Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কিভাবে অজান্তেই এতদিন ধরে পোকা খেয়ে আসছেন অনেকে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৮, ৯:২৭ পিএম

আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে, পোকামাকড় কিভাবে খাওয়া সম্ভব? কিন্তু দুঃসংবাদ হলো, আপনি হয়তো অনেক দিন ধরেই অজান্তে সেগুলো খেয়ে আসছেন।
কারণ বিশ্বে খাবারে লাল রঙ করার জন্য কারমাইন নামের যে পদার্থ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়, তা তৈরি হয় পোকামাকড় চূর্ণ করেই। দক্ষিণ আমেরিকায় ক্যাকটাসে কোকোহিনেল নামের এক ধরণের পোকা থাকে। আর সেই পোকা চূর্ণ করেই তৈরি করা হয় কারমাইন।
এখন পেরুতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই পোকার চাষাবাদ করা হয়। খাবারে রঙ করার জন্য প্রতিবছর ক্ষুদ্রাকৃতির এরকম কোটি কোটির পোকার চাষ করা হচ্ছে। আর সেই পোকার চূর্ণ কারমাইন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ্বের খাদ্য শিল্পে। দধি থেকে শুরু করে আইসক্রিম. ফলের পাই থেকে শুরু করে কোমল পানীয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে কারমাইন। তবে কারমাইনের এই ব্যাপক ব্যবহারের কারণ হচ্ছে, এটি নিরাপদ আর দীর্ঘস্থায়ী, যা তাপ বা আলোর কারণে নষ্ট হয়না।
সমর্থকরা দাবি করেন, পাঁচশো বছরেরও আগে থেকে দক্ষিণ আমেরিকান মায়া নৃগোষ্ঠী, এরপরে অ্যাজটেক মানুষরা এই পোকার চূর্ণ ব্যবহার করতো। কৃত্রিমভাবে তৈরি খাবারের রঙের তুলনায় এটি মানুষের স্বাস্থ্যের চেয়ে অনেক ভালো বলে তারা মনে করেন। তবে তারাও স্বীকার করেন, খাদ্য পণ্যের গায়ে এই পণ্যটির ব্যবহারের কথা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকা উচিত। পাশাপাশি এখন প্রাকৃতিক অন্য অনেক কিছু থেকে লাল রঙ তৈরি হচ্ছে, যেখানে কোন পোকামাকড় নেই।
হয়তো আপনি লাল রঙের কোন খাবারের উপাদান তালিকায় চোখ বোলালে, সেখানে কারমাইন নামটি দেখতে পাবেন না। বরং হয়তো লেখা রয়েছে, প্রাকৃতিক লাল রঙ অথবা ক্রিমসন লেক অথবা ই১২০ নম্বরটি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কারমাইনকে যে নম্বরটি দিয়েছে।
কারমাইন নিয়ে গবেষণা করেছেন অ্যামি বাটলার গ্রিনফিল্ড। তিনি বলছেন, খুব কম মানুষেরই এই খাদ্য উপাদানে সমস্যা হয়। সবমিলিয়ে খাবারের উপাদান হিসাবে এর অতীত খুবই ভালো। বিশ্বে কারমাইনের ৯৫ শতাংশই উৎপাদন করে পেরু। স্ত্রীলিঙ্গের পোকাগুলোই চাষ করা হয়, কারণ এগুলোর ডানা থাকে না, ফলে উড়তেও পারে না।
বছরে বছরে বিশ্বে কারমাইনের চাহিদাও বাড়ছে, ফলে এর দামও চড়া হচ্ছে। গত চার বছরে কারমাইনের দাম বেড়েছে ৭৩ শতাংশ। তবে কোন কোন কোম্পানি কারমাইন থেকে নিজেদের সরিয়েও নিচ্ছে। এরকম একটি বড় কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের কফি চেইন স্টারবাকস। যদিও টমেটো, বেরি আর বেটরুট থেকেও রঙ তৈরি করা হয়, কিন্তু সেগুলোর কোনটাই কারমাইনের মতো স্থায়ী নয়। মিজ বাটলার বলছেন, পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে যে, কারমাইন এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যার ওপর পেরুর অসংখ্য কৃষকের আয়ের উৎস। পেরুর মানুষজন বেশিরভাগই গরীব, বেঁচে থাকার জন্য কারমাইনের ওপর তারা নির্ভর করে আছে।’ সূত্র : বিবিসি।



 

Show all comments
  • ৩০ এপ্রিল, ২০১৮, ১১:১১ পিএম says : 0
    এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পোকা খেয়ে আসছেন অনেকে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ