নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইউরোপিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন কারা? উত্তরে নিঃসন্দেহে চলে আসবে রিয়াল মাদ্রিদের নাম। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অসাধারণ সব অর্জনগুলোই তাদের হয়ে কথা বলে। ক্ষণ গণনার পালা শেষে আসরের আরো একটি অর্জনের দ্বারপ্রান্তে বার্নাব্যুর দল। কিয়েভের ফাইনালে আজ জিতলেই মাথায় উঠবে হ্যাটট্রিক শিরোপার মুকুট! লস বø্যাঙ্কোসদের উচ্চাভিলাসী এমন স্বপ্নে বাঁধা প্রিমিয়ার লিগের দল লিভারপুল।
একদিকে টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল, অন্যদিকে ইয়ুর্গুন ক্লপের অধীনে বদলের ডাক দেওয়া লিভারপুল। একদিকে টুর্নামেন্টের ইতিহাসের নায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, অন্যদিকে নবযুগর ঝঞ্ঝা হাতে অপ্রতিরোধ্য মোহাম্মাদ সলাহ। একদিকে বলের দখল রেখে গোছালো আক্রমণের মন্ত্রে শানিত শুভ্র বাহিনী, অন্যদিকে মুহূর্তের পাল্টা আক্রমণে প্রতিপক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ায় সিদ্ধহস্ত লাল একাদশ। কিয়েভে তাই যে উত্তেজনায় ঠাসা এক ফাইনালই অপেক্ষা করছে একথা বলায় যায়।
বিগত ৫ বছরের মধ্যে চারবার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। আর এই অর্জনে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ইতোমধ্যে ইউরোপিয়ান ফুটবলে ১২১ গোল করে নিজেকে তুলেছেন অনন্য উচ্চতায়। টুর্নামেন্টের সাম্প্রতিক ফাইনালে রিয়াল তরকাকে যেমন থামাতে পারেনি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, তেমনি থামাতে পারেনি জুভেন্টাসও। পর্তুগিজ তারকার সামনে এবারের চ্যালেঞ্জ ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল।
তবে আগের দলগুলোর সঙ্গে এই লিভারপুলকে মেলানো যাবে না। আক্রমণাত্মক মেজাজ নিয়েই এবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছেছে দলটি। সালাহ-ফিরমিনহো-মানেদের আক্রমণের সামনে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে প্রতিপক্ষের রক্ষণ। এখন পর্যন্ত আসরে তাদের করা ৪৬ গোল সেই সাক্ষই দেয়। যে কারণে ইউক্রেনের রাজধানী অবস্থিত অলিম্পিক স্টেডিয়ামের ফাইনালটি চরম আক্রমন ও প্রতিআক্রমনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানেও সেটা জানেন। যে কারণে নিজেদের ঐতিহ্য তাদেরকে অনুপ্রাণিত করলেও প্রতিপক্ষকে ঠিকই সমীহ করছেন তিনি , ‘আমরা জানি এটা কঠিন একটা ম্যাচ হতে চলেছে। আমরা ইতোমধ্যে ইতিহাস গড়েছি। এখন শিরোপা জয়ের মাধ্যমে সেটিকে আরো সমৃদ্ধ করতে চাই। তবে তারা অসাধারণ মৌসুম কাটিয়েছে। শীর্ষ তিন আক্রমণভাগ তাদেরকে অনেক শক্তিশালী করেছে।’ উল্লেখ্য, লিভারপুলের আক্রমণভাগের তিন তারকা সালাহ (১০), ফিরমিনহো (১০) ও মানের (৯) মিলিত গোল ২৯টি।
তবে ইতিহাস আর ঐতিহ্য মেনে রিয়ালকেই এগিয়ে রাখছেন লিভারপুল কোচ। নিজেদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কোচ ক্লপ বলেন,‘ আমরা যদি এবার শিরোপা জয় করতে পারি তাহলে সেটি হবে একটি ব্যতিক্রমী ব্যাপার। এটি হবে অসাধারণ ঘটনা।’ কোচ হিসেবে বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার অভিজ্ঞতা আছে জার্মান কোচের। কিন্তু এর পুরোটাই তিক্ততায় ভরা। ৫টি বড় টুর্নামেন্টের সবকটিতেই পরাজয়কেই সঙ্গী করেছেন ক্লপ। এর মধ্যে ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হারটিও রয়েছে। তালিকায় আরো রয়েছে ২০১৬ সালের ইউরোপা লিগে লিভারপুলের হয়ে সেভিয়ার কাছে হার। অভিজ্ঞতার কথা বললে কিয়েভে লিভারপুলকে আমলেই নেয়া যাবে না। ক্লাবের কোন খেলোয়াড়ের নেই অতীতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফাইনালে খেলার অভিজ্ঞতা। তবে ক্লপ এটাও জানেন, তাদের অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই জিনেদিন জিদানের দলের।
দলে সালাহর ভূমিকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তাকে মোকাবেলা করতে হবে রিয়াল মাদ্রিদের লেফট ব্যাক মার্সেলোর। এদিকে জিদান যদি তার আক্রমণভাগে গ্যারেথ বেলকেও অন্তর্ভুক্ত রাখেন তাহলে সঙ্গী কাসেমিরো, টনি ক্রুস এবং লুকা মড্রিচকে থামানোর জন্য লিভারপুলের মিডফিল্ড কি করবে সেটিই দেখার বিষয়। আর রোনালদোকে থামাতে ভার্জিল ভন ডিকদের কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে।
এই রিয়ালের বিশেষত্ব সম্পর্কে অজনা নয় লিভারপুল অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনের, ‘আসাধারণ সব খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে রিয়াল আসাধারণ একটি দল। তবে আমাদেরও অসাধারণ কিছু খেলোয়াড় আছে। সাধ্যমত খেলতে পারলে আমরাও জিততে পারি। আমরা শিরোপা জিততে চাই নিজেদের জন্যে এবং সমর্থকদের জন্যে।’
# চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১২বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ, লিভারপুল জিতেছে ৫বার, সর্বশেষটি ২০০৫ সালে।
# ইউরোপিয়ান ফুটবলে ষষ্ঠবারের মত মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দু’দল। আগের পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে রিভারপুল, বাকি দুটিতে রিয়াল।
# ১৯৮১ সালে টুর্নামেন্টের ফাইনালে শেষবার মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। ডিফেন্ডার অ্যালেন কেনেডির করা ৮২তম মিনিটের গোলে সেবার রিয়ালকে হারিয়েছিল রেড ডেভিলরা। এখন পর্যন্ত ওটাই টুর্নামেন্টের ফাইনালে রিয়ালের শেষ পরাজয়।
# চলতি আসরে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত গোল রোনালদোর, ১৫টি। ১২১ গোল নিয়ে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতায় তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।