Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোটা সংস্কারের কমিটির বৈঠক আগামী সপ্তাহে

কোটা সংস্কার আন্দোলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৮, ৬:০৩ পিএম

অবশেষে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল এবং সংস্কারের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমকে আহŸায়ক করে ৭ সদস্যর কমিটি গঠন করেছে সরকার। এ আগামী ১৫ কর্যিদিবসের মধ্যে এ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গঠিত সংস্কার কমিটি আগামী সপ্তাহে প্রথম পর্যালোচনা বৈঠক করবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, গত ২ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কোটা পর্যালোচনায় কমিটির সদস্যরা হলেন, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থ সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব। এছাড়া কমিটির কার্যপরিধি বেধে দেয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে,বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা, সংস্কার এবং বাতিলের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা, বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা, সংস্কার এবং বাতিলের প্রয়োজন হলে বাতিল ও সংস্কারের যৌতিকতাসহ সুপারিশ প্রণয়ন। কমিটি ১৫কর্ম দিবসের মধ্যে সরকারের নিকট সুপারিশসহ প্রতিবেদন পেশ করিবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিধি) কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে এবং কমিটি প্রয়োজন হলে যে কোন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে কো-আপ্ট করিতে পারবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব ইনকিলাবকে বলেন, গঠিত সংস্কার কমিটি নতুন আগামী সপ্তাহে প্রথম পর্যালোচনা বৈঠক হবে। বৈঠকেটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে কোটা সংস্কারের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সে সময় তিনি বলেন, আসলে বিষয়টা আপনারা যতটা সহজভাবে বিশ্লেষণ করছেন, বিষয়টি এত সহজ নয়, জটিল আছে। এটা অনেক বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত আসবে। তার আলোকে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোটা সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়নি। কোটা নিয়ে জটিলতা আছে, একটু সময় লাগবে।
গত শনিবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলন আহŸান করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সংবাদ সম্মেলন শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে পরিষদের যুগ্ম আহŸায়ক নুরুল হক নূরসহ সাত শিক্ষার্থী আহত হন। গত সোমবারও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রীকেও মারধর করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা বাকী বিল্লাহকে আটক করেছে পুলিশ।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ ও উপজাতি কোটায় ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ করা আছে। এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে ১ শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের বিধান রয়েছে। এ কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধও করছিলেন তারা। গত ৯ এপ্রিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে বসে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীরা। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ৭ মে পর্যন্ত সময় নেন ওবায়দুল কাদের। কিন্তু এরপরের দিনও আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই। যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র- নৃ- গোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটা

২৩ ডিসেম্বর, ২০২১
১৭ নভেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ