Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লা বারের সেক্রেটারি কক্ষে শিক্ষানবীশ নারী আইনজীবী লাঞ্ছিত

কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির (কুমিল্লা বার) সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে শিক্ষানবীশ নারী আইনজীবী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় আদালত জুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠেছে। সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফার নির্দেশে সমিতির এনরোলমেন্ট সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু তাহের সালমা আক্তার নামের শিক্ষানবীশ আইনজীবীকে গালমন্দ ও লাঞ্ছিত করার পর তার শরীরে টাউট লিখা কাগজ লাগিয়ে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। এঘটনায় আদালত জুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠেছে।
লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষানবীশ সালমা আক্তার জানান, তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাষ্টার্স পাশ করার পর ২০১৬ সালে কুমিল্লা আইন কলেজ থেকে এলএলবি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেন। গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি আদালতের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সিরাজের জুনিয়র হিসেবে কাজ করছেন ও শিখছেন। গত ১৭ মে সকাল ১১টায় সালমা আক্তার শিক্ষানবীশ রেজিষ্ট্রেশন ফরম জমা সংক্রান্ত কাগজপত্রে তার সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. সিরাজের স্বাক্ষরের কাজ সেরে সমিতির দ্বিতীয়তলা থেকে বেরুনোর সময় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা তাকে দেখে ডেকে তার কক্ষে নিয়ে যায়। তিনি সালমা আক্তারকে আদালতে আসতে বারণ ও গালমন্দ করেন। সালমা নিজেকে একজন শিক্ষানবীশ এবং সে প্রবীণ আইনজীবী মো. সিরাজের জুনিয়র হিসেবে কাজ শিখছেন বলার পরও সাধারণ সম্পাদক সালমাকে অপমান অপদস্ত করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি সমিতির এনরোলমেন্ট সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু তাহেরকে ডেকে এনে ‘আমি সালমা আক্তার, আমি টাউট, আমি উকিল না’ লিখা সম্বলিত কাগজ সালমা আক্তারের শরীরের সামনে ধরে জোরপূর্বক মোবাইল ফোনে ছবি তুলে রাখেন। সালমাকে ওই কক্ষে প্রায় দেড়ঘন্টা আটকে রাখার পর দুপুর সাড়ে ১২টায় তাকে ঠেলে বের করে দেয়া হয়। সালমা আক্তার এঘটনা তার সিনিয়র মো. সিরাজকে জানান।
এদিকে ওইদিনই এনরোলমেন্ট সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু তাহের তার ফেসবুক আইডি থেকে সালমার ওই ছবি পোষ্ট করেন। পোষ্টে তিনি লিখেন-‘অদ্য কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতিতে একজন টাউট পাকরাও করি আমি ও সেক্রেটারি’। অল্প সময়ের মধ্যে এছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে। এঘটনা আদালতে জানাজানি হওয়ার পর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের এধরণের কর্মকান্ডের নিন্দা জানান সিনিয়র আইজীবীরা। শিক্ষানবীশ সালমা সিনিয়র অ্যাডভোকেট সিরাজ গতকাল ইনকিলাবকে জানান, মেয়েটি অত্যন্ত সহজসরল। একমাসের মতো সে তার জুনিয়র হিসেবে কাজ করছে। সমিতির সেক্রেটারি ও অন্যরা মেয়েটির সাথে যা করেছে তা নিন্দনীয়। মেয়েটির সামাজিক, পারিবারিক মানসম্মান ক্ষুন্ন করা হয়েছে। এটা রিতীমত সাইবার ক্রাইম। সে সমিতির সভাপতির কাছে বিচার চেয়েছে। জেলা পিপিকে জানিয়েছে। মেয়েটি ন্যায় বিচার না পেলে মামলা করবে। এবারে বার কাউন্সিল নির্বাচনে আবদুল বাসেত মজুমদারের পক্ষে সালমা আদালতে প্রচারণার কাজ করার কারণেই তাকে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। জেলা পিপি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন বলেন, শিক্ষানবীশ সালমার সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তা নিন্দনীয়। কোন বিষয় যাচাইবাছাই না করে কাউকে অপমান অপদস্ত করা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম খান বলেন, ঘটনাটি ফেসবুক পর্যন্ত গড়ানোটা উচিত হয়নি। এটি নিয়ে সমিতিতে আলোচনা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ