পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে : ঢাকার সাভারে একটি তৈরী পোশাক কারখানার ভিতরে অসুস্থ হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে কারখানার শ্রমিকরা। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা এসময় কারখানার সামনে পার্কি করে রাখা ১৫-১৬টি যানবাহন ভাঙচুর করে। এছাড়া কারখানার ভিতরে আসবাবপত্র ও জানালা দরজার কাচ ভাঙচুর করেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে সাভার পৌর এলাকার উলাইল মহল্লায় অবস্থিত প্রাইড গ্রæপের ‘এইচআর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড’ কারখানায় এ শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহত রাশেদুল ইসলাম (২৭) কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানার জায়গীর গ্রামের মঞ্জুর মুন্সির ছেলে। রাশেদুল উলাইল এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থেকে এইচআর টেক্সটাইল কারখানায় সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতো। তার দেড় বছরের একটি সন্তান রয়েছে বলে জানায় সহকর্মীরা। নিহতের সহকর্মী মাজেদা বেগম, আমেনা বেগম জানায়, রাশেদুল দুপুরের খাবার খেয়ে মেশিনে এসে কাজ করতে বসলে কিছুক্ষন পরই তার মাথা ব্যাথা ও বমি হতে থাকে। এসময় তাকে কারখানার নিজস্ব মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ব্যাথার ঔষধ দেন। কিন্তু ঔষধ খাওয়ার পরও তার শরীর ঠিক না হওয়ায় তিনি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য কারখানার ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে ছুটি চান। কিন্তু সে ছুটি দেয়নি।
পর্যায়ক্রমে ফ্লোর (৫ম তলা) ইনচার্জ জুলহাস এবং সহকারী ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) রুবেলসহ সবার কাছেই ছুটি চেয়ে ব্যার্থ হয়। এর কিছুক্ষণ পর সে অচেতন হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাশেদুলকে মৃত ঘোষনা করেন। কারখানার শ্রমিক ওসমান গনি, শহিদুলসহ অনেকেই জানান, রাশেদুল বার বার ছুটি চাওয়ার পরও পিএম তাকে ছুটি দেয়নি। একপর্যায়ে ছুটি না পেয়ে কারখানায় ভিতরেই তার মৃত্যু হয়। মারা যাওয়ার পর তাকে অন্য হাসপাতালে নেয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানার ৫ তলায় কাজ করতো রাশেদুল। সে দুপুরে অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কর্তৃপক্ষ কারখানার মূল ফটক বন্ধ করে ভিতরে ফ্লোরে গান ছেড়ে দেন। পরে সহকর্মীর মৃত্যুর বিষয়টি সকল শ্রমিকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে দুপুর ৩টা থেকে কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করে তারা। এ সময় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা দোষীদের বিচারের দাবিতে এক ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ও শিল্প পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিচারের আশ^াস দিলে বিকেল ৪টার দিকে শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক চলার পর বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় বিকেল ৫টায় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা আবারও মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
তাদের অভিযোগ, কেন কারখানা কর্তৃপক্ষ অসুস্থ হওয়ার পরও রাশেদুলকে ছুটি দিল না। এ ঘটনায় দায়ীদেরকে বরখাস্তসহ বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। এছাড়া নিহতের দেড় বছরের একটি বাচ্চা থাকায় তার ভবিষ্যতের জন্য নগদ ১০ লক্ষ টাকা এবং রাশেদুলের যাবতীয় পাওনা পরিশোধেরও দাবি জানায়। শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে কারখানা মালিকের ছেলে নাহিদ ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিকভাবে দুই লক্ষ টাকা প্রদানের কথা জানান। এঘটনায় শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে তার উপর চড়াও হয় এবং কারখানার সামনে রাখা ১৫-১৬টি যানবাহনের কাচ ভাঙচুর করে। শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মোঃ হারুন উর রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মালিকপক্ষ দুই লাখ টাকা দিতে রাজি হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। এছাড়া যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে। এদিকে প্রায় তিন ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখার কারণে শত শত যানবাহন সড়কে আটকা পড়েছে। এসময় অনেকে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে কেউ কথা বলতে রাজী হয়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ নিহতের স্বজনদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৮ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।