মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ছলচাতুরীর মাধ্যমে বিশ্বশক্তির সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিতে উপনীত হয়েছে ইরান। ইসরাইলের এমন দাবিকে স্বাগত জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। তবে ইউরোপের দেশগুলো বলছে, ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাক্সক্ষার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। বরং, দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ করতে চায় বলেই ২০১৫ সালে পারমাণবিক চুক্তি করা হয়েছিল। অন্যথায় চুক্তিরই দরকার ছিল না। মার্কিন পত্রিকা নিউ ইয়র্ক টাইমসে বলা হয়, গত সোমবার নাটকীয়ভাবে এক পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন, তার দেশের গুপ্তচররা ইরানের একটি গোপন পারমাণবিক নথিভা-ার খুঁজে পেয়েছেন। এই ভা-ারে এমন সব নথি ছিল যাতে স্পষ্টভাবে দেশটির পারমাণবিক প্রকল্পের অস্তিত্ব থাকার প্রমাণ মিলে। অথচ, ইরান দাবি করছিল তাদের পারমাণবিক প্রকল্প ছিল শান্তিপূর্ণ। একজন জ্যেষ্ঠ ইসরাইলি কর্মকর্তা জানান, ইসরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের প্রধান ইয়োসি কোহেন আগেই ট্রাম্পকে ওই নথিভা-ারের কথা জানিয়েছেন। জানুয়ারিতে এক অভিযানে ইরান থেকে গোপনে ওই নথিভা-ার ইসরাইলে নিয়ে যাওয়া হয়। রোববার তেল আবিব সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে বিষয়টি আরও বিস্তারিত জানান ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, ‘ইরান পারমাণবিক চুক্তিটি হয়েছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে। ইরান মিথ্যা বলেছে। তারা অসৎ রাষ্ট্র। সুতরাং, অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে।’ বৃটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি যদি ইরান চুক্তিতে বড় ধরনের পরিবর্তনে সম্মত না হয়, তাহলে ১২ই মের মধ্যে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, নেতানিয়াহুর ওই প্রেজেন্টেশন তার এই দাবিই জোরালো করে যে ইরান চুক্তি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। হোয়াইট হাউজ অবশ্য বলেনি যে, এসব তথ্যভা-ার থেকে ইরানের চুক্তিভঙ্গের প্রমাণ মিলে। তবে স্যান্ডার্স বলেন, এই নতুন তথ্যপ্রাপ্তি থেকে বোঝা যায়, ইরান কতটা ফাঁকি দিতে পেরেছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে। খবরে বলা হয়, ইসরাইল লবিং প্রচারণা এখনও ক্ষান্ত দেয়নি। কর্মকর্তারা বলছেন, ইরানের এই নথি ভা-ার থেকে প্রাপ্ত তথ্য আন্তর্জাতিক আণবিক জ্বালানি সংস্থার সঙ্গে শেয়ার করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে এমন কিছু পারমাণবিক স্থাপনার তথ্য যার কথা আগে কেউ জানতো না। খবরে বলা হয়, দৃশ্যত ইসরাইলের উদ্দেশ্য হলো, জাতিসংঘের এই সংস্থাকে ইরানের ওই অজ্ঞাত স্থাপনা পরিদর্শনের দাবি জানাতে বাধ্য করা। তবে এসব স্থাপনার কিছু কিছু বহু বছর আগেই বন্ধ বা স্থগিত রয়েছে। কিন্তু কিছু স্থাপনা সামরিক হওয়ায়, ইরান এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করবে এমন সম্ভাবনাই বেশি। ফলে ইরান চুক্তি নিয়ে নতুন সংকট সৃষ্টি হবে। তবে নেতানিয়াহুর ওই প্রেজেন্টেশন থেকে ইউরোপীয় নেতারা তাদের অবস্থান থেকে টলছেন না। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে- তিনজনই ইরান চুক্তি বাতিল না করতে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্র প্রযুক্তি নিয়ে ইরানের অতীত গবেষণা নিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী যেই প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন, তাতে বরং ইরান পারমাণবিক চুক্তি বলবৎ রাখার গুরুত্বই ফুটে উঠে। ইরান পারমাণবিক চুক্তি কোনো বিশ্বাসের ভিত্তিতে স্বাক্ষরিত হয়নি। হয়েছে কঠোর যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে।’ ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসরাইলের উপস্থাপিত নতুন তথ্য থেকে বরং ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী নিশ্চয়তার প্রয়োজনীয়তাই নিশ্চিত করে।’ অতীতে বুশ ও ওবামা প্রশাসন ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প শান্তিপূর্ণ হওয়ার দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক আণবিক জ্বালানি সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলো সেই ২০০৮ সালে ইরানে পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্পের অস্তিত্বের প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘২০০৯ সালের পর ইরান পারমাণবিক বিস্ফোরক ডিভাইস উন্নয়নে কাজ করেছে, এ সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।’ সাবেক ও বর্তমান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, নেতানিয়াহু তার প্রেজেন্টেশনে যা বলেছেন, তাতে এমন কোনো দাবি নেই যে, ইরান এখনও পারমাণবিক অস্ত্র নির্মানের চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু এত কিছুর পরও ইরান যদি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদেরকে সামরিক স্থাপনায় প্রবেশের অনুমতি না দেয়, তাহলে এই চুক্তি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হবে, এটাই হতে পারে ইসরাইলের উদ্দেশ্য। এছাড়া ট্রাম্প ইরান চুক্তি বাতিল করতে যাচ্ছেন, এই সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু ট্রাম্পের জন্য চুক্তি বাতিলের অজুহাত তৈরি করতেই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ওই প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।