পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মোস্তফা মাজেদ ও আবুল হোসেন লিটন, ঝিনাইদহ থেকে : এবার স্বামীসহ আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য পারভিন তালুকদার মায়া নিজেই ফুড পয়জনিংয়ে আক্রান্ত হয়েছে। তিনি গুরুরতর অসুস্থ হয়ে নিজ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার স্বামী মোহাম্মদ আলী তালুকদার ফারুককে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। এ তথ্য মায়া তালুকদার নিজেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, কেও শত্রæতা করে খাবারে বিষ দিয়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগের দুই কর্মীসভার খাবার খেয়ে এক সাথে বিপুল সংখ্যক মানুষ অসুস্থ হওয়ার ঘটনা তদন্তে ঝিনাইদহ পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের নির্দেশে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমারকে প্রধান করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার জানিয়েছেন, তদন্ত টিম এখন মাঠে। বিষয়টি স্যাবোটাজ কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রান্নার কাজে নিয়োজিত বাবুর্চিদের জ্ঞিাসাবাদ করেছে মহেশপুর পুলিশ। এদিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলা জুড়ে ঘরে ঘরে এখন অসুস্থ রোগী। একসাথে বিপুল সংখ্যক মানুষের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকগণ। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনও এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন। গত মঙ্গলবার মহেশপুরে ও বুধবারে কোটচাঁদপুরে মায়া তালুকদারের আয়োজিত কর্মীসভায় বিতরণকৃত খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত শুধু কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন ২৪০ জন। এছাড়া মহেশপুর, চৌগাছা, জীবননগর ও কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন আরো শাতাধিক রোগী। অনবরত বমি ও পাতলা পায়খানায় কাহিল হচ্ছে মানুষ। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সন্ধ্যা নাগাদ ৫০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বালে চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন। পুলিশ সুত্রে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ঝিনাইদহ-৩ আসনের (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর উপজেলা) আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী পারভীন তালুকদার মায়া মহেশপুরের হাইস্কুল মাঠে এক কর্মীসভা ও র্যালীর আয়োজন করেন। এ কর্মীসভায় কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ, জীবননগর, চৌগাছা ও মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজারো নেতাকর্মী যোগদেন। সভা শেষে তাদের মধ্যে বিরিয়ানির প্যাকেট বিতরণ করা হয়। এ বিরিয়ানি খাওয়ার পর থেকেই শত শত মানুষ অসুস্থ হতে থাকেন। মঙ্গলবারে দেওয়া খাবার খেয়ে শাতাধিক ব্যক্তি অসুস্থ হওয়ার পর বুধবারেও কোটচাঁদপুর বাসষ্ট্যান্ডে মায়া তালুকদার শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে জনসভার আয়োজন করেন। সেখানেও বিতরণ করা হয় বিরিয়ানি। দুই দিনের খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া স্যাবোটাজ হিসেবে দেখছে পুলিশ। মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আফসার আলী জানান, এটা নিশ্চত ভাবেই বলা যায় ফুড পয়জনিং। তিনি জানান বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত মহেশপুরে ৫৬ জন ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের সবাই আওয়ামী লীগের কর্মী, সমর্থক ও তাদের স্ত্রী সন্তান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রামচন্দ্রপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, সভা শেষে এক প্যাকেট বিরিয়ানি পান তিনি। বাড়ি ফিরে স্ত্রী ও ছেলেসহ খান। রাত ১১ টার দিকে ৩ জনেরই বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। ফতেপুর গ্রামের একরামুল খান জানান, বিরিয়ানি খাওয়ার পর ভোররাতে পেটে ব্যাথা ও বমি পায়খানা শুরু হয়। তাকে সকালে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে মহেশপুর-কোটচাঁদপুর এলাকার সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কোটচাঁদপুর হাসপাতালে আক্রান্তদের দেখতে যান এবং চিকিৎসার খোজ খবর নেন। এ সময় তিনি রোগীদের মাঝে ওরস্যালাইন, কলা, গুড় ও চিড়া বিতরণ করেন। উপকরণ বিতরণ শেষে কোটচাঁদপুর হাসপাতাল গেটে মানববন্ধন ও কালোপতাকা মিছিল করে দলীয় নেতাকর্মীরা। এমপি নবী নেওয়াজ অভিযোগ করেন পারভিন তালুকদার মায়া আ’লীগের কোন নেতা নয়। অথচ দলের নাম ভাঙ্গিয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জ থেকে এখানে এসে লোকজন জড়ো করে তাদের জীবনকে হুমকীর মুখে ফেলে দিচ্ছেন। আগে তিনি রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট করতেন, আর এখন নি¤œমানের খাবার দিয়ে নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা সৃষ্টি করছেন। এমপি নবী নেওয়াজের অভিযোগ মায়া তালুকদার আওয়ামী লীগ থেকে বিতাড়িত টাউট, বাটপাড়, কালোবাজারীদের দলে ভিড়িয়ে মহেশপুরকে অশান্ত করছে। মহেশপুর থানার ওসি লস্কর জায়াদুল হক জানান, এটা স্যাবোটাজ কিনা তা তদন্ত করে দেখছে। ইতিমধ্যে বার্বুূচিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কেও খাবারের মধ্যে কিছু মিশিয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।