বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষীপুরের মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চলের হাজার হাজার জেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়িবাঁধসহ অন্যের জমিতে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এদের ৯০ ভাগ জেলে পরিবারই ভূমিহীন হলেও বিভিন্ন চরে ৫ হাজার একর খাস জমি প্রভাশালীরা ব্যক্তিরা বিভিন্ন কৌশলে দখলে রেখেছেন। প্রকৃত জেলে ভূমিহীনদের খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের বিধান থাকলেও বাস্তবে কমসংখ্যক ভূমিহীনই সরকারের এ সুবিধা ভোগ করছে। খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার ক্ষেত্রেও চলছে চরম অব্যবস্থাপনা। ভূমিহীন এ সকল জেলেরা নদী-সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে এবং বেড়িবাঁধের দু’পাশ ঘেঁষে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে মানবেতর জীবন পার করছে। সুপেয় পানি, স্যানেটেশন, বিদ্যুৎ ও পয়নিষ্কাশনের সু-ব্যবস্থা থেকে তারা বঞ্চিত। স্থায়ী বাড়ী-ঘর না থাকায় তাদের সন্তানদের লেখাপড়াসহ ভবিষ্যৎ জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে তাদের সন্তানরা জেলে পেশায় নাম লিখতে হচ্ছে। জন্মনিবন্ধন করতে না পারায় সরকারের বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভূমিহীন এসব পরিবার।
সূত্র জানা যায়, রায়পুর উপজেলার কানিবগারচরে প্রায় ৪ হাজার একরসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে সরকারের খাস খতিয়ানভূক্ত প্রায় ৫ হাজার একর জমি রয়েছে। অধিকাংশ খাস জমি জনপ্রতিনিধিসহ একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি বিভিন্ন কৌশলে অবৈধ ভাবে দখল করে আছে। প্রকৃত জেলে ভূমিহীনদের খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের বিধান থাকলেও বাস্তবে কমসংখ্যক ভূমিহীনই সরকারের এ সুবিধা ভোগ করছেন। যাদের খাস জমি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই তারাই খাস জমি নিয়ে দখল করে রেখেছেন। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দখলে থাকা খাস জমিগুলো দখল মুক্ত করে জেলেদের মাঝে বন্দোবস্ত দেওয়া হলে ভূমিহীন জেলেদের বাসস্থান সঙ্কট কেটে যাবে এবং হাঁস-মুরগি-গরু-ছাগল পালনসহ ঋতুকালীন শস্য উৎপাদনের মাধ্যমে পরিবারগুলোর অভাব দূর হবে এবং তাদের ছেলে-মেয়েদের মাঝে শিক্ষার হারও বেড়ে যাবে বলে স্থানীয়রা জানায়।
চরাঞ্চলে গিয়ে ভূমিহীন জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মেঘনা নদী এলাকার মাছ ধরার সাথে জড়িত থাকায় নদী ভাঙ্গনের কারণে জায়গা-জমি হারিয়ে এবং মহাজনদের দাদনের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে তারা সর্বসান্ত হচ্ছে। বসবাসের জন্য জমি কিনার সাধ থাকলেও বছরের পর বছর অর্থ কষ্টে থাকায় তাদের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য জেলেরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার আবেদন-নিবেদন করেও এখন পর্যন্ত কোন খাস জমি বন্দোবস্ত পায়নি। নিজেদের জায়গা-জমির অভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়িবাঁধসহ অন্যের জমিতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
মৎস্যজীবী জেলে ফেডারেশনের জেলা সভাপতি মোস্তফা বেপারী জানান, ভূমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য প্রান্তিক জেলে জনগোষ্টীর পক্ষ হতে ভূমি মন্ত্রনালয়ে আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপেক্ষিতে ভূমিহীন জেলে পরিবারদের মাঝে সরকারী খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও ভূমি মন্ত্রনালয় থেকে একাধিকবার লক্ষীপুর জেলা প্রসাশককে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়। পরে জেলা প্রশাসকও একাধিবার উপজেরা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু আজও জেলেরা কোন ভূমি বন্দোবস্ত পাচ্ছেন না। উল্টো জেলেদের প্রায় সময় ডেকে আবেদন যাছাই-বাছাইয়ের নামে হয়রানি করা হচ্ছে। বসবাসের নিজস্ব জায়গা না থাকায় অনেকেই তাদের বংশানুক্রমিক মাছ ধরার পেশা ছেড়ে এলাকার বাহিরে চলে গেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিল্পী রানী রায় বলেন,স্থানীয় জেলেসহ ভাসমান ভূমিহীন জেলে পরিবারকে আশ্রায়ন শ্রকল্পের মাধ্যমে বাসস্থান দেওয়া হচ্ছে। ভূমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য জেলেদের আবেদন যাছাই-বাছাই করা চুড়ান্ত করা কাজও চলছে। প্রকৃত জেলেদের মাঝেই সরকারী খাস-জমি দেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।