পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাদক নিয়ে সরকারের অভিযান কোথাও প্রশংসার দাবী রাখে, কোথাও প্রশ্নবিদ্ধ, ভয়াবহ মাদকের হাত থেকে মুক্ত করতে সকল মতের উর্ধ্বে থেকে, দেশ-প্রেম মনে প্রাণে ধারণ করে অভিযান করলেই নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব। সত্যিকার অপরাধীকে আইনের আওয়াতায় শাস্তি দিলে কারো দ্বিমতের সুযোগ থাকবে না। মাদক অভিযান নিয়ে সরকারী-বিরোধীদল রাজনীতি করবে এটিও কারো কাম্য হতে পারে না। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন সরাসরি বন্ধুকের মাধ্যমে নয় আইনী প্রক্রিয়ায় দ্রুত বিচার ট্রইবুনাল করে প্রমান সাপেক্ষে শাস্তি নিশ্চিত করা হলে নিয়ন্ত্রন সম্ভব। কারো উদ্বেগ, প্রশ্নবিদ্ধ ও থাকবে না। মাদক আইনের মামলা সঠিক ভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে না। যথাযত ভাবে মামলার রিপোর্ট ও সঠিক ভাবে স্বাক্ষ্য প্রমান প্রশ্নবিদ্ধ ছিল, যার কারণে বিচারকে বিব্রত অবস্থায় পড়তে হচ্ছে এবং আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায় আসামীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। কেউ-কেউ বলছেন, এমপি বদির প্রমান পাওয়া না গেলে নিহত বদিদের প্রমান কোথায়, কিভাবে পাওয়া গেলো তা জনসম্মুখে প্রকাশ, মিডিয়ার প্রচারের দাবী ওঠেছে, শুধু ০৮ মামলা আসামী ০৫ মামলার আসামী এটি বলে ক্রস ফায়ার করা সমর্থন যোগ্য নহে বলে অভিযোগ করছেন বিশিষ্ঠজনরা।
মাদক সেবী ও ব্যবসায়ী উভয়ে নিশ্চিত অপরাধী, আগের চেয়ে মাদকের ব্যাবহার, প্রচলন, অনেক বেড়েছে, আগের মাদকের সাথে বর্তমানে মাদকদ্রব্য ও কিছু ওষুধ যোগ হয়েছে। এসব ওষুধও মাদক দ্রব্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এসব মাদক দ্রব্য নিয়ে অসংখ্য অঘটন ঘটে চলছে। মাদক ব্যবসার টাকা নিয়ে খুনখুনিও হচ্ছে। কিন্তু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর আন্তরিক হয়ে ভূমিকা রাখলে হয়তো, আরো কিছু নিয়ন্ত্রনে থাকতো। মাদক নিয়ে পুলিশের কতিপয় অসাধু সদস্য অনেক অপব্যাবহার এবং চুক্তিভিত্তিক রাজনীতির হাতিয়ার, কখনো প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মানুষ ধরে পকেটে ইয়াবা ৫/১০ পিচ ইয়াবা দিয়ে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। অনেক নিরাপরাধ মানুষ, জীবনে কখনো ইয়াবা কি চোখেই দেখেনি এমন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে হয়রানীর অভিযোগ ওঠেছে। বর্তমানে অভিযানে এমন অপব্যাবহার হলে এটি হবে কঠিন অপরাধ। অভিযানের সচ্ছতায় স্ব-স্ব এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তি, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক, সরকারী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা গেলে কিছুটা স্বচ্ছতা আনা যাবে। অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হবে না। তবে এ অভিযানে কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য থাকবে না। তবেই এভয়াবহ ফেনসিডিল ও ইয়াবা থেকে যুব সমাজকে কিছুটা মুক্ত করা সম্ভব। রাজনৈতিক বিবেচনায় গ্রেফতার করা হলে এটি হবে আত্মঘাতি, এসব সুপারিশ বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনদের।
৮০ দশকে হেরোইন ছিলো ভয়াবহ মাদকের নাম। ৯০ এর পর ফিরে আসে নতুন মাদক ফেনসিডিল, বর্তমানে মরণ নেশা ইয়াবায় সয়লাব সারা দেশে। এটি এখন স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি ছাত্র-ছাত্রী, যুব-সমাজ, কতিপয় সরকারী, বেসরকারী চাকুরীজীবী, ডাক্তার, পুলিশ সদস্য সহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের কাছে জনপ্রিয় একটি মাদক হিসেবে পরিচিত। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, ইয়াবার প্রভাবে মানুষ এত হিংস্র হয়ে ওঠে যে, মানুষ খুন করা তার জন্য স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, মস্তিস্কের এক ধরনের উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়, কিন্তু স্থায়ী নয়, এরপর মানসিক অবসাদ, ঘুম হয়না। আচরনে ও চিন্তায় বৈকল্য দেখা দেয়। ন্যায়-অন্যায় লোপ পায়। অপরাধ প্রবণ হয়ে ওঠে।
এ বিষয়ে মনোচিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ মোহিত কামাল ইনকিলাবকে জানান, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী- বেসরকারী চাকুরীজীবী বিভিন্ন পেশার শিক্ষিত ব্যক্তিরা এবং উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা এখন ইয়াবায় আসক্ত, এটি মহামারি হয়ে দাড়িয়েছে, মেধা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এক গবেষণায় হেরোইন ও ফেনসিডিলে আসক্ত ২৮% আর ইয়াবায় ৫৮% লোক। অনেকে স্বাভাবিক ব্যবসায় ছেড়ে ইয়াবা ব্যাবসায় জড়িয়ে পড়ছে। কারণ অল্প পূঁজি ও বিনা পূঁজিতে বেশী লাভ হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে পরিবার, সমাজ, বাড়ছে নানা ঘটনা দূর্ঘটনা, চরম অবনতি হচ্ছে আইন শৃংখলা, তিনি আরো বলেন, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ, নিদ্রাহীনতা, খিঁচুনি, মানসিক সমস্যা, রক্তচাপ বৃদ্ধি, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন, হার্ট এ্যাটাক, ঘুমের ব্যাঘাত, কিডনী বিকল, ক্যান্সার, অস্বাস্তিকর মানসিক অবস্থা চিরস্থায়ী যৌন অক্ষমতা আক্রান্ত হয়ে থাকে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মেঘলা সরকার- ইনকিলাবকে জানান,ইয়াবার প্রভাব ভয়াবহ, ইয়াবা খেলে ৭ থেকে ১০ দিন জেগে থাকতে বাধ্য হয়। শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে, মেজাজ হয় খিটখিটে, অনবরত গলা, মূখ শুকিয়ে আসে, প্রচন্ড ঘাম ও অসহ্য গরম অনূভব হয়, ভিষণ ভাবে বাড়তে থাকে দেহের তাপমাত্রা, রক্তচাপ, নাড়ি ও শ্বাস-প্রশ্বাসের- গতি বাড়ীয়ে দেয়, মস্তিস্কের ভিতরের ছোট রক্তনালিগুলো ক্ষয় হতে থাকে। এ গুলো এক সময় ছিঁড়ে রক্ষক্ষরণ শুরু হয়, ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি কমে যায়।
অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক ইনকিলাব কে জানান, মাদক ব্যাবসায়ী ও মাদক সেবী উভয়ে অপরাধী। কিন্তু বন্দুক যুদ্ধ নৈতিকভাবে সমর্থন যোগ্য নয়। এতে কোন সন্দেহ নেই। সর্বত্রই এখন মাদকের হাট বসছে। সেবনকারীরা বসে নেই তারা হাতের নাগালেই পাচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, এই ইয়াবা, ফেনসিডিল নিয়ে অসংখ্য খুনা-খুনি, মারামারি হচ্ছে। তারপরও এদরেকে বন্দুকের মাধ্যমে নয় বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হোক।
এডভোকেট শেখ সফিক মাহমুদ পুষ্প ইনকিলাবকে বলেন, মাদক আইন আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। মাদকে মেধা নষ্ট হচ্ছে। মানুষের কর্মক্ষম হারিয়ে ফেলছে। পরিবারে চরম অশান্তি বিরাজ করছে, কোথাও স্বামী ছেড়ে দিয়েছে স্ত্রীকে কোথাও স্ত্রী ছেড়ে দিয়েছে স্বামীকে। কোথাও মা বাবাকে হত্যা করছে, মা বাবাকে মারদর করছে, অসংখ্য ঘরভাঙ্গার নজীর রয়েছে। খুনাখুনি লেগেই আছে। প্রতি গ্রামে একটি প্রতিরোদ সেল তৈরী করা প্রয়োজন। শুধু তাই নয় শহর-বন্দরে এসেল গঠন করা প্রয়োজন। পুলিশ এবং মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কাছে একক ভাবে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না। সকল পেশা ও মতের মানুষকে নিয়ে এ সেল গঠন করতে হবে। তাহলেই নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব, না হয় কিছুই হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।