Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারের কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০১৮, ১২:০১ এএম

বর্তমান সরকারের কাউন্ট-ডাউন শুরু হয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, যত কূটকৌশলই অবলম্বন করুন কোন লাভ হবে না। বেগম জিয়াকে মুক্তি দিতেই হবে এবং সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত করতে। আপনাদেরকে জনগণই বাধ্য করবে। গতকাল (শুক্রবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে দূরে রাখতেই প্রহসনের আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাজা দিয়ে তাকে কারাবন্দী করে রাখা বর্তমান সরকারের মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ। শেখ হাসিনার নির্দেশেই বেগম জিয়াকে কষ্ট দিয়ে নির্যাতন করছে। কারণটি জনগণের বুঝতে বাকী নেই। বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপক জনপ্রিয়তায় এটা করা হয়েছে।
গাজীপুর সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, দেশের নির্বাচনের প্রচলিত সংস্কৃতিকে কলুষিত করে শেখ হাসিনার গণতন্ত্রবিনাশী ভোট ডাকাতির সর্বশেষ লেটেস্ট মডেলের নির্বাচন গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরাসরি সহায়তায় আওয়ামী লীগ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আরেকটি প্রতারণার নির্বাচন উপহার দিলো। এই নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও আওয়ামী লীগ তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও দেশে-বিদেশে এটি কলঙ্কিত নির্বাচনের আরেকটি ইতিহাস হয়ে রয়ে গেল। কিন্তু তাদের কথা শুনলে মনে হয় মিথ্যার হ্যাচারিতেই যেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জন্ম!
তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্র দখল করে সিল মারার দৃশ্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসিসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শত শত কেন্দ্রের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে। অথচ নির্বাচন কমিশন গাজীপুর নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হওয়ার ‘সার্টিফিকেট’ দিয়ে ভোট ডাকাতিকেই প্রশ্রয় দিলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে গাজীপুর ও খুলনাতে যে নাটক মঞ্চস্থ করলো তাতে ভবিষ্যতে ভোটাররা আগামী যেকোনো নির্বাচনের ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ইতোমধ্যে গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির আনন্দ-উল্লাসে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উন্নয়ন সহযোগী দেশসহ দাতা সংস্থা ও দেশী-বিদেশী গণমাধ্যম। যদিও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমকে সরকারের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে তথাপিও দেশের অন্যান্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন্দ্র দখল করে সিল মারার যেসব দৃশ্য প্রদর্শিত হয়েছে, ন্যূনতম লজ্জাবোধ থাকলে বর্তমান নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ করতো।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ তো আন্তর্জাতিকভাবে স্বৈরাচারের স্বীকৃতি আগেই পেয়েছে। তাই ভোট ডাকাতির নির্বাচন নিয়ে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের গলাবাজি থামবে না এটাই স্বাভাবিক। এমনকি সমস্ত লজ্জার ভূষণ তারা খুলে ফেলেছে। সুতরাং নিজেদের নির্লজ্জ অপকর্ম নিয়ে মাথাব্যথা নেই।
গাজীপুর সিটিতে ভোটগ্রহণে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, এভাবেই জনগণ দেখলো শেখ হাসিনার শক্তিশালী গণতন্ত্রের নমূনা। জিসিসি নির্বাচনে ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে কয়েকটি কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল (ক) ম্যানিপুলেশন, (খ) আতঙ্ক সৃষ্টি করা, গ) পুলিশের এসপির ভোট ডাকাতিতে সরাসরি অংশহণ, (ঘ) ভোটারদের মনে ভয় সৃষ্টিতে পোশাকধারি ও সাদা পোশাকধারিদের বেপরোয়া কার্যকলাপ, (ঙ) ভয় দেখিয়ে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ। তিনি বলেন, জিসিসি নির্বাচনে ভোটারদের ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা ছিল না, স্বাধীনতা ছিল শুধু সরকারী যন্ত্রের, যারা ভোটারদের মনে ভয় সৃষ্টি করেছে। আমি ওবায়দুল কাদেরকে বলবো-আপনারা বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে জনগণের সঙ্গে যে উপহাস ও তামাশা করছেন তার জবাব জনগণের নিকট দিতেই হবে। আপনাদের বিচার আর বেশী দিন বিলম্ব হবে না। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে নির্বাচন ও ভোটকে যাদুঘরে পাঠানোর সকল বন্দোবস্ত করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণার চরম মূল্য দিতে হবে সিইসি কে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ