বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নাছিম উল আলম : বিগত মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চল সহ সারা দেশের ৫৬ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টন আমন উৎপাদনের সাফল্যের পরে আসন্ন প্রায় আমন মৌসুমে ৫৬ লাখ ৪৩ হাজার হেক্টর জমিতে আরো ১ কোটি ৪১ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হতে যাচ্ছে। কৃষি স¤প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই থেকে এ প্রস্তাবনা ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সবুজ সংকেত লাভের পরেই ডিএই তার বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জেলা অফিসগুলোতে এ লক্ষ্যমাত্রার বিষয়টি অবহিত করে তা অর্জনে মাঠ পর্যায়ে কর্মকান্ড শুরুর নির্দেশনা প্রদান করবে। তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আমন বীজতলা তৈরীর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে । আসন্ন মৌসুমে আমন আবাদের মোট জমির পরিমান বিগত মৌসুমের তুলনায় প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর হ্রাস পেলেও হাইব্রীড জাতের ধানের আবাদ বৃদ্ধির মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফলে জমির পরিমান কিছুটা কমলেও উৎপাদন প্রায় ২ লাখ টন আশা করছে ডিএই।
আসন্ন আমন মৌসুমে দেশে হাইব্রীড জমির পরিমান বৃদ্ধি সুষম সার প্রয়োগ এবং সুষ্ঠু বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছে ডিএই। আর এ লক্ষ্য সামনে রেখে ডিএই’র তরফ থেকে গত বছরের চেয়ে অন্তত ৩৫ হাজার হেক্টর অতিরিক্ত জমিতে হাইব্রীড আমন ধান আবাদের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কর্মকান্ড শুরু করা হবে বলেও জানা গেছে। গত বছর সারা দেশে প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রীড জাতের আমন আবাদ হলেও এবার তা দেড়লাখ হেক্টর অতিক্রম করা সম্ভব বলে কৃষি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন। ফলে আমন মৌসুমে ১ কোটি ৪১ লাখ টন চাল পাবার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হতে পারে। আসন্ন আমন মৌসুমে দেশে ৫৬ লাখ ৪৩ হাজার হেক্টর আমন আবাদ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে অন্তত ১.৬৫ লাখ হেক্টরে হাইব্রীড জাতের ধান আবাদের চিন্তা করেছে ডিএই। প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর অতিরিক্ত জমিতে হাইব্রীড জাতের ধান আবাদের মাধ্যমে বাড়তি উৎপাদন লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হতে পারে।
এদিকে ‘বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট-ব্রি’ অতি স¤প্রতি ‘ব্রি ধান-৮৭’ নামের আরো একটি হাইব্রীড জাতের আমন ধান উদ্ভাবন করেছে। যার ফলন হেক্টর প্রতি ৬ টন জানা গেছে। এটি আমন মৌসুমের আগাম জাত। ব্রি’র মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবির জানিয়েছেন, কৃষকের মাঠে ফলন পরীক্ষায় দেখা গেছে, এ জাত ২০০৮ সালে উদ্ভাবিত আমন জাত ‘ব্রি ধান ৪৯’ এর চেয়ে সাত দিন আগে ওঠে। পক্ষান্তরে ’৮৭-এর ফলন আগের জাতগুলোর তুলনায় হেক্টর প্রতি এক টন বেশি। এজন্য আমন মৌসুমের আগাম জাত হিসেবে ‘ব্রি ধান-৮৭’ চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছে। এ নিয়ে ‘ব্রি’ উদ্ভাবিত উফশী জাতের ধানের সংখ্যা দাড়াল ৯২টি। এর মধ্যে ছয়টি হাইব্রিড, অন্যগুলো ইনব্রিড। ব্রি ধান ৮৭-এর অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে শাহজাহান বলেন, এর দানা লম্বা ও চিকন। এ জাতের পূর্ণবয়স্ক একটি গাছের গড় উচ্চতা ১২২ সেন্টিমিটার। কাÐ শক্ত বলে গাছ লম্বা হলেও ঢলে পড়ে না। এর পাতা হালকা সবুজ। ধান পাকার সময় কান্ড ও পাতা সবুজ থাকে। পরিপুষ্ট এক হাজার ধানের ওজন ২৪ গ্রামের বেশি।
এদিকে বিগত রবি মৌসুমে সারা দেশে ৪৭ লাখ ২৫হাজার হেক্টর আবাদ লক্ষমাত্রার বিপরিতে প্রায় ৪৯ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ সম্পন্ন হয় বলে জানা গেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০৫ ভাগের কাছাকাছি। তবে দেশের কোন কোন এলাকায় বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রার ১২৫ ভাগের বেশী ছিল বলেও জানা গেছে। বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলের ১১ জেলায় বোরো আবাদ ছিল ১২০%-এর মত। যার মধ্যে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১২৮% জমিতে বোরো আবাদ সম্পন্ন হয় গত রবি মৌসুমে। উৎপাদনও ৫ লাখ ১৫ হাজার টনের স্থলে ৭ লাখ টন অতিক্রম করে। ফলে বিগত রবি মৌসুমে দেশে যে ১ কোটি ৯০ লাখ টন চাল পাবার যে লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিল তা অর্জিত হয়েছে বলে দাবী কৃষি স¤প্রসারন অধিদপ্তরের। তবে পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাথে সমন্বয় করে বিষয়টি এখন চুড়ান্ত পর্যায়ে।
অপরদিকে চলতি খরিপ-২ মৌসুমে দেশের প্রায় ১১ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদের মাধ্যমে ২৭ লাক্ষাধিক টন চাল পাবার লক্ষে মাঠে আবাদ চলছে। তবে এবার বৃষ্টির কিছুটা ছন্দ পতনে আউশের আবাদ বিলম্বিত হয়েছে। এর মধ্যে সারা দেশের প্রায় ২২ ভাগ আউশের আবাদ হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায়। ইতোমধ্যে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের জেলাগুলোতে ২ লাখ ৬ হাজার ৬২৭ হেক্টর আবাদ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গতকাল পর্যন্ত ২ লাখ ১১ হাজার ৫৪৪ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। যা লক্ষমাত্রার ১০২%। আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশেই আউশ আবাদ চলবে বলে জানিয়েছে ডিএই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।