Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কিয়েভের ফাইনালের ভূত রাশিয়ায়

| প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

প্রশ্নাতীতভাবেই মৌসুমের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় মোহাম্মদ সালাহ। বাঁ পায়ের খেল, গতি, গোল সব মিলে অসাধারণ ফুটবল উপহার দেয়ায় তাকে বর্তমান বিশ্বের সেরা দশ খেলোয়াড়ের তালিকায় সহজেই রাখা যায়। কিয়েভ থেকে অশ্রু নিয়ে ফিরলেও মিশরের বিশ্বকাপ দলে আছেন ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। স্পেনের শীর্ষ ক্রীড়া দৈনিক মার্কার সঙ্গে কথা বলেন সালাহ। তারই চৌম্বক অংশ তুলে ধরা হল দৈনিক ইনকিলাবের পাঠকদের জন্য-
প্রশ্ন : আপনার ইনজুরির কি খবর? প্রথম ম্যাচে কি খেলতে পারবেন?
সালাহ : এখন আমি ভালো আছি। উরুগুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলতে পারব বলে আশা করছি, তবে এটা নির্ভর করবে তখন আমি কেমন অনুভব করব এর উপর।
প্রশ্ন : কিয়েভের সেই ইনজুরি, যা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে মাঠ থেকে বের করে দিয়েছিল... এটাই কি আপনার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে মুহূর্ত?
সালাহ : হ্যাঁ, ঠিক তাই।
প্রশ্ন : শেষ পর্যন্ত আমরা আপনাকে রাশিয়ায় দেখতে যাচ্ছি, কিন্তু বিশ্বকাপে অংশ নেয়া নিয়ে কোন ভয় কি কখনো কাজ করেছে?
সালাহ : যখন মাঠের কথা ভাবি তখন শারিরীক ব্যাথা ও দশ্চিন্তা দুটোই এক সঙ্গে কাজ করে। রাগ এবং দুঃখও হয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালটা চালিয়ে যেতে না পারার জন্যে। এরপর আমি বিশ্বকাপে খেলতে না পারার সম্ভবনা নিয়েও ভাবি, আর এই ভাবনাটা খুবই বিধ্বংসী।
প্রশ্ন : সের্জিও রামোসের সঙ্গে আপনার পড়ে যাওয়া নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। আপনি কি মনে করেন এটা স্বাভাবিক ছিল?
সালাহ : আমি জানি না। হতেও পারে?
প্রশ্ন : কয়েক দিন আগে রামোস বলেছে : ‘আমি খেলাটা ভালোভাবে দেখেছি, সে প্রথমে আমার হাত আঁকড়ে ধরেছিল এবং আমি অন্য পাশ দিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম, তাছাড়া সে আঘাত পেয়েছে অন্য হাতে।’ এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?
সালাহ : এটা হাস্যকর।
প্রশ্ন : রামোস একথাও বলেছে যে, ‘যদি সে একটা ইনজেকশন নিয়ে নিত তাহলে দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে পারত’ আপনি কি এর সঙ্গে একমত?
সালাহ : (হাসি) আমার মন্তব্য হলো, এটা সাধারণ ব্যাপার যদি কেউ অপনাকে প্রথমে কাঁদায় এরপর হাসায়। সে আমাকে এ কথাও বলতে পারত, যদি আমি বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারতাম?
প্রশ্ন : সের্জিও একটা বার্তা পাঠিয়েছিল...
সালাহ : সে আমাকে একটা বার্তা পাঠিয়েছিল, কিন্তু আমি কখনোই তাকে বলিনি ‘ঠিক আছে’।
প্রশ্ন : চলুন বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলি। একজন ইউরোপিয়ানকে আপনি কিভাবে বোঝাবেন রাশিয়া বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া মিশরের জন্য কত বড় পাওয়া?
সালাহ : গত ২৮ বছরে এই প্রথম আমরা মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছি। এটা মোটেও স্বাভাবিক ছিল না কারণ আমরা সাতবার আফ্রিকার কাপ জিতেছি এবং আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম ২০০৬, ২০০৮ ও ২০১০ সালেও। আফ্রিকান কাপ জেতাটা আমাদের কাছে সাধারণ ছিল, কিন্তু বিশ্বকাপে সুযোগ পাচ্ছিলাম না। এবং এটা এমন কিছু যা আমরা সবসময় বলতাম ‘হ্যাঁ, আমাদের এটা করতেই হবে, আমাদের এটা করতেই হবে।’ দীর্ঘ দিন হলো আমরা এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। তাই এর অনুভূতি একটু আলাদা। স্প্যানিশদের কাছে এটা বিশ্বকাপ জয়ের সমান...
প্রশ্ন : বিশ্বকাপে মিশরের লক্ষ্য কি?
সালাহ : আমি মনে করি আমাদের দলটা অসাধারণ এবং অসাধারণ একজন কোচও (হেক্টর কুপার) আছে। আমরা পরবর্তি রাউন্ডে উঠতে চায় এবং ভালো করতে চায়।
প্রশ্ন : এবং আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য?
সালাহ : পরবর্তি রাউন্ডের জন্য কেবল দলকে সাহায্য করা ও গোল করা, তবে আসল লক্ষ্য প্রতিটা ম্যাচে দলকে সাহায্য করার চেষ্টা করা।
প্রশ্ন : আপনার জাতীয় দলের শক্তির জায়গা কোনটা?
সালাহ : এটা বলা কঠিন, তবে আমি মনে করি শক্তিটা আমাদের একত্বতায়। পূর্বের কোচ (শেখ গারিব) যেভাবে খেলাত তার চেয়ে হেক্টর কুপারের অধীনে এখন আমরা অন্যভাবে খেলি। দলীয়ভাবে আমরা শক্তিশালী। আমাদের সবার লক্ষ্য একই যে, প্রতি ম্যাচে দলকে সাহায্য করা, আর এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমি একটা শক্তিশালী দিকের কথা বলতে পারি, আর তা হলো-আমরা সবাই একসঙ্গে খেলি।
প্রশ্ন : হেক্টর কুপার কি আসলেই কঠিন যেমনটা শোনা যায়?
সালাহ : (হাসি) তার অসাধারণ অভিজ্ঞতা আছে। সে খুবই ভালো কোচ এবং আমার পারফর্ম্যান্স বাড়াতে সে সাহায্য করে। সে কঠিন নয়, আমি মনে করি সে ভালো একজন কোচ, ভালো একজন মানুষও। আমরা প্রত্যেকে একে অন্যকে সাহায্য করি।
প্রশ্ন : ফুটবলের কোন দিকটাতে কুপার আপনার উন্নতি ঘটিয়েছে?
সালাহ : কৌশলগতভাবে। নিজের প্রতি আস্থাভাজন হতে শিখিয়েছে। তবে এটা কিভাবে সহজে প্রয়োগ করে আক্রমণ করা যায় সেটাও সে শিখিয়েছে। আমি মনে করি তার অধীনে আমার উন্নতি হয়েছে।
প্রশ্ন : আপনি কি ভক্তদের কাছ থেকে কোন চাপ অনুভব করছেন, যারা খুব করে চাচ্ছে আপনি রাশিয়ায় ভালো করুন?
সালাহ : বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার জন্যে চাপ ছিল। অবশ্য অনেকে বলতে পারে, ঠিকাছে আমরা কোয়ালিফাই করেছি, এই পর্যন্তই। কিন্তু আমার কাছে ব্যাপারটা এমন নয়। আমরা ইতিহাস গড়তে চায়, ভিন্ন কিছু অর্জন করতে চায়। আমার মাথায় চাপটা হলো ভিন্ন কিছু অর্জন করা নিয়ে।
প্রশ্ন : স্পেনের বিপক্ষে খেলার ব্যাপারে কি অপনি আশাবাদী?
সালাহ : সম্ভবত, স্পেন অথবা পর্তুগাল। আশা করি। তাদের দলটা অসাধারণ এবং তাদের বিপক্ষে খেলাটা খুবই কঠিন। কিন্তু আপনি জানেন ভবিষ্যতে কি ঘটবে।
প্রশ্ন : স্পেন দলে আপনি কোন দিকটা সবচেয়ে বেশি পছন্ন করেন? কোন খেলোয়াড়কে নিয়ে কি আপনার কোন ভবিষ্যদ্বানী আছে?
সালাহ : আমি চেলসিতে (২০১৩-১৫) ডিয়াগো কস্তা ও আজপিলিকুয়েতার সঙ্গে খেলেছি, লিভারপুলে আলবার্তে মোনেরোর (বিশ্বকাপ দলে নেই) সঙ্গে, তারা শীর্ষ মানের খেলোয়াড়। আমি বিশেষ একজনের কথা বলতে পারব না তবে আমি কস্তাকে অনেক পছন্দ করি। যখন তার সঙ্গে খেলেছি এটা ছিল অসাধারণ। মানুষ হিসেবে সে সবার উপরে, এবং ফুটবলার হিসেবেও সে অনেক ভালো।
প্রশ্ন : বিশ্বকাপ নিয়ে আপনার প্রথম স্মৃতি কি?
সালাহ : আমার মনে হয় আমি ২০০২ সালের বিশ্বকাপকে স্বরণ করতে পারি। আমি আপনাকে নির্দিষ্ট কোন ম্যাচের কথা বলতে পারব না, তবে আমি আমাদের বাড়িতে বসে খেলা দেখেছিলাম। ব্রাজিল এটা জিতেছিল। ২-১? না, ২-০, দুটি গোলই করেছিলেন রোনালদো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ