Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্বনেতারা

প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যকে কাঁপিয়ে দেওয়া আরব বসন্তের পর এবার সম্ভবত নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন বিশ্বনেতারা। আরব বসন্তের তিউনিসিয়া যেন হয়ে উঠেছে পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির আইসল্যান্ড। গত ৩ এপ্রিল ২০১৬ রোববার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয় পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি। এর দুই দিনের মাথায় ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমন্ডুর ডেভিড গুনলাগসন। প্রতিবাদ আর গণ-অসন্তোষের আঁচ লেগেছে অন্যান্য দেশেও। পানামাভিত্তিক আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা গেছে বিভিন্ন দেশের সাবেক বা বর্তমান ৭২ জন রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান নিজ দেশ থেকে অর্থ লোপাটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এদের মধ্যে বর্তমানে দায়িত্ব পালনকারী প্রায় ডজনখানেক বিশ্বনেতা রয়েছেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি ফাঁসের পর বিশ্বের কয়েকটি শক্তিধর দেশে আলোচনার ঝড় বইছে। ফাঁস হওয়া এ নথিতে ২ লাখের বেশি নামের মধ্যে মাত্র ২১১ মার্কিন নাগরিকের নাম উঠে এসেছে। এত কমসংখ্যক মার্কিনির নামের তালিকা থাকাটা চমকে যাওয়ার মতোই। কারণ যেখানে বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন ও সুইজারল্যান্ডের নাগরিকদের সংখ্যার তুলনায় তা নগণ্য। এ নিয়ে আঁতকে ওঠার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বিশ্লেষকরা। তাদের দাবি, পানামার চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই রয়েছে এমন অনশোর কোম্পানি, যেখানে অবৈধ অর্থ লুকানো পানির মতো সহজ। এ ব্যাপারে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রোগ্রাম বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্রুতি শাহ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রেই এমন অর্থের লগ্নি গোপন করে তার মালিককে লুকিয়ে রাখার মতো অনেক কোম্পানি রয়েছে। সেজন্য পানামা বা অন্য কোনো ট্যাক্স হ্যাভেনের দারস্থ হতে হবে না। তিনি আরও বলেন, দেশটিতে শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, যেখানে এমন অর্থ গোপন করে রাখা যায়। বরং যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেকটি অঙ্গ রাজ্যে এমন প্রতিষ্ঠান অলিগলিতে বিরাজমান। ২০১৫ সালের ট্রাক্স লুকোনোর তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাক্স হ্যাভেনের এ তালিকায় প্রথম সুইজারল্যান্ড এবং দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হংকং। বর্তমানে আলোচিত কর স্বর্গের দেশ পানামা এ তালিকায় ১৩তম অবস্থানে রয়েছে।
একটি জার্মান সংবাদপত্রের মাধ্যমে পানামা পেপার্সের সন্ধান পায় ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে)। মোসাক ফনসেকার ফাঁস হওয়া নথিতে আর্থিক কেলেঙ্কারি বা কর ফাঁকির সঙ্গে সম্পৃক্ত বিশ্বনেতাদের মধ্যে রয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো, সউদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ-এর মতো নেতারা। আরও আছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট এবং আবুধাবীর আমির শেখ খলিফা বিন জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান, আইসল্যান্ডের সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ড গুনলাগসন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। অভিযুক্তদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই স্বনামে অথবা পরিবার কিংবা ঘনিদের মাধ্যমে কর ফাঁকি দেয়ার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
এই নথি ফাঁসের পরপরই আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে দেশটির পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ করেন প্রায় ১০ হাজার বিক্ষোভকারী। পদত্যাগের মাধ্যমে যার দ- দেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী। এ ঘটনায় একটি স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি করার ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কর ফাঁকি দেওয়াকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন। ফ্রান্স ঘোষণা করেছে, তারা এ ঘটনার তদন্ত করবে। ফরাসি অর্থমন্ত্রী মিশেল সাপাঁ পার্লামেন্টে ঘোষণা দেন, কর ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করতে যেসব দেশ সহযোগিতা করে না তাদের নাম তালিকাভুক্ত করা হবে। বিবিসি, আল জাজিরা, গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্বনেতারা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ