Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোপন লেনদেনের অবৈধ পথে সিআইএও জড়িত

প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর হয়ে কাজ করেছেন এমন অনেকেই পানামাভিত্তিক রহস্যে ঘেরা আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার সহায়তা নিয়েছেন। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি প্রকাশ করা ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইসিআইজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিআইএ বিভিন্ন দেশে তার গোপন কর্মকা- পরিচালনা করতে গিয়ে এ প্রতিষ্ঠানকেও ব্যবহার করেছে। পানামা পেপারসের নথিতে এ বিষয়ে যেসব নাম উঠে এসেছে, তার মধ্যে আছে ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত এক সময়ের আলোচিত সউদি অস্ত্র ব্যবসায়ী আদনান খাসোগি, প্রভাবশালী মার্কিন বিমান ব্যবসায়ী ফরহাদ আজিমা, সউদি আরবের প্রধান গোয়েন্দা কর্মকর্তা শেখ কামাল আদহামসহ অনেকেই।
আইসিআইজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর হয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের অন্যতম ফরহাদ আজিমা। ইরানি বংশোদ্ভূত এই মার্কিন নাগরিক বিমান ব্যবসায়ী। যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রধান দল ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টি উভয়কেই প্রচুর অর্থ দিয়েছেন এই ধনকুবের। তিনি ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠজন। ১৯৯৫ সালের অক্টোবর থেকে ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত ১০ বার তিনি গেছেন হোয়াইট হাউসে। ১৯৮০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের সময় নিকারাগুয়ার মার্কিন সমর্থনপুষ্ট কন্ট্রা বিদ্রোহীদের সহায়তা দিতে ইরানের কাছে গোপনে অস্ত্র বিক্রি করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আইসিআইজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮৫ সালে তেহরানগামী একটি বোয়িং ৭০৭ বিমানে ২৩ টন সামরিক সরঞ্জাম ছিল। বিমানটি ছিল ফরহাদ আজিমার। পানামা পেপার্সের প্রকাশিত নথিতে দেখা যায়, ওই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ২০০০ সালে মোসাক ফনসেকার সহায়তায় বিশ্বে কর রেয়াতের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে ‘এএলজি  লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। মোসাকের এক কর্মীর লেখা নিবন্ধকে উদ্ধৃত করে আইসিআইজের প্রতিবেদনে বলা হয়, লিবিয়ায় অস্ত্র সরবরাহ করেছিল সিআইএর এমন এক এজেন্টকেও সহায়তা দেন আজিমা। ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত সউদি ধনকুবের অস্ত্র ব্যবসায়ী আদনান খাসোগিও অর্থ পাচার করেছেন বলে নথি ঘেঁটে সন্ধান পেয়েছে আইসিআইজে। ইরানে অস্ত্র বিক্রি করতে খাসোগি যে ভূমিকা পালন করেছিলেন, তার উল্লেখ আছে ১৯৯২ সালে তৈরি মার্কিন সিনেটের প্রতিবেদনেও। সে সময় সিনেটর এবং এখনকার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ওই প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক ছিলেন। মোসাক ফনসেকার নথিতে দেখা যায়, ১৯৭৮ সাল থেকে খাসোগি অন্তত চারটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে অর্থ পাচার করেছিলেন। নথি অনুযায়ী মোসাক ফনসেকার সেবা নিয়েছেন সউদি আরবের প্রধান গোয়েন্দা কর্মকর্তা শেখ কামাল আদহাম। যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটির তথ্য অনুযায়ী, তিনি আবার ছিলেন ১৯৬০ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে সিআইএর প্রধান সমন্বয়কারী। এ তালিকায় আরও আছেন কলম্বিয়ার বিমানবাহিনীর প্রধান গোয়েন্দা কর্মকর্তা রিকার্ডো রুবিয়ানোগ্রুট, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামের গোয়েন্দাপ্রধান ইমানুয়েল দাহিরো। তাদের মধ্যে আদহাম মারা গেছেন।
দাহিরো আইসিআইজের কাছে কথা বলতে রাজি হননি। কেবল রুবিয়ানোগ্রুট স্বীকার করেছেন, ওয়েস্ট টেক পানামা নামে একটি ছোট কোম্পানি তার ছিল। সিআইএ ঘনিষ্ঠ আরেক অর্থ পাচারকারী হলেন ‘দ্য আইসল্যান্ডার’ খ্যাত ধনাঢ্য ব্যবসায়ী লুফটর জোহানেসন। ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গোপন লেনদেনের অবৈধ পথে সিআইএও জড়িত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ