Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাস্তার উন্নয়নে ধর্মীয় স্থাপনা ভাঙা হচ্ছে -ইসলাম ও দেশরক্ষা পরিষদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০১৮, ৬:৩৮ পিএম

ইসলাম ও দেশরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক নাসিমুর রহমান রেজভী এবং সদস্য সচিব মাওলানা আমিরুল ইসলাম কাসেমী গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ফ্লাইওভারের অজুহাতে ফেনীর ঐতিহ্যবাহী মহিপাল জামে মসজিদ ভাঙা হয়েছে। ইবাদত আদায় বা যাত্রাপথে মুসাফির ও স্থানীয়দের জন্য মসজিদটিতে সুযোগ-সুবিধা কম ছিলো না। আর মহাসড়কের পাশে মসজিদটি একেবারে হাতের নাগালেই ছিলো। একজন পথচারী মহিপাল এলেই তার দৃষ্টিগোচর হতো এ মসজিদ। কিন্তু উন্নয়নের দোহাই দিয়ে মুসলিম এই দেশে মসজিদ ভাঙা হচ্ছে।
তারা বলেন, হাতিরঝিল প্রকল্পে গৌরাঙ্গ মন্দির, চলাচলের সুবিধার কথা বিবেচনা করে ভাঙতে চেয়েছিল সরকার। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তা করতে দেয়নি। যার কারণে রাস্তা এবং ছোট ফ্লাইওভার তৈরি হয়েছে বাঁকা করে। মন্দিরের অবস্থান ঠিক রেখে যদি রাস্তা এবং ফ্লাইওভারের প্ল্যানে পরিবর্তন আনা যায়, তাহলে মসজিদ ঠিক রেখে রাস্তা ও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে না কেন?
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি স্থাপনার জন্য ৯ বছর ধরে আটকে আছে নরসিংদী শহররক্ষা বাঁধ। নরসিংদীর শহরের জন্য বাঁধ প্রয়োজনীয় একটি স্থাপনা। মেঘনা নদীর ভয়ঙ্কর ভাঙন থেকে শহর রক্ষায় এর বিকল্প নেই। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০০৮ সাল থেকে প্রায় সাড়ে ২২ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি নির্মাণের চেষ্টা করছে। কিন্তু বাধা দিয়ে সেখানকার হিন্দু বাউলগোষ্ঠী দাবি করেছে, ওই জায়গায় তারা অনেক আগে থেকে আখড়া বানিয়ে অবস্থান করছে। সে সাথে মেলার আয়োজন করে। এতে তাদের উপার্জনের অনেক উৎস্য আছে। বাঁধ নির্মাণ হলে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের ২টি মসজিদসহ সদরঘাট ও কামরাঙ্গীরচরের ২১টি মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য ভাঙার পরিকল্পনায় রয়েছে আরো ২৩টি মসজিদ। ইতোমধ্যে কুড়িল ফ্লাইওভার সংলগ্ন মসজিদ ভাঙা হয়েছে। সদরঘাটে বাইতুন নাজাত মসজিদ ভাঙা নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে প্রশাসনের সংঘর্ষও হয়েছে। এসব মসজিদ ভাঙার বিরুদ্ধে হাইকোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞাও আছে। কিন্তু প্রশাসনের লোকজন জোর করে তা ভাঙার চেষ্টা করছে।
রাজধানীর মিরপুর এলাকায় রাস্তা প্রশস্থ করতে ৫টি মসজিদ ও ১টি মাদরাসা ভেঙেছে সড়ক বিভাগ। কিন্তু মিরপুর নাজারেথ নভিসিয়েট ও এসএল লুইজেন সিস্টারস গির্জা ভাঙা হয়নি। তারা বলেন, রাস্তার জন্য ফেনীর মহিপাল মসজিদ, রংপুরের শাহী মসজিদ, রাজধানীর মাটিকাটায় বায়তুন নূর জামে মসজিদ ভাঙা হয়। প্রত্যেকটি মসজিদ ওয়াকফকৃত, কিন্তু তারপরেও প্রশাসন তা ভেঙে দেয়। পাবনার রাঘবপুর রাস্তার মাঝখানে ৪-৫টি মন্দির অক্ষত রাখা হয়েছে এবং তা সরকারিভাবে সংস্কারও করা হয়। সেখানে কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয় না। কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটি রাস্তা নির্মাণকালে ৪০টি হিন্দু পরিবারের বাসা ও ১টি মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় হিন্দু নেতারা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে দেখা করে। তিনি আশ্বাস দেন রাস্তা বাইপাস করে হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দির রক্ষা করা হবে। কিন্তু মসজিদ রক্ষার জন্যে এরকম কোন আশ্বাস সরকারের পক্ষে দেওয়া হয়নি।
রাজধানীর হাতিরঝিল সংযোগ সড়ক করতে গিয়ে শুধু সৌন্দর্য বর্দ্ধনের নামে দুইটি মসজিদ ও ১টি মাদরাসা, নাম মধুবাগ ঝিলপাড় অংশে সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানি জামে মসজিদ ও মাদরাসা এবং লেকের মোড়লবাড়ি অংশে মসজিদে বাইতুল মাহফুজ ভেঙে দেওয়া হয়। কিন্তু রামপুরা ডিআইটি সড়ক থেকে ঢুকতে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর মন্দিরটি বাঁচাতে রাস্তা বিপজ্জনকভাবে বাঁকা করে নেয় হাতিরঝিল কর্তৃপক্ষ।



 

Show all comments
  • md mohuber ২৪ জুন, ২০১৮, ৮:১১ পিএম says : 0
    এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন বাংলা দেশ সরকারের এটা করা ঠিক না
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ