Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুযোগ হাতছাড়ার মাশুল দিলো বায়ার্ন

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

জমজমাট এক ম্যাচের অপেক্ষায় ছিল ফুটবল বিশ্ব। কিন্তু হলো এর উল্টোটা। পরশু রাতে ম্যাড়মেড়ে এক ম্যাচের সাক্ষি হয়েছে মিউনিখের অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনা। জার্সি আর খেলোয়াড় দেখেই বুঝতে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে প্রথম লেগের ম্যাচে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছে দুই ইউরোপিয়ান পরাশক্তি বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদ। আরো চমকের বিষয় হলো, পুরো ম্যাচে অচেনা ফুটবল খেলেও ২-১ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে রিয়াল।
রিয়াল কতটা অচেনা ছিল তা বোঝাতে তিনটি পরিসংখ্যান যথেষ্ঠ। ম্যাচে মাত্র ৩৯.৭ শতাংশ বলের দখল ছিল রিয়ালের অনুকূলে। ৩৯ ম্যাচ পর এদিন গোল বরাবর একটা শটও নিতে পারেননি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। পুরো ম্যাচেই বায়ার্নের গোলমুখে রিয়াল শট নিতে পারে মাত্র ৪টি। এরপরও তারা জয় নিয়ে ফিরেছে দুটি সুযোগ কাজে লাগাতে পারায়। গোল দুটি করেন মার্সেলো ও মার্কো অ্যাসেনসিও।
বায়ার্নও যে খুব গোছালো ফুটবল খেলেছে তা নয়। তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জয়ের জন্য যথেষ্ঠ সুযোগ তারা তৈরি করেছিল। কিন্তু সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেনি। অবিশ্বাস্য সব সযোগ হাতছাড়া করেছেন মুলার-লেভান্দোভস্কিরা। ম্যাচের বয়স মিনিট ছোঁয়ার আগেই এগিয়ে যেতে পারত তারা। রক্ষণের ভুলে রিয়ালের ডি বক্সে বল পেয়ে যান হামেস রড্রিগুয়েজ। বরার্ট লেভান্দোভস্কির পা হয়ে তা পৌঁছে অরক্ষিত অবস্থায় থাকা টমাস মুলারের পায়ে। কিন্তু শটটা নিতে পারেননি জার্মান স্ট্রাইকার। রিয়ালের রক্ষণে এমন ধারা অব্যহত থাকে শুরুর ১৫ মিনিট। এরপর গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে রিয়াল। কিন্তু ২৮তম মিনিটে হঠাৎ ধারার বিপরীতে দুর্দান্ত পাল্টা আক্রমণে গোল পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। জশুয়া কিমিখ, লেভান্দোভস্কি ও রড্রিগুয়েজের আক্রমণের সামনে বড় অসহায় হয়ে পড়েন মাদ্রিদ গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। ভেবেছিলেন লেভাকে বল দেবেন কিমিখ, কিন্তু বায়ার্ন ফুলব্যাক শট নেন নিজেই। নাভাসের তখন কিছুই করার ছিল না। এই গোলে হয়ত কিছুটা দায় ছিল মার্সেলোর। তার প্রান্ত দিয়েই পাল্টা আক্রমণে গোলটা হয়েছে কিনা। ব্রাজিরিয়ান তারকা এর দায় মেটালেন বিরতির বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে দুর্দান্ত ভলিতে দলকে সমতায় ফিরিয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সবাইকে চমকে ইস্কোর পরিবর্তে অ্যাসেনসিওকে নামান জিনেদিন জিদান। ফরাসি কিংবন্তির পরিকল্পনা কাজ দেয় দ্রুতই। দ্বিতীয়ার্ধের ১২তম মিনিটে পাল্টা আক্রমনে দলকে এগিয়ে নেন বদলি খেলোয়াড় অ্যাসেনসিও। এরপরও ম্যাচে ফেরার যথেষ্ঠ সুযোগ তৈরী করে ইয়ুপ হেইঙ্কেসের দল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। ম্যাচের শেষ সময়েও সহজ সুযোগ নষ্ট করেন লেভান্দোভস্কি। মাঝের সময়ে অনেকগুলো সুযোগ তৈরী করেন ফ্রাঙ্ক রিবেরি। তাছাড়া প্রথমার্ধে চোটের কারণে আরিয়েন রোবেন ও বোয়েটাংকে হারিয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে জার্মান জায়ান্টরা।
হেইঙ্কেসের ট্রেবলের স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল। অপরদিকে উজ্জ্বল হল রিয়ালের হ্যাটট্রিক শিরোপার সম্ভাবনা। স্বপ্নকে বাঁচাতে আগামী ১ মে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে কমপক্ষে দুই গোলে জিততে হবে হেইঙ্কেসকে। ম্যাচ শেষে ট্রেবলজয়ী এই কোচ বলেন, ‘স্পষ্ট ভুলে আমরা রিয়াল মাদ্রিদকে দুটি গোল উপহার দিয়েছি। আমরা অসংখ্য সুযোগ পেয়েছিলাম যা থেকে সুবিধা নিতে পারিনি। সুতরাং এটা বিষ্ময়ের নয় যে আমরা হেরেছি।’
মাদ্রিদের ম্যাচে রোবেন, বোয়েটাং. জাভি মার্টিনেজকে পাবেন না হেইঙ্কেস। মানসিকভাবেও যেন বেশ পিছিয়ে পড়েছেন ৭২ বছর বয়সী কোচ। কথার সুরে তেমনটাই বোঝা গেল, ‘মাদ্রিদে আমাদের হারানোর কিছু নেই। তাই আমরা সেখানে নির্ভার হয়েই খেলতে পারব।’

বায়ার্ন মিউনিখ ১ : ২ রিয়াল মাদ্রিদ
- এ নিয়ে ২৫ বার ইউরোপিয়ান আসরে মুখোমুখি হলো রিয়াল ও বায়ার্ন। আসরের ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ।
-টানা ৬ ম্যাচে বায়ার্নকে হারালো রিয়াল। প্রতিযোগিতায় এটাও যৌথ রেকর্ড।
-প্রথম দল হিসেবে প্রতিযোগিতায় ১৫০টি জয় পেল রিয়াল।
-চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত জয় রোনালদোর (৯৬)। এই ম্যাচ দিয়ে পিছনে ফেলেছেন সাবেক সতীর্থ ইকার ক্যাসিয়াসকে (৯৫)।
-টানা ১১ ম্যাচ পর প্রতিযোগিতায় গোলবঞ্চিত হলেন রোনালদো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাশুল
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ