মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি এবার যখন বেইজিংয়ে অবতরণ করবেন, সেটা নিশ্চিতভাবে নেপাল-চীন সম্পর্ককে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে সফরের জন্য ১৯ জুন নির্ধারিত হয়েছে। তবে দুই দেশই যথাযথ চ্যানেলে যোগাযোগের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করবে।
প্রধানমন্ত্রী ওলি বেইজিংয়ের জন্য নতুন কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। ২০১৫ সালে চা-ওয়ালা মোদির ভারত কর্তৃক আরোপিত অবরোধের কারণে নেপালের যখন দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম, তখন প্রধানমন্ত্রী ওলিকে সব রকমের সাহায্য দিয়েছে চীন। ছয় মাসেরও বেশি সময় ওই অবরোধী স্থায়ী হয়েছিল।
চীন যে সহায়তা দিয়েছিল, সেজন্য নেপালের জনগণ তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছে। বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু। প্রধানমন্ত্রী ওলি সেই দেশে অবতরণের জন্য প্রস্তুত যেখানে এক সময় চেয়ারম্যান মাও এবং সর্বোচ্চ নেতা দেং নেতৃত্ব দিয়েছেন। সত্যি বলতে কি এই নেতৃদ্বয় সবসময় নেপালি শাসকদের বিশেষ করে নেপালের রাজা ও প্রধানমন্ত্রীদের পরামর্শ দিয়েছেন যাতে তারা দক্ষিণের প্রতিবেশী দেশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে। কি কারণে এই পরামর্শ, সেটা অজানাই রয়ে গেছে।
প্রয়াত বি পি কৈরালার ছেলে প্রকাশ কৈরালা বলেছেন, চীনের শীর্ষ নেতারা নেপালের নেতাদের বিশ্বাস করেন না। সম্ভবত চীন মনে করে, নেপালের নেতারা সময় আসলে তাদের গোপন আলোচনার কথাবার্তা দক্ষিণের দেশের কাছেও বলে দিতে পারে। সম্ভবত এই উদ্বেগের কারণেই নেপালের নেতাদের সাথে খোলামেলা কথা বলতে ভয় পায় চীন। নেপালের মানুষ এটা ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করে। নেপালের অভ্যন্তরীণ কর্মকান্ডে র’য়ের গভীরভাবে জড়িত থাকার বিষয়ে চীন ভালভাবেই অবগত আছে। সে কারণেই সম্ভবত মিডিয়া এত প্রাণবন্ত। তবে, চীন যদি একেবারে শুরু থেকেই নেপালের বাধ্যবাধকতাটা বুঝতো, তাহলে দক্ষিণে আমাদের এমন একটা ভারত থাকতো যারা সবসময় চীনকে এক নম্বর শত্রু জ্ঞান করতো। এটা হলো হীনমন্যতা। ভারতের অপর নাম হলো হিংসাপরায়ণ। নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি চীনে যাচ্ছেন, এই খবরেই হয়তো দক্ষিণের অনেকের রক্ত চাপ বেড়ে গেছে, যারা নেপালকে বেবি ভুটানের মতো আশ্রিত রাজ্য মনে করে। স্মরণ করা যেতে পারে ভারত সরকার কিভাবে নেপালের জাতীয়তাবাদী জানাকপুরের জনগোষ্ঠিকে কিভাবে ভিন্নদিকে নিয়ে গিয়েছিল। নেপালের মানুষ আশা করছে, ১৯ জুনের পর বেশ কয়েক রাত ঘুম হবে না প্রধানমন্ত্রী মোদির। তবে তাই হোক। নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি বেশ কিছু চুক্তি চুড়ান্ত করার অপেক্ষায় আছেন। ২০১৫ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানার পর বেইজিংয়ে প্রথম সফরের সময় এই চুক্তিগুলো করা হয়েছিল। নেপালকে যন্ত্রণায় পুড়তে দেখে ভারত যখন আমোদিত হয়েছিল, তখন ভারত-কর্তৃক নিপীড়িত এই দেশের সাহায্যে এগিয়ে আসে চীন। এটা একটা নিরেট বাস্তবতা।
উচ্চ পর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে, আন্ত-সীমান্ত রেলওয়ে লিঙ্ক, কয়েকটি পেট্রোলিয়াম স্টোরেজ রিজার্ভ, সরবরাহ লাইন নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং স্থাপন, শুষ্ক বন্দর নির্মাণ, জলবিদ্যুতের মতো প্রকল্পগুলোর প্রস্তাব চুড়ান্ত করার কাজ চলছে। আসন্ন সফরে চীনের সামনে এই চুক্তিগুলো উপস্থাপন করবে নেপাল।
অন্য কিছু সূত্র জানা গেছে, চীনের কাছে বিশেষ একটি অনুরোধও করবে নেপাল। সেটা হলো নেপালের সবগুলো প্রদেশে জরুরি উদ্ধার কেন্দ্র নির্মাণ। আমাদের নিজস্ব সূত্রে জানা গেছে, নেপাল ও চীনের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিও হতে পারে। এর ফলৈ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে। নেপালে তিনটি পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য রিজার্ভ ট্যাঙ্ক নির্মাণের স্থান এরইমধ্যে চুড়ান্ত হয়ে গেছে। এগুলো হলো বাত্তার, চাম্পি, নুয়াকোটের খাইনিতার এবং তানাহু জেলার ললিতপুর। প্রধানমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টা বিষ্ণু রিমাল বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী ওলি ২০১৫ সালে যখন বেইজিং সফরে গিয়েছিলেন, তখনকার সম্পাদিক চুক্তিগুলো বাস্তবায়নের উপরই বেশি মনোযোগ দেয়া হবে”।
আর্নিকো হাইওয়ে আধুনিকায়নের ব্যাপারে হয়তো সন্তুষ্ট হবে চীন। নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি ব্যক্তিগতভাবে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কে নেপালের জেলাগুলোর সাথে তিব্বত এবং সংলগ্ন নেপাল-চীন সীমান্তের যতটা পারা যায় সংযোগ স্থাপনের জন্য অনুরোধ জানাবেন। চীন যদি এ ব্যাপারে এগিয়ে আসে, তাহলে সেটা হবে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এর ফলে দক্ষিণের ‘গোলিয়াথের’ উপর থেকে নির্ভরতা কমবে নেপালের। সূত্র : এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।