পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের অর্থনীতি ও সমাজের সুষ্ঠু অগ্রগতির লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা বাঞ্ছনীয়। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য বিরাজমান এবং তা প্রকট অবস্থায় থাকলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট এমন হওয়া উচিত যেন তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বৈষম্যহীন অর্থনীতি ও অসাম্প্রদায়িক মানস কাঠামো বিনির্মাণে সহায়ক হয়। গত ৪০ বছরে অর্থনীতি ও রাজনীতির ও দুর্বৃত্তায়ন এবং গরীব ও মধ্যবিত্তের স্বার্থবিরোধী রাজনৈতিক-অর্থনীতি নির্ভর উন্নয়ন ধারা গ্রামীণ শহরে শ্রেণি কাঠামো বদলে দিয়েছে। একদিকে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের অবস্থা হয়েছে বেহাল, আর অন্যদিকে অঢেল বিত্ত-সম্পদ ও ক্ষমতা পুঞ্জীভূত হয়েছে গোটাকয়েক ধনীক শ্রেণির হাতে। গতকাল (শনিবার) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বাজেট প্রস্তাবনা ২০১৮-১৯’ নিয়ে চট্টগ্রাম চ্যাপ্টার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতৃবৃন্দ একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতি সমিতি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের কার্যনির্বাহী সদস্য প্রফেসর ড. জ্যোতি প্রকাশ দত্ত লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধনী-দরিদ্রের ক্রমবর্ধমান বৈষম্য- বড় দুর্ভাবনার বিষয়। গ্রামে দরিদ্র শ্রেণির মানুষের সংখ্যা শহরের তুলনায় অনেকগুণ বেশি। দরিদ্র মানুষের ৮২ শতাংশ গ্রামে এবং ১৫ শতাংশ শহরে বাস করেন। গত ৩০ বছরে মোট জনসংখ্যা বেড়েছে ৬০ শতাংশ। অথচ দরিদ্র-বিত্তহীন জনসংখ্যা বেড়েছে ৭৬ শতাংশ। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, মানুষের প্রকৃত আয় হ্রাস, কর্মসংস্থানের অভাব, দুর্নীতি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জীবনকে দুর্বিষহ করছে। দুঃশাসনের মাত্রাতিরিক্ততা সুশাসনকে কাগুজে বুলিতে রূপান্তর করছে। বিচারহীনতার সংষ্কৃতি নিয়মে রূপান্তরিত হচ্ছে। গুটিকয়েক ‘রেন্ট-সিকার’ অধীনস্থ করে ফেলেছে রাষ্ট্র-সরকার-রাজনীতিকে। তিনি বলেন, বিশ্বায়নের আওতায় বিশ্ববাণিজ্য, বৈশ্বিক সম্পদের চলাচল, পারস্পরিক বিশ্ব-নির্ভরতাকে অনিবার্য করে তুলেছে। কিন্তু বিশ্বায়নের আওতায় দারিদ্র-বৈষম্য যেমন ক্রমবর্ধমান তেমনি জাতীয় পর্যায়ে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। এ অবস্থায় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা এবং টেকসই ও ন্যায়ভিত্তিক আর্থ-সামাকি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা প্রায় অসম্ভব এক প্রস্তাবনা। সমষ্টিক অর্থনীতির অনেক মানদন্ডে, যেমন জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার, মূল্যস্ফীতি এসবের নিরীখে দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন সত্তে¡ও আমাদের উন্নয়ন রেকর্ড খারাপ নয়। আর সামাজিক উন্নয়নের বেশকিছু মানদন্ডে যেমন শিক্ষার হার, জীবনের আয়ু, নারীর ক্ষমতায়ন আমাদের অবস্থা প্রতিবেশী অনেকের চেয়ে ভাল।
ড. জ্যোতি প্রকাশ বলেন, আমাদের বাজেট প্রস্তাবনা অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সকারের মোট রাজস্ব আয় হবে ৯ লাখ ৯০ হাজার ৮২০ কোটি টাকা যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রদত্ত বাজেটের তুলনায় ৩.৪ গুণ বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এ বৃদ্ধি হবে প্রধানত তিনটি কারণে ঃ আয়ের বিভিন্ন উৎসে যৌক্তিক বৃদ্ধি যেমন, আয় ও মুনাফার উপরে কর, আমদানি শুল্ক, মাদক শুল্ক, যানবাহন কর, ভূমি রাজস্ব, লভ্যাংশ ও মুনাফা, সুদ, জরিমানা, দন্ড-বাজেয়াপ্তকরণ, টোল ও লেভী, সরকারের সম্পদ বিক্রয়। বিভিন্ন উৎসে এ বৃদ্ধির পরিমাণ হবে এখনকার তুলনায় দ্বিগুণ থেকে ১৬৩ গুণ পর্যন্ত। কোন কোন উৎসের ক্ষেত্রে কর হার পরিবর্তন না করে শুধুমাত্র কর আদায় প্রক্রিয়া জোরদার করে যেমন, মূল্য সংযোজন কর ও আবগারী শুল্ক। প্রস্তাবিত নতুন উৎসসমূহ থেকে রাজস্ব প্রাপ্তি। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটকে শুধু উন্নয়নমুখী বলাই যথেষ্ট নয়। খাতওয়ারি বরাদ্দ কাঠামো যা তাতে বলতেই হবে যে প্রস্তাবিত বরাদ্দ কাঠামো দারিদ্র্য- বৈষম্য নিরসনমুখী, উৎপাদনমুখী, উপাদানশীলতা বৃদ্ধিমুখী, শিল্পায়নমুখী, কৃষির বিকাশমুখী, কর্মসংস্থান বৃদ্ধিমুখী ও মানবসম্পদ ও মানবপুঁজি সৃষ্টি ও তার বিকাশ ত্বরান্বয়নমুখী এবং প্রযুক্তি-বিকাশমুখী।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. আবুল হোসাইন, মোরশেদুল আলম কাদেরী, অধ্যাপক এ কে এম ইছমাইল, সহ-সভাপতি অর্থনীতি সমিতি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টার মোঃ খোরশেদ আলম, সুজিত কুমার দত্ত, মনসুর এম ওয়াই চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম স্বপন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।