নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মত দ্বিপক্ষীয় সিরিজে আজ মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ভারতের দেরাদুনে শুরু হওয়া তিন ম্যাচের এই সিরিজটি আফগানদের হোম সিরিজ। দেরাদুনের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায় শুরু হবে। দু’দলেই চায় জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করতে।
এর আগে কোন টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেনি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ইতোমধ্যে মাত্র একটি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে এ দুই দেশ। ২০১৬ সালে দেশের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় বাংলাদেশ।
প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখী হলেও ছোট ফরম্যাটে মাত্র একবার পরস্পরের মোকাবেলা করেছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ২০১৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে হেসেখেলে জয় পেয়েছিলো টাইগাররা। ওই ম্যাচে বোলারদের দাপটে আফগানদের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু আগের সেই আফগানিস্তান এখন আর নেই। চার বছরে তাদের খেলা অনেক বদলে গেছে। পাল্টে গেছে আফগান দলের চিত্রপট। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশী উন্নতি করা দল আফগানিস্তান। আইসিসির র্যাংকিং সেটাই প্রমাণ করে। আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলেছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটি। র্যাংকিংয়ে বর্তমানে যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান দশমস্থানে সেখানে অষ্টমস্থানে রয়েছে আফগানিস্তান। স্বাভাবিকভাবে পিছিয়ে থেকেই আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তাই জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দেশ ছাড়ার আগে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের প্রধান টার্গেট সিরিজ জয়। আমরা সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি। চেষ্টা করবো ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলার। তাই প্রথম ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা ভালো শুরু করতে পারি তাহলে পরের দু’ম্যাচে আমাদের জন্য কাজটা সহজ হবে। আমরা ভালো খেলার সর্বাত্মক চেষ্টা করবো এবং সিরিজ জয়ের জন্যই মাঠে নামবো।’
একই সুরে কথা বলেন বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন তিনি। মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জটা এভাবে দেখি, আমরা যখন খেলি সেটাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কিছুদিন আগেও আমাদের সামনে প্রশ্নবোধক একটা চিহ্ন ছিলো। এখন সেটা আমাদের সামনে থেকে সরে গেছে। ডে-বাই-ডে আমরা উন্নতি করছি। এই সিরিজটি আমাদের জন্য আরও একটি সুযোগ। এই সিরিজটি জিততে পারলে, পরের সব সিরিজে আমাদের সুযোগ তৈরি হবে।’
তবে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশের জন্য দুঃসংবাদ হচ্ছে-বাম পায়ের আঙ্গুলে চোট পেয়ে এই সিরিজ থেকে ছিটকে পড়েছেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। তার জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন আবুল হাসান রাজু। মুস্তাফিজের না থাকাটা দলের জন্য বড় ক্ষতি বলে মনে করেন সাকিব। তার কথায়, ‘ফিজ না থাকাতে স্বাভাবিকভাবেই সমস্যা হবে। আমাদের দলের সেরা টি- টোয়েন্টি বোলার সে। আমাদের জন্য কঠিন হবে। তবে এটা কিন্তু আরেকটা সুযোগ অন্য বোলারদের। যার জন্য সুযোগটি হবে সে যেনো ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে।’
আফগানদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিতে পারে বাংলাদেশ। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কার মাটিতে শেষ হওয়া নিদাহাস টি-টোয়েন্টি সিরিজে স্বাগতিকদের টপকে ফাইনাল খেলেছিল টাইগাররা। ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর শেষ বলে হার মানে বাংলাদেশ। পেছন ফিরে তাকালে ওই সিরিজ থেকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশ। তারপরও আসন্ন সিরিজে আফগানিস্তানকে এগিয়ে রাখছেন মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘নতুন দলগুলোর মধ্যে সবার চেয়ে এগিয়ে আফগানিস্তান। তারা ভালো পারফরমেন্স করছে। ক্রিকেটের জন্য নতুন দলের উন্নতি ভালো লক্ষণ। আমাদের জন্য এটা অন্যরকম চ্যালেঞ্জের। আমাদের সুনাম ধরে রাখতে এই সিরিজে জয়ের বিকল্প নেই। আশা করি ভালো ক্রিকেট খেলে, সিরিজ জিততে পারবো আমরা।’
র্যাংকিংয়ের পাশাপাশি শক্তির বিচারেও ছোট ফরম্যাটে কিছুটা এগিয়ে আফগানিস্তান। কিন্তু কাগজ-কলমের হিসাবটা অন্যভাবে ব্যাখা দেন মাহমুদুল্লাহ। তার কথা, ‘দুই দলের শক্তির জায়গা দুই রকম। আমাদের ব্যাটিং শক্তি এক রকম। অবশ্যই ব্যাটিং গভীরতা এবং অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আমরা এগিয়ে। আফগানিস্তানের টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স খুব ভালো। বোলিং অনেক বেশি ভালো। তারকা ক্রিকেটার আছে তাদেরও। ফলে দু’দলের শক্তির জায়গা দু’রকম। যদি পেস আক্রমণ দেখা হয়, তাদের চেয়ে আমাদের পেস আক্রমণ বেশি সমৃদ্ধ। যদি স্পিনের কথা বলা হয়, তবে সাকিব বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার। অপু ভালো করছে। তাদের স্পিন বিভাগে রশিদ-মুজিব আছে। যেটা আগে বললাম, আমাদের খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। এর বাইরে সহজ অন্য কোন সুযোগ নেই।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য তারুণ্য নির্ভর দল গঠন করেছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সিরিজের দলে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন ১৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান দারউইশ রসুলি। যুব বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করার কারনেই জাতীয় দলে ডাক পেলেন তিনি। এছাড়া ১৫ মাস পর আবারো দলে ফিরেছেন অফ স্পিনার নজিব তারাকাই। ঘরোয়া আসরে পারফরমেন্সের সুফল পেয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি স্পিন বিভাগে রয়েছেন রশিদ খান ও মুজিব-উর রহমান। সদ্য সমাপ্ত আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দারাবাদের হয়ে রশিদ ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলেন মুজিব। রশিদ ১৭ ম্যাচে ২১ উইকেট এবং মুজিব ১১ ম্যাচে ১৪ উইকেট নেন। তাই রশিদের সঙ্গে মুজিবের স্পিন আক্রমনের বিপক্ষে বড় ধরনের পরীক্ষাই দিতে হবে বাংলাদেশকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।