Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নতুন মার্কিন অবরোধে ভারতের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা উভয় সঙ্কটে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৮, ৮:০৮ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিলের কারণে যৌথ উদ্যোগে ২০০ ক্যামোভ কেএ-২২৬টি হেলিকপ্টার অবমুক্তি, দুটি এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার চুক্তি, আরেকটি রুশ ফ্রিগেট কেনার চুক্তি ভন্ডুল হতে বসেছে। গত আগস্ট মাসে ‘কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাডভারসারিস থ্রু স্যাকশন অ্যাক্ট (সিএএটিএসএ)’ নামের ওই বিলটির আলোকে রুশ কোম্পানির কাছ থেকে বড় ধরনের অস্ত্রপাতি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু এর ফলে ভারতের কাছে তাদের জঙ্গিবিমান, সামুদ্রিক নজরদারি ড্রোন এবং নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার বিক্রির মার্কিন উচ্চাভিলাষও বানচাল হয়ে যেতে পারে। সিএএটিএসএ’র শিরোনাম ১ ও ২ ইরান ও উত্তর কোরিয়াকে লক্ষ্য করে প্রণীত। কিন্তু শিরোনাম ৩-এ ইউরোপ ও ইউরেশিয়ায় রাশিয়ার প্রভাব খর্ব করার কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় করলে তাদেরকে অবরোধের মুখে পড়তে হবে। এই আইনটি ইন্দো-রুশ অংশীদারিত্বে ব্রহ্মস অ্যারোস্পেসের ওপরও সরাসরি প্রভাব ফেলবে। সিএএটিএসএতে ৩৯টি রুশ কোম্পানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আলমাজ-অ্যাটে এয়ার অ্যান্ড স্পেস ডিফেন্স, রোসোবোরোনেক্সপোর্ট, রোসটেক, রুশিয়ান এয়ারক্র্যাফট কোরপোরেশন মিগ, রুশিয়ান হেলিকপ্টার, ইউনাইটেড ইঞ্জিন কোরপোরেশন। এই কোম্পানিগুলোর সবাই ভারতের সাথে ব্যবসা করে থাকে। ভারতের সামরিক সম্ভারের মধ্যে ৬৮ ভাগই রুশ সরঞ্জাম। এর অর্থ হলো রাশিয়ার কাছ থেকে খুচরা সরঞ্জাম ও পরিষেবা গ্রহণ না করলে ভারতের সামরিক বাহিনী মারাত্মক ঝুঁকিকে পড়ে যাবে। থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক ইউএস-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরাম ইন্ডিয়ার অ্যারোস্পেস ও ডিফেন্স পরিচালক বিক্রম মহাজন এআইএনকে বলেন, সিএএটিএসএ আরোপ করা হলে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই বিপদে পড়বে। উভয় সরকারের কাছেই আমরা বিষয়টি উত্থাপন করছি। এখন বিকল্প সমাধান প্রয়োজন। ইউএসআইএসপিএফের সভাপতি ও সিইও মুকেশ আগসি বলেন, এখন যদি রাশিয়ার সাথে ভারত ব্যবসা করতে থাকে তবে মার্কিন কোম্পানিগুলো ভারতে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। তখন কী হবে? ভারতের এক সিনিয়র প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ভারত এখন উভয় সঙ্কটে পড়ে গেছে। ভারত যদি রাশিয়ার সাথে ব্যবসা পরিচালনা অব্যাহত রাখে তবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যেসব সামরিক চুক্তি করেছে, সেগুলো বহাল রাখা সম্ভব হবে না। এতে করে নতুন জটিলতার সৃষ্টি হবে। ভারতের অপর এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, এই আইনটি দুই দেশের মধ্যকার আস্থার ঘাটতি তৈরি করবে। ভারত এখন আর যুক্তরাষ্ট্রকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারবে না। ওই কর্মকর্তা এআইএনকে বলেন, রাশিয়ার সাথেও টানাপোড়েন চলছে। সিএএটিএসএ জটিলতা থাকায় রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। আবার এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মতো আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তারা অন্য কোনো স্থান থেকে সংগ্রহ করতে পারবে না। ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রের এই আইনের কঠোরভাবে প্রয়োগ থেকে মুক্তি চায়। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিসও গত মাসে কংগ্রেসকে এই আইন প্রয়োগ থেকে ভারতকে ছাড় দিতে অনুরাধ করেছেন। তিনি বলেন, ভারতসহ অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। তাদের জন্য এই আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হলে হিতে বিপরীত হবে। এসএএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ