Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘প্রমাণ করুন, নইলে ক্ষমা চান’

প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেছেন,‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে প্রয়োজনে আমি জেল খাটতেও রাজি আছি।’ বেশ কিছুদিন ধরে বাফুফে সভাপতির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে একজোট হয়েছেন সাবেক ফুটবলার ও সংগঠকরা। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আভিযোগে তারা আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে সালাউদ্দিনকে প্রত্যাখান করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে পালন করেছেন সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের মতো কর্মসূচিও। ‘বাঁচাও ফুটবল’ এর ব্যানারে যখন সাবেক খেলোয়াড় ও সংগঠকরা একাট্টা, ঠিক তখনি মুখ খুললেন কাজী সালাউদ্দিন। অনেকদিন ধরেই নিজের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শুনে আসছেন তিনি। আর এই অভিযোগকে খÐাতেই এবার মিডিয়ার মুখোমুখী হন সালাউদ্দিন। সাবেক ফুটবলার ও সংগঠকদের সেই অভিযোগের পাল্টা জবাবও দিলেন তিনি। এমনকি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে তিনি জেলে যেতেও রাজি আছেন বলে জানালেন।
গতকাল বাফুফে ভবনে জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন বলেন, ‘একটা মহল থেকে বলা হচ্ছে, আমি নাকি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে একটা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট খুলেছি। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে এএফসি এবং ফিফা থেকে টাকা তুলে নাকি আমি নিজের কাজে ব্যবহার করি। যদি আপনারা কেউ বাংলাদেশ ও বিদেশে আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বের করতে পারেন, তাহলে যে শাস্তি দেবেন তা আমি মাথা পেতে নেব। যদি দশ বছরের জেল দেন, তাও মেনে নেব। আর যদি প্রমাণ দিতে না পারেন না তাহলে যারা অভিযোগ তুলছেন তাদের মিডিয়ার সামনে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। শুধু শুধু এ ধরণের কথা বলে বাংলাদেশের ফুটবলকে হেয় করবেন না। আমরা একটা সংস্থা, যা স্পন্সরদের ওপর বেঁচে থাকে। এ ধরণের কথা বললে স্পন্সররা চিন্তা করবে। নিজে স্বচ্ছ বলেই আজ মিডিয়ার সামনে এসেছি।’
সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে আর্থিক অনিয়মের। এর জবাবটাও দিলেন তিনি। তার কথা, ‘ফিফা দুই-এক বছর পর পরই হঠাৎ করে একেকটা দেশকে পছন্দ করে সেই দেশের অডিট করে। অডিট ক্লিয়ার না হলে পরবর্তী পেমেন্ট দেয় না। আজ থেকে মাস তিনেক আগে কেপিএফসি নামের একটা কোম্পানি আমাদের এখানে অডিট করতে এসেছিল। তাদের লোকজন ২৩ দিন আর অ্যাকাউন্ড ভিভিশনে অডিট করে সেটার অনুমোদন করে চিঠি দিয়েছে। এটা নিয়ে আমি পকেটে করে ঘুরছি। আপনারা আমাকে চোর বলছেন, আমার কাছে ফিফার চিঠি আছে এবং তারা আমাদেরকে পরবর্তী পেমেন্ট করে দিয়েছে।’
টাকা চুরি প্রসঙ্গে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘জেলাভিত্তিক ফুটবল হয় না, এটা সত্যি নয়। ইতোমধ্যে ৪০টা জেলায় খেলা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার আমার দায়িত্বকালেই জেলাগুলোকে আর্থিক সাহায্য দেয়া হয়েছে। আমি চুরিটা কোথায় করব?’ জাতীয় দল নিয়েও তিনি বলেন, ‘জাতীয় দল খুবই খারাপ করেছে। আই উইল টেক দ্য ব্লেইম ফর ইট। তবে আমি যদি তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হই, তাহলে জাতীয় দলের পলিসি চেঞ্জ করব। কারণ আগে যে পলিসিটা নিয়েছিলাম, সেটা কাজ করেনি।’
সালাউদ্দিন বলেন,‘আমার ক্যাপ্টেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু এখন অনেক কথাই বলছেন। কিন্তু তার কি মনে আছে বাফুফের গত নির্বাচনের সময় তিনি কি করেছিলেন। গত নির্বাচনে তিনি নমিনেশন সাবমিট করেছেন সভাপতি পদে। সাবমিট করার চারদিন পর ওনি আমাকে ফোনে বলেন, সালাউদ্দিন আমার নমিনেশন পেপারে কিছু ভুল হয়েছে তুমি নির্বাচন কমিশনকে বলে দাও আমার পেপার বাতিল করে দিতে। আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবো। কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে, যদি তুমি আমাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যেতে কিছু টাকা দাও তাহলেই আমি সেটা করবো। আমার কিছু টাকা দরকার। আমি বললাম আপনি নির্বাচন থেকে সরে না গেলেও আমি আপনাকে টাকা দেব পিন্টু ভাই। উনাকে আমি টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি। এর কিছুদিন পর তার ছোট ভাই মঈন যে কিনা আমার বন্ধু সে এসে চোখের চিকিৎসা করানোর কথা বলে টাকা নিয়ে গেছে আমার কাছ থেকে। আরেকজন আছেন ওনিও নিয়মিত আমাকে গালাগাল করছেন। ওনিও আমার সিনিয়র খেলোয়াড় গোলাম সারোয়ার টিপু। আমি যখন বাফুফেতে প্রথম আসি তখন ওনাকে হেড কোচ করেছিলাম। তার কিছুদিন পর ওনি আমার ফ্যাক্টরিতে আসেন। বলেন, সালাউদ্দিন আমার তো এই টাকায় চলে না কিছু বাড়িয়ে দাও। আমি একদিনেই ওনার বেতন দ্বিগুণ করে দিয়েছি। তারপর ওনার কাছ থেকে যখন সাকসেস আসছে না, তখন আমি ওনাকে বলেছি, টিপু ভাই আমি যত কিছুই করি আপনাকে আমি কোচ হিসেবে রাখতে পারব না। ওনাকে বরখাস্ত করেছি। বলেছি আপনার বয়স হয়েছে আপনি ছেড়ে দিন।
আর শামসুল আলম মনজুর কথা কি বলবো? এক সময় শেখ কামালের সঙ্গে বেয়াদবি করার কারণে তাকে আবাহনী ক্লাব থেকে বের করে দেয়া হয়। উনি তখন মোহামেডান ক্লাবে যান। এবং নানা ঘটনার জন্ম দেন। মনজু এখন এসেছেন দেশের ফুটবলের উন্নয়ন করতে। সংবাদ সম্মেলনে ‘বাঁচাও ফুটবলে’র নানা কর্মকান্ডের সমালোচনা করেন সালাউদ্দিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘প্রমাণ করুন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ