মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতে স্বঘোষিত এক ধর্মগুরুর আশ্রম থেকে ৬০০ নারী শিষ্য নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁদের খোঁজ এখনো পায়নি পুলিশ।
স্বঘোষিত এই ধর্মগুরুর নাম দাতী মহারাজ। তাঁর একাধিক আশ্রম আছে। তার মধ্যে দক্ষিণ দিল্লির ফতেপুর এলাকার আশ্রমটি অন্যতম। এই আশ্রমের নাম ‘শ্রী শান্তি ক্ষেত্র’।
দাতী মহারাজের বিরুদ্ধে তাঁর আশ্রমের এক নারী শিষ্যকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগকারী তরুণীর (২৫) ভাষ্য, তিনি প্রায় এক দশক ধরে দাতী মহারাজের শিষ্য ছিলেন। ২০১৬ সালে তাঁকে ধর্ষণ করেন ধর্মগুরু ও তাঁর দুই সঙ্গী। ঘটনার পর তিনি আশ্রম থেকে পালিয়ে যান।
অভিযোগকারী তরুণী জানান, দাতী মহারাজের এক নারী শিষ্য তাঁকে (অভিযোগকারী) জোর করে ধর্মগুরুর কক্ষে ঢুকিয়ে দিতেন। অন্য নারী শিষ্যদেরও শ্লীলতাহানি করতেন মহারাজ।
বিষয়টি দীর্ঘদিন চাপা ছিল। গত সোমবার ওই তরুণী আশ্রমের মহারাজের বিরুদ্ধে স্থানীয় ফতেপুর বেরি থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযোগকারী তরুণী বলছেন, ধর্ষণের মামলা দায়ের করার পর ধর্মগুরুর শিষ্যরা তাঁকে জীবননাশের হুমকি দিয়েছেন। তাঁকে মামলা তুলে নিতে বলেছেন।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দাতী মহারাজকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে দিল্লির মহিলা কমিশন।
গতকাল রোববার রাজস্থানে দাতী মহারাজের আশ্রমে হানা দেয় পুলিশ। তবে সেখানে দাতী মহারাজকে পাওয়া যায়নি। তিনি আত্মগোপন করেছেন। দাতী মহারাজের বিরুদ্ধে পুলিশ ‘লুক আউট’ নোটিশ জারি করেছে।
এদিকে দাতী মহারাজের আশ্রমে থাকা ৬০০ নারী শিষ্যের কোনো খোঁজ পুলিশ পায়নি।
‘নিখোঁজ’ হওয়া এই নারী শিষ্যরা কোথায় গেছেন, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, নারী শিষ্যরা নিজেদের ঘরে ফিরে গেছেন, নাকি তাঁদের অন্যত্র পাচার করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নারী শিষ্যদের ধর্ষণের দায়ে এর আগে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন কথিত সাধু ও ডেরা সাচা সৌদার প্রধান গুরুমিত রাম রহিম সিং ইনসান। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে তিনি কারাবন্দী রয়েছেন। রাম রহিম সিংয়ের বিরুদ্ধে তাঁরই আশ্রমের দুই সাধ্বী ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। গত ২৫ আগস্ট রাম রহিম সিংকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
রাম রহিম সিংয়ের ঘটনার সপ্তাহখানেক পর উত্তর প্রদেশের বস্তি জেলার সন্তু কুটির আশ্রমে স্বঘোষিত আরেক ধর্মগুরু স্বামী সচ্চিদানন্দের সন্ধান মেলে। তাঁর বিরুদ্ধে আশ্রমের চার সাধ্বী ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, স্বামীজি ও তাঁর সঙ্গী সাধুরা আশ্রমের সাধ্বীদের যৌন নির্যাতন করতেন। ধর্ষণ করতেন। এমনকি গণধর্ষণও করতেন।
এসব ঘটনার মাঝে নতুন করে আরেক স্বঘোষিত ‘গডম্যান’ বা বাবার সন্ধান মেলে দিল্লির রোহিণী এলাকার একটি আশ্রম ও আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই আশ্রমের প্রধান বাবা বীরেন্দ্র দেব দীক্ষিত। তিনিও তাঁর আশ্রমের নাবালিকা কিশোরীদের যৌন নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ ওঠে। আশ্রমের নাবালিকা মেয়েদের অভিভাবকেরা দিল্লি হাইকোর্টে একটি আবেদন জানালে আদালতের নির্দেশে আশ্রম থেকে উদ্ধার করা হয় ৪০ কিশোরীকে। তাদের দিল্লির বিভিন্ন হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ভারতের ‘ভণ্ড’ বাবাদের একটি তালিকা ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছে অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদ। দেশের আখড়াদের এটি একটি বড় সংগঠন। গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর এই আখাড়া পরিষদ প্রথম প্রকাশ করে ভণ্ড বাবাদের তালিকা। তখন ওই তালিকায় ছিল ১৪ জন ভণ্ড বাবার নাম। এরপর সেই তালিকায় যুক্ত হয় আরও তিন ভণ্ড বাবার নাম। তাঁরা হলেন দিল্লির বীরেন্দ্র দীক্ষিত, উত্তর প্রদেশের বস্তির সচ্চিদানন্দ সরস্বতী ও এলাহাবাদের ত্রিকাল ভগবান। সব মিলিয়ে ভণ্ড বাবাদের তালিকায় উঠে আসে ১৭ জনের নাম।
১৭ ভণ্ড বাবা
গুরুমিত রাম রহিম সিং, আশারাম বাপু, রাধে মা, সচ্চিদানন্দ গিরি, স্বামী ওম, নির্মল বাবা, ইচ্ছাধারী বাবা, স্বামী অসীমানন্দ, নারায়ণ সাঁই, রামপাল, আচার্য কুশমুনি, ব্রাহাস্পতি গিরি, ওম নম শিবায় বাবা, মালখান সিং, বীরেন্দ্র দীক্ষিত, সচ্চিদানন্দ সরস্বতী ও ত্রিকাল ভগবান।
ভণ্ড বাবাদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজিত হয়েছে দিল্লির দাতী মহারাজের নাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।