Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সমৃদ্ধ উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ

| প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০১৮, ১০:৫৩ পিএম

একলাছ হক, আগরতলা (ত্রিপুরা) থেকে ফিরে : উত্তর-প‚র্ব ভারতের সবচেয়ে সমৃদ্ধ জাদুঘর উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার প্রাণকেন্দ্রে শ্বেত শুভ্র প্রাসাদটি ২০একর জমির ওপর স্থাপিত। স্থানীয়রা রাজবাড়ি নামেই ডাকেন। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন প্রাসাদ এটি। ১৯০১ সালে তৎকালীন রাজা রাধা কিশোর মানিক্য এটি তৈরি করেন। প্রাসাদের বাইরে দুটি বড় দিঘি রয়েছে। দেশী-বিদেশী পর্যটকরা নিয়মিত এখানে বেড়াতে আসেন। প্রাসাদের নিচ ও দ্বিতীয়তলায় রয়েছে সুন্দর পরিপাটি জাদুঘর। জাদুঘরটিতে আছে সারা ভারত এবং সেভেন সিস্টার্সের রাজ্যগুলোর বিভিন্ন যুগের প্রতœতত্ত¡, চারু ও কারু শিল্পের অনেক নিদর্শন। প্রদর্শিত প্রতœবস্তুর পাশে বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি ত্রিপুরা জাতির নিজস্ব ভাষা ককবরক এ বিবরণ লেখা। জাদুঘরের গ্যালারিতে সাজানো আছে বিভিন্নস্থানে পাওয়া অনেক প্রস্তর মূর্তি, গাছের জীবাশ্ম, প্রেট্রোলিয়াম আর প্রাকৃতিক গ্যাসের মানচিত্র। প্রতœতাত্তি¡ক খননে পাওয়া সোনা, রূপা আর তামার মুদ্রাও আছে। মৃৎশিল্পের পাশাপাশি পোড়ামাটি ও ব্রোঞ্জ নির্মিত মূর্তি। আদিম যুগের বেশ কিছু শিলালিপি গ্যালারিতে সাজানো। তৈল চিত্র এবং বস্ত্র আর অলঙ্কার। সংস্কৃত মহাকাব্যের সংগ্রহও আছে এখানে। দীর্ঘ সময় ত্রিপুরা শাসন করা মাণিক্য রাজবংশের রাজাদের চিত্র ও ইতিহাস। গ্যালারিতে প্রতœতত্ত¡, উপজাতীয় সংস্কৃতি, পেইন্টিং, বিভিন্ন যুগের ভারতীয় সংস্কৃতির নির্দশন। মহেঞ্জোদারো-হরপ্পা সভ্যতার কিছু প্রস্তর মুদ্রাও রয়েছে। বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থ নিয়ে সাজানো রবিন্দ্র গ্যালারী।
বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আর্কষণীয় হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারী। এ গ্যালারীতে সাজানো আছে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের ছবি। ততকালীন ফটো সাংবাদিক রবিন সেনগুপ্তের এসব দুর্যোগকালীন সময়ের ছবিতে ফোটে ওঠেছে শরণার্থীদের দু:খ-দুর্দশার চিত্র। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ থেকে আসা তরুন মুক্তিযুদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন অপারেশনের ছবি। এছাড়াও এই গ্যালারীতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা। দৈনিক বাংলা, আজাদ, সংবাদসহ সে সময়ের পত্রিকাগুলো সাজানো আছে। বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চের ভাষনের প্রতিকৃতি সাজানো রয়েছে গ্যালারীটিতে।
কলকাতা থেকে বেড়াতে এসেছেন এক পরিবারের পাঁচজন, তাদের একজন গৌরভ চক্রবর্তী বলেন, কলকাতা থেকে খুব সহজে আকাশ পথে আগরতলায় আসা যায়। অবসর সময় কাটানোর জন্য ত্রিপুরা রাজ্যটি অন্য জায়গা থেকে বেস্ট। কুলাহলমুক্ত পরিবেশ, পরিস্কার পরিছন্ন শহর এবং স্বল্প খরচে এখানে বেড়ানো যায়। এখানকার উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ পর্যটকদের কাছে আর্কষণীয়। এ প্রাসাদের জাদুঘর, দিঘী, মন্দিরে সময় কাটিয়ে ভালো লেগেছে। বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ থেকে বেড়াতে আসা শাহরিয়ার জানান, আগরতলার রাজবাড়ী দেখতে খুব সুন্দর। আগেও আমি এখানে এসেছিলাম। জায়গাটি দেখতে ভালো লাগে। এখানকার জাদুঘরটিতে দুষ্পাপ্য অনেক জিনিস দেখা যায়। জাদুঘরটি দেখলে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা যায়। তবে একটা ব্যাপার আমার কাছে ভালো লাগে নি। সেটা হলো প্রাসাদের প্রবেশ মূল্য ভারতীয়দের জন্য ১৫ রুপি আর বিদেশীদের জন্য ১৫০ রুপি। বাংলাদেশ থেকে এখানে অনেক পর্যটক আসেন তাই বাংলাদেশীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ভারতীয়দের সমান করলে ভালো হতো। অথবা সার্কের অন্তর্ভুক্ত দেশের পর্যটকতের জন্য প্রবেশ মূল্য ভারতীয়দের সমান করলে ভালো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রাসাদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ