নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জিনেদিন জিদান যা করেছেন তা বিষ্ময় জাগানিয়া বটে। প্রথম কোচ হিসেবে টানা তৃতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের কথা সবার জানা। কিন্তু এরপরই যা করলেন সেই কাজটাও মাদ্রিদে থাকতে কয়েক দশক ধরে করার সুযোগ পায়নি কেউই। তা হলো- সেচ্ছায় পদ থেকে সরে দাঁড়ানো।
রিয়ালের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনা পেরেজের অধীনে কোন কোচ তিন বছরের মেয়াদ পার করতে পারেননি। তার আগেই হয়েছেন বরখাস্থ! ব্যতিক্রম কেবল জিদানের বেলায়। পেরেজ তাকে রাখতে চাইছিলেন। প্রত্যেক মাদ্রিদস্তিা তাকে রাখতে চাইছে, এই ব্যপারে সর্বৈক্য। কিন্তু জিদান হয়ত কারো করুণার অংশীদার হিসেবে ধাকতে চাননি। চাইবেনই বা কেন, কিংবদন্তিরা যে এমনি।
ফুটবলে একজন মানুষের যা কিছু অর্জন করা সম্ভব তার প্রায় সবকিছুই অর্জন করেছেন। বাকি কেবল জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ জয়। ভবিষ্যতে সেই সম্ভবনা যে খুব প্রবল তা বলা যেতেই পারে। এমনটা মনে করেন ফ্রান্স জাতীয় দলের বর্তমান কোচ দিদিয়ের দেশ্যমও। অন্যদের মত দেশ্যমও জিদানের এই সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছেন। অনেকের মতেই জিদানের এমন সিদ্ধান্তে আসন্ন বিশ্বকাপে বেশ চাপের মধ্যে থাকবেন ফ্রান্সের বর্তমান কোচ। তবে এমনটা মানতে রাজি নন তিনি, ‘জিদান ফ্রান্সের ভবিষ্যত কোচ হবেন। তবে সেটা যখন হবে তখন।’
২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি মৌসুমের মাঝ পথে রিয়াল মাদ্রিদের কোচের দায়িত্ব নেন জিদান। রিয়াল তখন কোপা থেকে ছিটকে গেছে, লিগে বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান দশের বেশি। দলে প্রচন্ড অন্তর্দ্ব›দ্ব। বরখাস্ত করা হয় রাফায়েল বেনিতেজকে। পেরেজ স্বরণাপন্ন হন জিদানে। জিদান কোচ হতে চাননি। মাত্র ছয় মাস আগে কোচিং ব্যাজ নিয়ে রিয়াল যুব দলের দায়িত্ব নেওয়া জিদান তখনও কোচ হিসেবে আনকোরা। অনেক ফুটবল বোদ্ধাই তখন জিদানের দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়েছিলেন। অনিচ্ছা সত্তে¡ও দায়িত্ব নেন জিদান। পেরেজের তখনো অন্য কোচ নেওয়ার পরিকল্পনা অটুট। মৌসুম শেষে লিগে ১৬ পয়েন্টের ব্যবধান জিদান নিয়ে এলেন ১ এ! আগের কোচ একটু ভাল করে গেলে সেবারই লিগ জিতে নিতেন হয়তো। জেতালেন চ্যাম্পিয়নস লিগ! পেরেজের নতুন কোচ আনার সাধ মিটে গেল। এরপরের ইতিহাসটাও সবার জানা।
তবে তার এমন বিদায়ে অন্যদের মত হতাশ হয়েছেন দেশ্যমও। ফ্রান্সের ভবিষ্যত কোচ হিসেবে জিদানকে দেখতে পাচ্ছেন তিনি। দেশ্যম বলেন, ‘এই মুহূর্তে সে বিশ্রাম উপভোগ করতে চায় এবং পরিবারের সাথে সময় কাটাবে। তবে এক দিন জাতীয় দলের কোচ হবে সে। আমি বলতে পারছি না কখন, কিন্তু আমার মতে এটিই যৌক্তিক।’ ফ্রান্সের অধিনায়ক হিসেবে ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ ও ২০০০ ইউরো আসরের শিরোপা জিতেন দেশ্যম। তার দলের গুরুত্বপূর্ণ মিডফিল্ডার ছিলেন জিদান।
দেশ্যম বলেন, জিদানের সরে যাওয়ার সিদ্বান্তে ফ্রান্সের বিশ্বকাপ অভিযানে তার পরিকল্পনায় কোন প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন, ‘আমি এটি নিয়ে চিন্তা করছি না। আমি দল ও দলের খেলোয়াড়দের উপর সম্পূর্ণভাবে মনোনিবেশ ও দৃষ্টি রেখেছি।’
আসন্ন বিশ্বকাপে ব্রাজিল, জার্মানি, স্পেন আর্জেন্টিনার সঙ্গে ফেভারিট দল হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছে স্পেনের নামও।
পরিসংখ্যানের পাতায় জিনেদিন জিদান
জন্ম : ২৩ জুন, ১৯৭২ (বয়স- ৪৫ বছর)
জন্মস্থান : মার্শেই, ফ্রান্স, জাতীয়তা : ফরাসি
উচ্চতা : ৬ ফুট. ওজন : ৭৮ কিলোগ্রাম
ফুটবল ক্যারিয়ার
পজিশন : মিডফিল্ডার, ক্লাব : ক্যানেস (১৯৮৯-৯২), বোর্দো (১৯৯২-৯৬), জুভেন্টাস (১৯৯৬-০১), রিয়াল মাদ্রিদ (২০০১-০৬)। লিগে অভিষেক : ২০ মে ১৯৮৯, নৎসে বনাম ক্যানেস (১-১)। লিগ রেকর্ড : ৫০৬ ম্যাচে ৯৫ গোল
ইউরোপিয়ান ক্লাব প্রতিযোগিতা : ১০৮ ম্যাচ (চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৮২, উয়েফা কাপে ২৬), গোল : ১৮টি।
আন্তর্জাতিক অভিষেক : ১৭ আগস্ট ১৯৯৪, চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে (২-২)। আন্তর্জাতিক রেকর্ড : ফ্রান্স- ১০৮ ম্যাচ (১০১ ম্যাচে শুরু থেকে, ৭ ম্যাচে বদলি হিসেবে, ২৫ ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে) আন্তর্জাতিক গোল : ৩১টি। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ : ০৯ জুলাই ০৬, ফ্রান্স-ইতালি (বিশ্বকাপ ফাইনাল), অতিরিক্ত সময়ে ১-১, পেনাল্টিতে জয় ইতালির, ১১০ মিনিটে লাল কার্ড নিয়ে মাঠ ছাড়েন জিদান। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক গোল : ০৯ জুলাই ২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্স-ইতালি ম্যাচে, ৭ মিনিট পর পেনাল্টিতে।
খেলোয়াড় হিসেবে ট্রফি জয়
বিশ্বকাপ : ১৯৯৮, ইউরো : ২০০০, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ : ২০০২, ইন্টারকন্টিনেনটাল কাপ : ১৯৯৬, ২০০২, ইউরোপিয়ান সুপার কাপ : ১৯৯৬, ২০০২, ইতালিয়ান সিরি ‘এ’ : ১৯৯৭, ১৯৯৮, ইতালিয়ান সুপার কাপ : ১৯৯৭, স্প্যানিশ লিগা : ২০০৩,
স্প্যানিশ সুপার কাপ : ২০০১, ২০০৩
ব্যক্তিগত অ্যাওয়ার্ড
ব্যালন ডি’অর : ১৯৯৮, ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় : ১৯৯৮, ২০০০, ২০০৩, উয়েফা ক্লাব বর্ষসেরা খেলোয়াড় : ২০০২, ফিফা বিশ্বকাপ গোল্ডেন বল : ২০০৬
কোচিং ক্যারিয়ার
ক্লাব : রিয়াল মাদ্রিদ কাস্টিলা (২০১৪-২০১৬), রিয়াল মাদ্রদ (২০১৬-২০১৮)
কোচ হিসেবে ট্রফি জয়
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ : ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ইউরোপিয়ান সুপার কাপ : ২০১৬, ২০১৭
স্প্যানিশ লিগা : ২০১৭, স্প্যানিশ সুপার কাপ : ২০১৭, ক্লাব বিশ্বকাপ : ২০১৬, ২০১৭।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।