রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
বিরল (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : দিনাজপুরের বিরলে প্রায় হাজার বছর ধরে একই আকৃতিতে ফসলের মাঠের আইলে দাঁড়িয়ে আছে একটি নাম না জানা গাছ। গাছটি এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিন উৎসুক মানুষ ভিড় করছে। গাছটি কিসের এবং কতদিন বয়স এর সঠিক ইতিহাস স্থানীয় কেউ সঠিকভাবে বলতে পারেনি। বিরল উপজেলার ভাÐারা ইউনিয়নের দক্ষিণ রঘুনাথপুর মৌজার বিরাট ফসলের মাঠের একটি আইলে গাছটি দীর্ঘ যুগ ধরে শেকড় গেঁড়ে বসে আছে। বুড়ি হাট বাজারে গিয়ে মইনুল হক নামের এক ভ্যানচালককে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি গাছের কাছে নিয়ে যায়। বুড়ির হাট বাজারের পাশে নাপিত পাড়া তার পর ভাই-বহিন (ভাইবোন) নামে একটি বড় পুকুর সেখান থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে এ গাছটির অবস্থান। যেতে যেতে কথা হয় ভ্যানচালক মইনুলের সাথে। সে জানায়, সঠিক ইতিহাস না জানলেও এ গাছটিকে তারা স্থানীয়ভাবে আঁখিরের গাছ ও বসন বুড়ির (বসন্তবুড়ি) গাছ বলে জানে। তবে আঁখিরের গাছ বা আঁখির তোলা বললেও ওই এলাকার সব মানুষ চেনে গাছটিকে। কৃষক রহমত কিবরিয়া ও আব্দুল মালেকের জমির সীমানা আইলে থাকা গাছের কাছে গিয়ে দেখা মেলে অনেক উৎসুক মানুষের ভিড়। তারা দল বেঁধে গাছটি দেখার জন্য পাকুড়া-নাগরবাড়ী, মানিকপাড়া, বান্দইল ও ষোলঘর থেকে এসেছেন। তারা কেউ জানেন না গাছটির ইতিহাস বা কেউ চেনেন না গাছটির কিসের। ফলে তাদের দারুণ আকাক্সক্ষা ও কৌতুহল গাছটির ইতিহাস জানার। গাছটির কাÐ সব মিলে তিন ফুটের মতো। একেবারেই কাছ থেকে ডালপালা গঁজিয়ে গাছটিকে ছোট ছোট ঘন পাতায় আচ্ছাদন করে রেখেছে। দূর থেকে মনে হয় যেন সবুজের ছাউনি। অনেকটা বনসাইয়ের মতো গাছটি। বেগুন আকৃতির ছোট ছোট ফলও ধরেছে গাছটিতে। মাঠে কাজ করতে থাকা শামসুদ্দিন, টিটু শীল ও রিয়াজুল ইসলাম নামে তিনজন কৃষক জানান, ফলটি পাকলে ভেতর থেকে এক প্রকার কালো ঘাসের বিচির মতো দানা দানা বের হয়। সেটা খুব শক্ত। অনেকটা পাথরের দানার মতো। যেমনটা ভাত খাওয়ার সময় অনেক সময় দাঁতে বাধে। সেখান থেকে ফিরে আবার বুড়ির হাট বাজারে এসে দেখা হয় বালান্দোর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি প্রায় ১০৭ বছর বয়সী মহির উদ্দীনের সাথে। গাছের ইতিহাস জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, তিনি তার দাদার মুখে শুনেছিলেন, তিনি তার জনমে গাছটি ওই রকমই দেখেছেন। তিনি নিজেও গাছটি ছোটকাল থেকে দেখে আসছেন একই রকম। পাশের নাপিত পাড়ার ১০৩ বছর বয়সী প্রবীণ ব্যক্তি খুকিন চন্দ্র শীল জানান, এ পাড়ার প্রবীণ ব্যক্তি নিলু প্রধান ১৩০ বছর বয়সে পরলোক গমন করেছেন, তিনি জিবদ্দশায় গল্প করতেন আমরা শুনতাম। তার দাদাও নাকি গাছটি এমনই দেখেছিলেন। তারা ছোটবেলায় দেখেছিলেন, গাছের ডালে বা নিচে মাঝেমধ্যে ভিন্ন জাতের দুটি সাপ বের হতো। একটা সাপের নাকে স্বর্ণের নলক পরা থাকতো। গাছটি নিয়ে কেউ ঠাট্টা বিদ্রæপ করত না। যে করত তার ক্ষতি হতো। কেউ কেউ বলেন, এখনো সেখানে মাঝে মধ্যে সাপ বের হয়। তারা তাদের বাপ-দাদার কাছ থেকে শুনে গল্পের সূত্র ধরে জানান, অনেক যুগ আগে নাকি কোনো এক মুনি ঋষি কামরুকামা²া থেকে তন্ত্রবিদ্যা শিখে গাছটিতে ভোর করে উড়ে উড়ে এখানে এসে নেমেছিলেন। সেই তখন থেকেই গাছটি এখানে একই আকৃতিতে শোভা পাচ্ছে। প্রবীণ ব্যক্তিরা গাছটির প্রকৃত অর্থে কি নাম সেটা তারা না জানলেও তারা জানান, গাছের বয়স এক হাজার বছরের উপরে। গাছটি খুব শক্ত বলে তার জানান। তারা জানান, গাছটির ছোট বা চিকন একটি ডাল শক্ত হবার কারেণ ভাঙার কারো শক্তি সাধ্য নেই। তাদের এই কথা গুলিকে স্থানীয় অনেকে সায় দিয়ে জানান, একই কথা। গাছটিকে ঘিরে দারুণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হাজার বছরের পুরনো নাম না জানা গাছটিকে এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিন উৎসক মানুষ দল বেধে আসছেন ওই এলাকায়। তবে স্থানীয় সচেতন মহল হাজার বছরের ঐতিহ্য এ গাছটি রক্ষা এবং সংরক্ষণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।