রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা। এক রোগের ডাক্তার দেখাতে এসে অন্য রোগের ডাক্তার দেখিয়ে সংশয়ে বাড়ি ফিরছেন রোগীরা। দিনে দিনে এর তীব্রতা বেড়েই চলেছে। এমনকি আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে না পেরে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক রোগী। এতে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেবহাটা উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাগজ-কলমে পাঁচজন ডাক্তার থাকলেও কর্মরত আছে মাত্র তিনজন। এর মধ্যে একজন ডেপুটেশনে বাইরে রয়েছেন ও অন্যজন ছুটিতে। এ ছাড়া ১০ জন নার্সের (সেবিকা) বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন আটজন। বাকি দুইজন ডেপুটেশনে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে আরো জানা যায়, চিকিৎসাসেবা বাড়াতে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে কথপোকথনের জন্য চালু হয় টেলিমেডিসিন সার্ভিস। কিন্তু ডাক্তার ও টেকনিশিয়ান না থাকায় সেটিও প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
সরেজমিন দেখা যায়, বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক ডাক্তার দেখাতে এসে অন্য ডাক্তার দেখিয়ে সংশয় মনে বাড়ি ফিরছেন রোগীরা। আবার অনেক রোগী সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে বেসরকারি ক্লিনিকের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। ফলে সরকারি সেবার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছেন রোগীরা। এ ছাড়া সমস্যা শোনার আগেই লম্বা ওষুধের তালিকা ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে রোগীদের। এমনকি আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে না পেরে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা পারুলিয়ার বাসিন্দা আব্দুল রশিদ বলেন, আমি আমার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। ভর্তির সময় একজন ডাক্তার এসে কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে চলে যান। চারদিনের মধ্যে আর কোনো ডাক্তার রোগী দেখতে আসেননি। এমনকি নার্সদের ডাকালেও তারা আসেন না। সার্বক্ষণিক তারা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সেবা নিতে আসা সখিপুরের বাসিন্দা সুফিয়া খাতুন বলেন, আমি দাঁতের ডাক্তার দেখাতে এসেছি। কিন্তু এসে জানতে পারলাম ডাক্তার ছুটিতে। তাই চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কাজী মহল্লা এলাকার বাসিন্দা সেলিম হোসেন বলেন, আসলাম বুকের ব্যথার চিকিৎসা নিতে। এসে দেখি একজন ডাক্তার ছাড়া কেউই নেই। যে আছে সে আবার গাইনি বিভাগের ডাক্তার। তাই বাধ্য হয়েই সাতক্ষীরাতে যেতে হচ্ছে রোগীদের।
এদিকে, নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজন রোগী জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ যোগদানের পর থেকে হাসপাতালে নানা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। রোগীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে ভর্তি নিতে চান না তিনি। বর্তমান এখানে অপারেশন তো দূরের কথা, সামান্য কাটা-ছেড়া রোগী আসা মাত্রই কোনোরকম প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এমনকি গজ-ব্যান্ডেজ ছাড়া বাকি সব বাইরে থেকে কিনে আনতে হয় রোগীর স্বজনদের।
গত ১৮ জানুয়ারি থেকে এপর্যন্ত হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি ছাড়া একটিও অপরেশন বা সিজার হয়নি বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। অথচ টিএইচও’র ব্যক্তিগত ক্লিনিক সিজারসহ অন্যান্য অপারেশনের রোগীতে পরিপূর্ণ থাকছে সবসময়। এবিষেয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার সঙ্কট রয়েছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ডাক্তার সঙ্কট দূর করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১৯৮৫ সালের জুলাই মাসে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ২০১১ সালের ১০ ফেব্রæয়ারি এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল বাড়ানো হয়নি এখনো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।