রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সরিষাবাড়ীর রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোর চায়ের কাপে ঝড় বইছে। চলছে প্রধান দুই দল ছাড়াও অন্যান্য দলের প্রার্থীদের শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত পদচারণা। বইছে নির্বাচনী হাওয়া। অন্যান্য বারের মতো এবারো জামালপুর-৪ : সরিষাবাড়ী আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলের প্রায় ডজন খানেক প্রার্থীর পদচারণা চলছে। তারা ইতোমধ্যে নানা অঙ্গীকার দিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে মরিয়া হয়ে ওঠছেন। কেউ কেউ করছেন নানা ওয়াদা-অঙ্গীকার। অতীতে যারাই এমপি হয়েছেন, তারা ভোটে জয়লাভের পর সাধারণ জনগণকে ভুলে গেছেন। এবার তেমনি ভোটাররাও কৌশলী হয়েছেন। কোন ভোটার কাকে ভোট দেবেন অনুমান করা কঠিন। জামালপুর জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে সবার নজর সরিষাবাড়ীর দিকে। বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হলেও এ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি গত নির্বাচনে জয়ী হন। মামুনুর রশীদ জোয়ার্দার এমপি হলেও তার ভাই এনামুল হকের কথার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই। যতটুকু বদনাম হয়েছে তার ওই ভাইয়ের কারণেই।
এদিকে স্বাধীনতার পর থেকে এ আসনে তিনবার আ.লীগ প্রার্থী এমপি হন। এবারো এলকাবাসীর দাবি, এ আসনে জাতীয় পার্টি নয়, আ.লীগ প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিতে হবে। কারণ এ আসনে আ.লীগ ভোটার বেশি। প্রধানমন্ত্রী যদি এ আসনে আ.লীগ প্রার্থীকেই মনোনয়ন না দেন তবে কাকে দেবেন? গত নির্বাচনে প্রায় এক ডজন প্রার্থী মনোনয়নে দৌড়ঝাপ করলেও এবার সক্রিয় দুইজন। এদের মধ্যে যার নাম প্রথমেই উঠে আসে তিনি হচ্ছেন রাজধানীর তেজগাঁ কলেজের প্রিন্সিপাল, তেজগাঁ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য, সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আব্দুর রশীদ। তিনি ভোটারদের আস্থা অর্জনে এলাকায় অলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মীসহ সকল ইউনিয়ন ও পৌর জনপ্রতিনিধিদের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখছেন। এ ছাড়াও এলাকার হাজারো বেকারের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তিনি প্রতিনিয়তই ভাটারা থেকে পিংনা পর্যন্ত মানুষের দোরগোড়ায় ঘুরে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন। তিনি এবার জামালপুর-৪ আসনে নৌকার এমপি প্রার্থী।
দ্বিতীয় যার নাম সরিষাবাড়ীবাসী এখনো ভুলেননি, তিনি হচ্ছেন সাবেক এমপি ডা: মুরাদ হাসান। তিনি গত ২০০৮ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি হয়ে এলাকায় বিপুল উন্নয়ন করেছিলেন। তিনিও তুমুল ও তুখোড় প্রার্থী। ডা: মুরাদ হাসান ইতোমধ্যে গ্রামগঞ্জে সভা-সমাবেশ করে আসছেন। আওয়ামী প্রার্থী হিসেবে তিনিও পিছিয়ে নেই। এরপর আছেন সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মওলানা নুরুল ইসলাম, বর্তমানে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ছানোয়ার হোসেন বাদশা, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তৃণমূল পর্যায়ের নেতা অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান হেলালসহ আরো কয়েকজন। তারা সবাই বিভিন্নভাবে মনোনয়ন পেতে লবিং-গ্রæপিং করছেন।
এদিকে এককালের জামালপুর জেলার মধ্যে বিএনপির ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত সরিষাবাড়ী। পরপর দুইবার আ.লীগ ক্ষমতায় থাকায় কিছুটা ভাটা পড়লেও সম্প্রতি আবার চাঙা হতে চলেছে। অবশ্য সরিষাবাড়ীতে বিএনপিতে কোনো লবিং-গ্রæপিং না থাকায় সাবেক বিএনপির মহাসচিব এলজিআরডিবি মন্ত্রী ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের ভাতিজা ছাত্রনেতা, সরিষাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মো. ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম তিনি একাই বিএনপি দলীয় এমপি প্রার্থী।
১৪ দলের শরিক দল জাতীয় পার্টি। বর্তমানে জামালপুর-৪ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি থাকলেও তার কিছুটা ত্রæটির কারণে জাতীয় পার্টির ভোটারেরা চিন্তাভাবনা করছেন এ আসনে মামুনুর রশীদ জোয়ার্দার ছাড়া অন্য কাউকে এমপি বানানো যায় কি-না। সে ক্ষেত্রে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান এমপি ছাড়া আরো যারা প্রতিদ্ধ›িদ্বতা করতে পারেন তাদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির নেতা মোখলেছুর রহমান বস্তু। মোট কথা, জামালপুর জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত আলোচিত আসন সরিষাবাড়ী। যদি এ আসনে সুষ্ঠু ও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তবে ভোটের হিসাব পাল্টে যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।