Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনা স্টাইলে গাজীপুরে নির্বাচন হলে ভয়াবহ পরিণতি -ব্যারিস্টার মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৮, ১১:২১ পিএম

 সরকার খুলনা স্টাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন করতে চাইলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, খুলনায় ভোট ডাকাতির পর গাজীপুর এখন সরকারের জন্য এসিড টেস্ট। এই নির্বাচনে সরকারের আচরণের উপরই আগামী দিনের অনেক কিছুই নির্ভর করছে। খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে গতকাল (শনিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, গাজীপুরের নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে অসম্ভব জনসমর্থন রয়েছে। তবে সরকার খুলনার মতো এখানেও ভোট ডাকাতি করতে চায়। কিন্তু সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, খুলনা স্টাইলে গাজীপুর কিছু করার চেষ্টা করবে না। তাহলে এর ভয়াবহ পরিণতিতে আপনাদেরকেই ভূগতে হবে। গাজীপুরের নির্বাচন দেখে বিএনপি তিন সিটি (রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট) নির্বাচনে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে জানিয়ে স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা তিনটি সিটি করপোরেশনে মনোনয়ন দেবো, সব কিছুই করছি আমরা। কারণ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তবে গাজীপুরের নির্বাচনের পরে আমরা ঠিক করবো, আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবো যে, আমরা বাকী তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহন করবো কি করবো না।
প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের আহŸান জানিয়ে বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, জুন মাস পার হয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বর মাস বাদ দিয়ে দেন। মাঝ খানে থাকে আর মাত্র চার মাস। সময় এসছে এখন প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময়। অন্যায়-অবিচার-অত্যাচার-নির্যাতন, বিচারবর্হিভুত হত্যা-গুম-গ্রেফতার-মিথ্যা মামলা এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং এগুলোকে প্রতিরোধ করার জন্য যথেষ্ট শক্তি অর্জন করতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার আহবানও জানান তিনি
মওদুদ আহমদ বলেন, এদের (আওয়ামী লীগ) বিশ্বাস নাই। এরা ক্ষমতা হারাতে চাইবে না। ক্ষমতা হারালে এদের লাখ লাখ, হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি তারা যে করেছেন, যে অত্যাচার-অবিচার করছেন, মানুষের যে জমি-বাড়ি দখল করেছেন, মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে গেছেন, মানুষের বাড়ি-ঘর নিয়ে গেছেন। তারপরে হাজার হাজার মানুষকে বাণিজ্য করে জেলে নিয়ে আবার তাদের ছেড়ে দিয়েছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে আপনারা ব্যবসা করেছেন সব কিছু ধরা পড়ে যাবে। সেই ভয়ে তারা নির্বাচনকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র করতে পারে, চেষ্টা করতে পারে। সেদিকে আমাদের একটু নজর রাখতে হবে। আমি বিশ্বাস করে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। বেগম জিয়ার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যসৃষ্টি করে আমরা সেই গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার আমরা ফিরে পাবো।
মিথ্যা মামলায় কতদিন খালেদা জিয়াকে আটকে রাখবেন সরকারকে প্রশ্ন করে স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, নিম্ন আদালত নির্বাহী বিভাগের অধীনে চলে গেছে। হাইকোর্ট থেকে অর্ডার দিলেন ম্যাজিস্ট্রেট বললেন যে, উনার (খালেদা জিয়া) জামিনের আবেদনগুলো খুব তাড়াতাড়ি করে নিস্পত্তি করে দেন। সেই ম্যাজিস্ট্রেটের এতো বড় কী বলব? স্পর্ধাই বলব, হাইকোর্টকে অমান্য করে, হাইকোর্টকে অবমাননা করে জামিনের আবেদন শুনেছেন ঠিকই কিন্তু আদেশ দেবেন ৫ জুলাইতে। আদালত অবমাননা এর চাইতে আর বড় কী হতে পারে? কেন ম্যাজিস্ট্রেট মানে না? কেনো হাইকোর্টকে অবজ্ঞা করে? সুপ্রিম কোর্টের মান-মর্যাদা, উজ্জ্বল ভাবমূর্তি কেনো তারা (ম্যাজিস্টেট) নষ্ট করতে পারেন? একটি মাত্র কারণে তারা জানে যে, তাদেরকে এখন সুপ্রিম কোর্টের কাছে জবাবদিহি করতে হবে না, হয় না। তারা এখন নির্বাহী বিভাগের অধীনে কাজ করেন। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অবশ্যই মুক্তি পাবেন। কত দেরি করাবেন আপনারা, কত কৌশল করবেন, কতভাবে আপনারা বিলম্বিত করবে। জামিন তার হবেই।
পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন রেখে মওদুদ আহমদ বলেন, পুলিশের একটি অংশ এখন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন হিসেবে কাজ করছে। আপনারা যদি একেবারে গ্রামে-গঞ্জে , মাঠ পর্যায় যান সেখানে আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ, যুবলীগের কর্মকাÐ অন্যরকমের কিন্তু থানা ওসি সাহেব ওখানকার হেড অব দি আওয়ামী লীগ। তারাই সব ঠিক-ঠাক করেন। পুলিশ অফিসাররা আবার আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতাদের বলেন আপনাদের কিছু করার দরকার নাই, আপনাদের যা কাজ করার সব আমরাই করে দেবো। যার জন্য বিচারবর্হিভুতহত্যা, গুম-অপহরণ দিন দিন বাড়ছে। প্রতিদিনই সামাজিক অপরাধ দিন দিন বাড়ছে। কারণ হলো পুলিশের একটি অংশকে বিরোধী দল দমনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
সংগঠনের উপদেষ্টা মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে ও সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির একাংশের মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যারিস্টার মওদুদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ