নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : আবাহনীর ড্রাফট টেবিলের উপর নজর ছিল সবার। অন্য ১১টি টেবিলে যেখানে বিসিবি’র পরিচালক সংখ্যা যেখানে মাত্র ১ জন (প্রাইম ব্যাংকের তানজিল চৌধুরী), সেখানে আবাহনীর টেবিলে ছয়-ছয়জন পরিচালক। প্রাইম ব্যাংকের কোচের দায়িত্ব ছেড়ে আবাহনীর থিংক ট্যাংক খালেদ মেহমুদ সুজন ড্রাফট লিস্ট থেকে পছন্দের বিকল্প খেলোয়াড় খুঁজে বের করছেন, তাকে সহযোগিতা করছেন আকরাম খান, জালাল ইউনুস, ডা. আই এইচ মল্লিক, এম এ আউয়াল বুলু। তার উপর লটারীর ভাগ্যটাও পক্ষ নিয়েছে আবাহনীর।
প্লেয়ার্স কলিংয়ের প্রথম এবং শেষ ভাগ্যটা আবাহনীর। প্লেয়ার্স ড্রাফট টেবিল থেকে উঠে পট থেকে ৩ বার তুলেছেন কাগজÑ যার মধ্যে দু’বার আবাহনী ক্রিকেট কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস হেসেছেন বিজয়ের হাসি! পছন্দের কোটায় ‘এ’ গ্রেডের ক্রিকেটার লিটন দাস এবং ‘বি’ প্লাস গ্রেডের মোসাদ্দেক সৈকতকে রেখে দেয়ায় এমনিতেই শক্তিশালী দল গঠনের আভাসটা দিয়েছিল আবাহনী। লটারী ভাগ্যে আনুষ্ঠানিক কল এর প্রথম রাউন্ডে ‘বি’ গ্রেডের ক্রিকেটার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অল রাউন্ডার নাজমুল হোসেন শান্তকে ডেকে প্রতিদ্ব›দ্বী দলসমূহকে হতভম্ব করে দিয়েছে আবাহনী। দ্বিতীয় রাউন্ডে জাতীয় দলের পেস বোলার তাসকিন (‘এ’ গ্রেড), তৃতীয় কলে সাকলায়েন সজীব, চতুর্থ রাউন্ডে আবুল হাসান রাজু, পঞ্চম রাউন্ডে অভিষেক মিত্র, ৬ষ্ঠ রাউন্ডে জুবায়ের হোসেন লিখন, ৭ম রাউন্ডে তাপস বৈশ্য, ৮ম রাউন্ডে অমিতাভ নয়ন, ৯ম রাউন্ডে আবু বকর সিদ্দিকীকে পেয়েছে আবাহনী।
আইকন এবং ‘এ’ প্লাস গ্রেডের লটারী ভাগ্যটাও ছিল আবাহনীর পক্ষে। যে পর্বে এই ২ গ্রেডের ১৩ ক্রিকেটারের মধ্যে ২ জনকে পেয়েছে আবাহনী। শেয়ার ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বাদল মোহামেডান ছেড়ে নিজের কর্তৃত্বে দল গঠনের শুরু থেকেই সাকিব, তামীমকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিলেন। সেই সম্পত্তির হাত-বদল হয়েছে এবার। এর আগে একসঙ্গে দুই বন্ধু কখনো খেলেননি আবাহনীতে। এবার এই জুটিকে পেয়ে গেছে আবাহনী। ২০০৮-৯ ক্রিকেট মৌসুমে সাকিবের নেতৃত্বে আবাহনী হোঁচট খাওয়ায় বিশ্বসেরা এই অল রাউন্ডারের উপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল আবাহনী। ২০১২-১৩ মৌসুমে প্লেয়ার্স ড্রাফটে লটারী ভাগ্যে সাকিবকে পাওয়ার সুযোগ পর্যন্ত নেয়নি আবাহনী। তবে এবার আইকন ও ‘এ’ প্লাস গ্রেডের প্রথম কলিংয়ে লটারীতে চতুর্থ হয়ে তামীমকে পেয়েছে আবাহনী। এই ২ ক্যাটাগরীর তিন অবিক্রিত ক্রিকেটারকে নিয়ে পৃথক লটারীতে প্রথম হয়ে আবাহনী নিয়েছে সাকিবকে। লটারী ভাগ্যে এমন একটি দল পেয়ে ৫ বছর (তিন আসর) পর শিরোপার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে আবাহনী। দলটির ক্রিকেট কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সে স্বপ্নই দেখছেনÑ ‘বেশ ক’বছর আবাহনী শিরোপা থেকে দূরে ছিল। এবার প্লেয়ার্স বাই চয়েজে আমরা ভাল দল গড়ার সুযোগ পেয়েছি। আশা করছি এই দলটি নিয়ে শিরোপা জিততে পারব।
লটারী ভাগ্যটা প্রথম ক’রাউন্ডের কলিংয়ে মোহামেডানের পক্ষ না নিলেও শেষ ভাগ্যটা ছিল মোহামেডানের। দলের পুরোনো ২ ক্রিকেটার নাইম ইসলাম এবং আরিফুল হককে পেয়ে প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠানে দলের ব্যাটিংটা মোটামুটি সমৃদ্ধ করেছে মোহামেডান। পেয়েছে তারা সৈকত আলী, ইজাজ আহমেদকে। নাইম ইসলাম জুনিয়র, এনামুল জুনিয়র, হাবিবুর রহমান জনিÑ স্পিন কম্বিনেশনটাও হয়েছে দারুণ। লেট অর্ডারে নাজমুল মিলন (ছক্কা মিলন) কে পেলেও শুভাশিষ এবং নাজমুল হোসেন ছাড়া পেস অ্যাটাকে যে নেই কেউ। তবে আইকন ও ‘এ’ প্লাস গ্রেডে লটারীতে ৫ম হয়ে পছন্দের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে পাওয়াকে বড় করে দেখছেন দলটির প্লেয়ার্স ড্রাফট টেবিলে থাকা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান তপু। এই ২ ক্যাটাগরীর বোনাস কলিংয়ে লটারী ভাগ্যে তৃতীয় হয়ে মুস্তাফিজুরকে পেয়েও খুশি ধরে না ক্লাবটির ক্রিকেট সেক্রেটারী মাসুদুজ্জামানের। কারণ, সুপার লীগে উঠলে কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর যে হয়ে উঠবেন তুরুপের তাস। প্লেয়ার্স ড্রাফটে সেরা দল গুছিয়ে নিতে না পারলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন এই ক্লাব অফিসিয়ালÑ ‘আমরা ৮০ পার্সেন্ট দল গুছিয়ে নিয়েছি। বাকি ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছি।’
প্লেয়ার্স ড্রাফটে আবাহনীকে টেক্কা দিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। সর্বাধিক ১৫ ক্রিকেটার পেয়েছে তারা। অপরিহার্র্য তালিকার ২ ক্রিকেটার জহুরুল ইসলাম অমি ও মোশাররফ রুবেলকে রেখে দেয়ার পাশাপাশি তাইজুল, রাতুল, আবু হায়দার রনি, আলাউদ্দিন বাবু, মিজানুর রহমান, মেহেদী হাসান রানা, নাহিদুল ইসলাম, সাজ্জাদুল হক ও শাহীন হোসেনকে পেয়েছে। আইকন গ্রেডের কাউকে নেয়নি বিগ বাজেটের এই দলটি। ‘এ’ প্লাস গ্রেডের সৌম্য সরকার দলটির তারকা।
প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠানে তারুণ্য নির্ভর দল হাতে পেয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। আইকন ক্যাটাগরীর লটারীতে দ্বিতীয় হয়ে সাব্বির রহমান রুম্মানকে দলে ভিড়িয়েছে এই ব্যাংক ক্লাবটি। বর্তমানের রানার্স আপ প্রাইম দোলেশ্বর ২ পেস অল রাউন্ডার ফরহাদ রেজা ও জিয়াউর রহমানকে পেয়েছে, পেস শক্তির জানান দিচ্ছে তারা আল আমিনকে পেয়ে। লটারীতে তৃতীয় হয়েও আইকন গ্রেডের কাউকে নেয়নি এই দলটি, ‘এ’ প্লাস গ্রেডের নাসির হোসেনে রেখেছে আস্থা দলটি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিস্ময়কর পারফরমেন্স এবং মাঝামারিমানের দল নিয়ে বিপিএল ‘থ্রি’তে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পরও মাশরাফি বিন মতুর্জার কদর দৃশ্যমান হয়নি। গতকাল প্লেয়ার্স ড্রাফটে আইকন ও ‘এ’ প্লাস গ্রেডে ১১ নম্বর কলিংয়ে বিক্রি হয়েছেন তিনি কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে। তবে আইকন গ্রেডে কদরটা সবচেয়ে বেশি মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের। টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ভাগ্যবঞ্চিত বাংলাদেশ দলের ভিলেন হয়েও ক্লাব ক্রিকেটে কদরটা এবার সবচেয়ে বেশি এই মিডল অর্ডার কাম স্পিনারের। আইকন গ্রেডে লটারীতে নাম্বার ওয়ান শেখ জামাল বেছে নিয়েছে এই ক্রিকেটারকে। আইকন গ্রেডের ক্রিকেটার হাতের নাগালে পেয়েও সেই সুযোগ নেয়নি ভিক্টোরিয়া, নিয়েছে তারা ‘এ’ প্লাস গ্রেড থেকে মুমিনুলকে। ২টি ক্লাব আইকন ও ‘এ’ গ্রেড থেকে বিরত থাকায় শেষ কলিংয়ে এসে দল পেয়েছেন ‘এ’ প্লাস গ্রেডের ক্রিকেটার মিঠুন আলী (লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ)। লটারীতে ৯ম হওয়ায় আইকন গ্রেডের কাউকে পায়নি বিগ বাজেটের দল গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্স। পেয়েছে তারা ‘এ’ প্লাস গ্রেডের ক্রিকেটার এনামুল হক বিজয়কে। আইকন এবং ‘এ’ প্লাস গ্রেডের কোন ক্রিকেটারকে না নিয়ে আর্থিক দৈন্যতার জানান দিয়েছে কলাবাগান একাডেমী এবং সিসিএস। প্লেয়ার্স ড্রাফটে প্রথম কলিংয়ে ইলিয়াস সানি এবং অলক কাপালীকে পেয়েও লটারী ভাগ্যটা ছিল না তাদের পক্ষে। অলক কাপলী, মোহাম্মদ শরীফ, ফরহাদ হোসেন, নাসিরউদ্দিন ফারুক, সাজেদুল ইসলাম, দোলোয়ার হোসেনÑ ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে দাঁড়ানো এসব ক্রিকেটারের উপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে তাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।