের উপযুক্ত মূল্য না পাওয়া ও বাজার বিশৃঙ্খলা আবাদে অনাগ্রহের মূল কারণ। তাদের দাবি এখনই জরুরিভাবে বাজার ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিশৃঙ্খলারোধ ও উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, সোনালী আঁশের স্বর্ণযুগ ফেরার স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কা ক্রমেই প্রবল হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ফিল্ড সার্ভিস উইং এর পরিচালক ড. আব্দুল মুঈত অবশ্য বলেছেন, পাটের আবাদ কম হয়েছে কিন্তু আবাদি পাটের অবস্থা দেখে বলা যায়, চাষিরা পাটের ফলন পাবেন আশাতীত। পাটের আঁশ ও রং হবে খুব ভালো।
মাঠের চিত্র হচ্ছে, পাট কাটার অপেক্ষায় রয়েছেন চাষিরা। মাঠে বাতাসে পাট দুলছে। আর ক’দিন পরেই পাট কাটা শুরু হবে। চাষিরা পাটের অবস্থা দেখে খুশী তবে পাটের উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তির ব্যাপারে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। অতীত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে যশোরের শার্শার ডিহি ইউনিয়নের মোঃ আলম, সাতক্ষীরার কলারোয়ার সাহারুল ইসলাম ও ফরিদপুরের নগরকান্দার তোফাজ্জেলসহ কয়েকজন পাট চাষি দৈনিক ইনকিলাবকে জানায়, ‘পাটের অবস্থা তো খুব ভালো। কিন্তু পাট বাজারে তোলার পর মনডা খারাপ হয়ে যায়’। চাষিদের কথা, তদারকির অভাবে মুনাফালোভী ফড়িয়া, দালাল ও আড়তদারদের দাপট বেড়ে যায়। সাধারণ চাষিদের নানাভাবে প্রতারিত করে সিন্ডিকেট। এসব ব্যাপারে নজরদারি না বাড়ানোর কারণেই আশাতীত ফলন হওয়ার পরও অনেক সময় চাষিদের লোকসান গুনতে হয়। প্রতিটি মৌসুমে চাষিরা সোনালী আঁশ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনরাত পরিশ্রম করেন। হারানো অতীত ঐতিহ্য ফেরানোর প্রত্যাশা করেন চাষিরা। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বীজ, পরিচর্যা, কাটা, পচানো, আঁশ ছড়ানো, শুকানো ও বিক্রির জন্য পরিবহনসহ খরচ হয় প্রায় ১২ হাজার টাকা। বিঘায় পাট হয় সাধারণত ১০-১২ মণ। গতবার মূল্য ছিল প্রতিমণ ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২শ’টাকা। তাতে গড়ে চাষিদের লোকসান হয়। গতবার সারাদেশের জেলায় জেলায় কৃষক সংগ্রাম সমিতি পাটের মূল্য প্রতিমণ সর্বনি¤œ ৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে। ফলে চাষিদের অনেকেই মনোকষ্টে পাট আবাদ না করে অন্যদিকে ঝুঁকে পড়ে। তাতে সোনালী আঁশের স্বর্গযুগ ফেরানো কঠিন হবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদসহ সংশিষ্টদের মন্তব্য, বিরাট সম্ভাবনাময় ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম মাধ্যম কৃষির এই খাতটির দিকে সামগ্রিকভাবে নজর দেওয়া জরুরি। প্রয়োজন হলে এখন থেকেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাঠে নামাতে হবে। সার্বিক বিষয়ে খোঁজ রাখতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সোনালী

২৭ অক্টোবর, ২০২২
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ