Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চার জেলায় পুলিশের গুলিতে নিহত ৫

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০১৮, ২:২৫ পিএম

ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্রে, রংপুরের কাউনিয়ায়, বগুড়ার সদরে ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে পুলিশের গুলিতে পাঁচজন নিহত হওয়া খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহের দুই এবং রংপুর, বগুড়া ও গোপালগঞ্জ একজন করে নিহত হয়েছেন।
পুলিশের দাবি, ময়মনসিংহে, রংপুরে ও বগুড়ায় নিহত ব্যক্তি মাদক ব্যবসায়ী। আর গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে নিহত ব্যক্তি ডাকাত দলের সদস্য।
আজ মঙ্গলবার ভোরের দিকে এসব ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র রেলব্রিজের নিচ থেকে দুই মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরেই গুলিবিদ্ধ হয়ে তারা মারা গেছে বলে ধারনা করছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- ময়মনসিংহ শহরের পুরোহিতপাড়ার সুরুজ আলীর পুত্র মুন্না (২০) ও একই এলাকার ফয়জুদ্দিনের পুত্র ইদ্রিস আলী(৫০)।
পরিবারের দাবি, গত ১ জুন মধ্যরাতে মাসকান্দা সেবা মাদকাসক্তি সেন্টার থেকে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে এই দুইজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ময়মনসিংহ সদরের দক্ষিণ চর কালিবাড়ি এলাকার ব্রহ্মপুত্র রেলব্রিজের নিচ থেকে মুন্না ও ইদ্রিসের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের দুইজনের বুকেই গুলির চিহৃ রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরেই গুলিবিদ্ধ হয়ে তারা মারা গেছে।
তিনি আরও জানান, ইদ্রিস ও মুন্না তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক আইনে মামলা রয়েছে। মুন্না পুরোহিতপাড়ার মাদক সম্রাজ্ঞী হেলেনার পুত্র। তাদের লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।
মুন্নার বোন শরিফা আক্তার জানায়, গত ২২ মে মুন্না ও ইদ্রিস আলীকে চিকিৎসার জন্য শহরের মাসকান্দা সেবা মাদকাসক্তি সেন্টারে ভর্তি করা হয়। গত শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে দুইজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানায় মাদকাসক্তি সেন্টার কর্তৃপক্ষ। পরে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে তাদের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।

রংপুর : রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রবিউল ইসলাম নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে একদল মাদক ব্যবসায়ী হারাগাছ এলাকায় অবস্থান করছে । পরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করলে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে মাদক ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম নিহত হয় এবং অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।
কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুল আজিজ জানান, নিহত রবিউল ইসলাম একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে ১০টি মাদক আইনে মামলা রয়েছে। তার লাশ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

বগুড়া : বগুড়ায় মাদকবিরোধী অভিযানকালে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গুলিবিদ্ধ লিটন ওরফে রিগ্যান (৩২) মারা গেছেন।
আজ মঙ্গলবার ভোরে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে শহরের মাটিডালী বিমান মোড়ের পাশে কমার্স কলেজসংলগ্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন লিটন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশের দাবি, ফুলবাড়ী মধ্যপাড়া এলাকায় বসবাস করে মাদকের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন লিটন। ঘটনাস্থল থেকে ২০০ পিস ইয়াবা এবং ঘটনাস্থল থেকে দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
লিটনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা পাঁচটি মামলা রয়েছে। তিনি শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, একদল মাদক ব্যবসায়ী মাটিডালী বিমান মোড়ের পাশে কমার্স কলেজসংলগ্ন এলাকায় মাদক কেনাবেচা হচ্ছে- এমন খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে যায়।
এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে লিটন ও তার সহযোগীরা গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে গ্রেফতার করে।
পরে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ৩টার দিকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ভোরে চিকিৎসাধীন লিটন মারা যান।

গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে তোতা মন্ডল (৪৫) নামে এক ডাকাত নিহত হয়েছে। এ সময় গ্রেফতার করা হয়েছে আরও দুই ডাকাতকে।
আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ধুসর ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ডাকাত তোতা মন্ডল রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার চর বিকরা গ্রামের খবির উল্লাহ মন্ডলের ছেলে। গ্রেফতার দুই ডাকাত ডাকাত হলো- রাজবাড়ী জেলার শ্রীপুর গ্রামের কাশেম মন্ডলের ছেলে হারান মন্ডল (৩০) ও ঝিনাইদহ জেলার ৩নং পানির ট্যাংকিপাড়ার রজব আলীর ছেলে আবির হাসান (৩২)।
কাশিয়ানী থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান জানান, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ধুসর ব্রিজের কাছে রাস্তায় গাছ ফেলে ট্রাক ও বাসে ডাকাতি করছিল ৭-৮ সদস্যের ডাকাত দল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে ডাকাত সদস্যরা ভাটিয়াপাড়ার দিকে রেললাইন ধরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় জনতা তাদের পিছু নেয়। এসময় ডাকাত সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে থাকে।তাদের ছোড়া পাথরের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল আজিজুল আহত হয়। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়লে তোতা মন্ডলের পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় এবং তাকেসহ অন্য দুই ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। পরে খুলনা মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় তোতা মন্ডল।
তিনি আরও জানান, আহত ডাকাতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ময়না তদন্ত শে‌ষে নিহত ডাকাত সদ‌স্যের লাশ তার পরিবারের কা‌ছে হস্তান্তর করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্দুকযুদ্ধ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ