রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মাগুরার শালিখা উপজেলার ধান ব্যবসায় নিয়ন্ত্রন করছে একটি সিন্ডিকেট। তাদের কাছে কৃষকরা জিম্মি হয়ে পড়ায় প্রকৃত কৃষকরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত। পাশবর্তী জেলার হাট বাজারে ৯৫০ থেকে ১৩০০ টাকা করে প্রতিমন ধান বিক্রী হচ্ছে। সেখানে ধান সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে শালিখা উপজেলার হাট বাজার গুলোতে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা করে ধান বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষকরা। উপজেলার আড়পাড়া ও তালখড়িসহ উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি হাট-বাজারে স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীরা একটি সিন্ডিকেট করে বাইরের ব্যাপারীদের বাজারে ঢুকতে দিচ্ছেনা। ফলে স্থানীয় ব্যাপারীরা ধানের মূল্য কমিয়ে দিয়ে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করছেন।
অন্যদিকে স্থানীয় ব্যাপারীরা কৃষকদের কাছ থেকে স্বল্প মূল্যে ধান ক্রয় করে বাইরের ব্যাপারীদের কাছে তারা চড়াও মূল্যে বিক্রয় করছেন। ফলে যশোরের খাজুরা, বাঘারপাড়া ও মাগুরা সদর উপজেলার বিভিনড়ব হাট বাজারে নসিমন করিমন যোগে প্রকৃত মূল্যে ধান বিক্রয় করতে হচ্ছে কৃষকদের। এতে করে একদিকে এক মন ধান বিক্রী করতে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে এক মন ধান বিক্রী করতে অতিরিক্ত শ্রম ব্যয় করতে হচ্ছে । আড়পাড়াসহ আশে পাশের হাটে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, গত কয়েক দিনের কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে ধানের ফলনও খুব একটা ভাল হয়নি। এরপরও যদি হাটে ধান বিক্রয় করতে এসে ব্যাবসায়ীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয় তাহলে আমরা কৃষকরা কিভাবে ফসল উৎপাদন করবো বুঝতে পারছিনা। এক মন ধান উৎপাদন করতে যে পরিমান খরচ হয় সেই পরিমানে ধানের মূল্য পাচ্ছিনা। কি কারনে ধানের দাম কম পাচ্ছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, স্থানী ধানের সকল ব্যাপারীরা মিলে একটি সিন্ডিকেট তৈরী করেছে। যাতে বাইরের ব্যাপারীরা কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করতে না পারে। ফলে স্থানীয় ব্যাপারীরা ধানের যে মূল্য নির্ধান করছে ঠিক দামে আমাদের ধান বিক্রয় করতে হচ্ছে। যা থেকে ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। স্থানীয় ব্যাপারীরা ধানের মন প্রতি কত টাকা দরে ক্রয় করছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, বাসমতি ৯৫০ থেকে ১০০০, জিরা মিনিকেট ৮৫০ থেকে ৯০০, আঠাস ৭০০ থেকে ৮০০, সুবললতা, ৬৫০ থেকে ৭০০, এসএল এইড ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। অথচ মাগুরার নতুন বাজারে জিরামিনিকেট ১২০০ থেকে ১২৫০, বাসমতি ১২৫০ থেকে ১৩০০, আঠাস ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা দরে বিক্রী হতে দেখা যায়। উপজেলার তালখড়ী বাজারে গিয়ে কথা হয় সাতনাফুরিয়া গ্রামের চাষি মইনুল ইসলামের সাথে তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি বাজারে বাইরের কোন ব্যবসায়ী এসে ধান ক্রμয় করতে পারছেনা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এখানে ধান ক্রয় করে অন্যত্র বিক্রী করে। দেবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও শংকর কুমার বিশ্বাস নামের আরো দুই কৃষক জানান, আজ হাটে ধান ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা করে বিক্রী হচ্ছে। এভাবে ধান বিক্রী করলে কৃষক বাঁচবেনা। অচিরেই এই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে কৃষককুল বাঁচবে। এব্যাপারে আড়পাড়া হাটের ধান ব্যবসায়ী ভাবনহাটি গ্রামের হিমাংশু সাহ ও শতখালী গ্রামের গোলাম নবীসহ আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী যারা সিন্ডিকেট ব্যবসার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাইরের ব্যাপারী যদি ধান ক্রয় করতে না আসে তা হলে আমরা কি করতে পারি। বিষয়টি নিয়ে আমাদের ব্যবসায়ীদের কোন হাত নেই। আড়পাড়া বাজার বনিক সমিতির সভাপতি মোঃ আলমোর্তজা মোল্যার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি জানেননা। তবে মনিটারিং করে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে তাহলে বাইরের ব্যাপারী বাজারে আশুক, কৃষক তার ন্যায্য মূল্য পাক তিনি তাই চান। আইন অধিকার বাস্তবায়ন ফোরামের উপদেষ্টা গবেষক শ্রী ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, এক শ্রেণীর লোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে ধান ক্রয় করবে। আর কৃষক তার ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হবে এটা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। এদের বিরুদ্ধে কঠর শাস্তির দাবি জানায়। এব্যপারে উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মিনা খানমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধান ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করেছেন কিনা তার জানা নেই। তবে যদি এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।