Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিশুদের বিচ্ছিন্নকরণে নিজ দলে তোপের মুখে ট্রাম্প

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০১৮, ৮:১০ পিএম

মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রত্যাশীদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির সমালোচনায় সরব হয়েছেন খোদ রিপাবলিকান নেতারাই। মেক্সিকো সীমান্তে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিচালিত কঠোর অভিযানে বিপুল পরিমাণ পূর্ণবয়স্ক নারী-পুরুষ আটক হওয়ায় ৬ সপ্তাহেই ১৯৯৫ জন শিশু তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সমালোচনা চলছে। সমালোচনায় মেতেছেন স্বয়ং তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। ট্রাম্পের পদক্ষেপকে লজ্জাকর ও নিন্দাজনক আখ্যা দিয়েছেন অন্য চার সাবেক ফার্স্টলেডিও। ডেমোক্র্যাটরাও সমালোচনা করেছেন তার সিদ্ধান্তের। এর পাশাপাশি এই পদক্ষেপের কারণে ক্যাপিটল হিলে নিজ দলের তোপের মুখেই পড়েছেন ট্রাম্প। নিজ সন্তানদের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্টের মমত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডেমোক্র্যাট দলীয় এক কংগ্রেসম্যান। মেক্সিকো সীমান্তের পূর্ণ বয়স্ক অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের থেকে তাদের সন্তানদের বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে তিনি ট্রাম্পের প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন, তার নিজের সন্তান আছে কিনা। মঙ্গলবার ক্যাপিটল হিলে রিপাবলিকানদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বের হওয়ার সময় ডেমোক্র্যাটদের তোপের মুখে পড়েন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। স্ত্রী মেলানিয়া, মেয়ে ইভানকাসহ নিজ দল রিপাবলিকান শিবিরও সরব হয়েছে তার প্রশাসনের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিরুদ্ধে। ডেমোক্রেটরা মনে করেন, প্রেসিডেন্ট এক মুহূর্তেই এটি বন্ধ করতে পারেন। সিনেট ডেমোক্রেট নেতা চাক শুমার বলেন, ‘আপনি একাই এর সমাধান করতে পারেন। আপনি কলম ধরলেই সব থেমে যাবে।’ পরিবারের এই বিচ্ছেদ ঠেকাতে রিপাবলিকানদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। অভিবাসন নিয়ে কংগ্রেসের নিস্ক্রিয়তার কথা মনে করিয়ে দেন শুমার। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসে কতবার অভিবাসন আইন পাশ হয়েছে?.. শূন্য।’ মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের রুখতে স¤প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ নিয়ে সমালোচনার জবাবে শুরু থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলে আসছেন, তিনি নতুন কোনও অভিবাসন নীতি গ্রহণ করেননি। বিগত ডেমোক্র্যাট প্রশাসনের নেওয়া নীতি মেনেই মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি। অবশ্য অবৈধ অভিবাসীদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নকরণের ঘটনা পূর্ববর্তী মার্কিন প্রশাসনগুলোতেও দেখা গেছে। তবে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সে সংখ্যাটা অনেক কম ছিল। অতীতে দেখা গেছে, যেসব মানুষ অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতো এবং অপরাধের কোনও রেকর্ড ছিল না, তাদের আইনের আওতায় অপরাধী সাব্যস্ত না করে শুধুই অস্থায়ীভাবে আটক করা হতো কিংবা বিতাড়িত করার সুপারিশ করা হতো। মা ও শিশুরা সাধারণত একসঙ্গেই থাকতো। তবে ট্রাম্প প্রশাসন সব ধরনের অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীর বিরুদ্ধে আইনগত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করার প্রথম ৬ সপ্তাহেই প্রায় ২ হাজার শিশু পরিবার-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অতীতে এমন নজির দেখা যায়নি। পূর্বে ট্রাম্পকে সবসময় সমর্থন দিয়ে যাওয়া রিপাবলিকানরাও শিশুদের কান্না ও বন্দিত্বের ছবি দেখে নড়েচড়ে বসেছে। এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন তারা। মিশিগানের কংগ্রেসম্যান ফ্রেড আপটন বলেন, অতিসত্ত¡র এই কুৎসিত ও অমানবিক কাজ বন্ধ করতে হবে। এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আরিজোয়ানার সিনেটর জন ম্যাককেইন বলেন, শিশুদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের এই শিশুদের বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত মার্কিন নাগরিকরে শিষ্টাচার বহির্ভূত। আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও উদ্দেশ্যর সঙ্গেও এটা সাংঘর্ষিক। প্রশাসনের এটি ঠিক করার ক্ষমতা রয়েছে। এটা করা উচিত।’ সিএনএন, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ